বিরোধীরা ফের আদালতে, ঘোষণা হল না ভোটের দিন

মঙ্গলবার কমিশনারের সঙ্গে দেখা করার কথা রাজ্য সরকারের প্রতিনিধির। তবে মঙ্গলবার সকালে হাইকোর্টে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের এজলাসে বিরোধীদের দায়ের করা মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০১৮ ১৬:২৮
Share:

গোলমালেই কেটে গেল সারা দিন। সোমবারও ঘোষণা হল না পঞ্চায়েত ভোটগ্রহণের নির্ঘণ্ট।

Advertisement

নির্ঘণ্ট ঘোষণা নিয়ে এ দিন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্রকুমার সিংহের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল রাজ্য সরকারের প্রতিনিধির। কিন্তু তা হয়নি। কমিশন সূত্রের খবর, মনোনয়নপত্র দাখিল পর্ব ঘিরে সকাল থেকেই অশান্তির খবর আসতে থাকে। সেই অশান্তির কথা জানিয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে বিরোধী দলগুলি। সে কথা জানার পরে বৈঠক থেকে সরে আসার সিদ্ধান্ত নেয় কমিশন। নবান্নের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু কমিশনের তরফে থেকে বৈঠকের বিষয়ে কিছু জানানো হয়নি।’’

আজ, মঙ্গলবার কমিশনারের সঙ্গে দেখা করার কথা রাজ্য সরকারের প্রতিনিধির। তবে মঙ্গলবার সকালে হাইকোর্টে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের এজলাসে বিরোধীদের দায়ের করা মামলার শুনানির সম্ভাবনা রয়েছে। ফলে সেখানে কী হবে তার দিকেও তাকিয়ে রয়েছে কমিশন। কারণ, আদালতের প্রক্রিয়ার উপর নির্ভর করছে মঙ্গলবারের বৈঠকের প্রাঙ্গসিকতা।

Advertisement

কমিশনের একাংশের ধারণা, মঙ্গলবার আদালতে মনোনয়নে গোলমালের প্রসঙ্গ উঠলে তারাও সমালোচনার মুখে পড়তে পারে। সে ক্ষেত্রে পুলিশ-প্রশাসনের অসহযোগিতার কথা আদালতে জানানো হবে। কমিশনের একটি সূত্র জানাচ্ছে, এ দিন পুলিশ-প্রশাসনের ভূমিকায় ‘ক্ষুব্ধ’ রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। কারণ, বাধাহীন মনোনয়ন ‘সুনিশ্চিত’ করতে ডিজিকে চিঠি লিখেছিলেন তিনি। চিঠির প্রতিলিপি পাঠানো হয় পুলিশ কমিশনার এবং পুলিশ সুপারদের কাছে। ওই চিঠিতে বীরভূমের রামপুরহাট ও নলহাটি, বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর, সামগ্রিক পূর্ব বর্ধমান, নদিয়ার হরিণঘাটা, পূর্ব মেদিনীপুরের হলদিয়া, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার, মুর্শিদাবাদের কান্দি, রানিনগর, রঘুনাথগঞ্জের বিষয়ে বিশেষ ভাবে সতর্ক করেছিলেন অমরেন্দ্র।

তার পরেও এই গোলমাল দেখে অনেকেই মনে করছেন, কমিশনারের চিঠিকে কার্যত আমল দেয়নি পুলিশ-প্রশাসন। কমিশনার এ দিন জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপারদের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গিয়েছে। বিকেলের পরে তিনি ফোনে স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গেও কথা বলেছেন বলে জানাচ্ছে নবান্নের একটি সূত্র। কমিশনের একাংশের মতে, সুষ্ঠু ভোটের জন্য কয়েকটি জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারকে বদলি করা প্রয়োজন।

এ দিনের অশান্তি নিয়ে অমরেন্দ্রর সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা হয়েছিল। প্রথম বার তাঁর অফিসের এক কর্মী ফোন ধরে জানান, কমিশনার ব্যস্ত আছেন। পরে ফের ফোন করা হলে কেউ তা ধরেননি। এসএমএসের জবাব মেলেনি। কমিশনারের দেখা পায়নি বিরোধী দলগুলিও। কমিশনের দফতরের বাইরে বিক্ষোভ দেখায় কংগ্রেস। বেলা দেড়টা নাগাদ কমিশনের দফতরের সামনের রাস্তায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সন্ধ্যা প্রায় সাতটা পর্যন্ত তা বলবৎ ছিল।

এ-হেন পরিস্থিতির মধ্যে সোমবার রাত ৯টা পর্যন্ত সাতটি জেলার মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার হিসাব এসে পৌঁছেছে কমিশনে। গ্রাম পঞ্চায়েতে ৭০০টির মতো মনোনয়ন জমা পড়েছে। পঞ্চায়েত সমিতিতে ১৫০টির পাশাপাশি, জেলা পরিষদে ১৫টি মনোনয়ন জমা পড়েছে। সেই রিপোর্টে এখনও পর্যন্ত সব থেকে কম মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে দক্ষিণ ২৪ পরগনাতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন