ফের পিছিয়ে গেল পঞ্চায়েত মামলার শুনানি।
আশা করা হয়েছিল, শুক্রবারেই একটা সমাধান সূত্র বেরিয়ে আসবে। কিন্তু, শেষ পর্যন্ত ঝুলেই রইল পঞ্চায়েত ভোটের ভাগ্য। ১৪ মে আদৌ কি ভোট হবে? তা নিয়ে জটিলতা কাটল না এ দিনও।
প্রধান বিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্যের ডিভিশন বেঞ্চে এ দিন ভোটের নিরাপত্তা বিষয়ক মামলার শুনানি ছিল। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এ বিষয়ে একটি মামলা দায়ের করেছিলেন। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়ে দেয়, এখনই এই মামলার রায় দেবে না তারা। এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি আগামী মঙ্গলবার হবে বলে জানিয়েছে আদালত।
ভোটের সময় নিরাপত্তা ব্যবস্থা কেমন হবে, তার পরিকল্পনা নিয়ে আদালতকে জানানোর কথা ছিল রাজ্য সরকার এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনের। কিন্তু শুনানি পিছিয়ে যাওয়ায় সে দিনই আদালতকে এ বিষয়ে তারা রিপোর্ট দেবে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন: পথ রুখে মিছিল নয়, বলল হাইকোর্ট
আরও পড়ুন: ফেসবুকে ছবি! দিদিতে ভরসা রাখছেন নির্দলও
এ দিন মামলাটি উঠলে প্রধানবিচারপতি জ্যোতির্ময় ভট্টাচার্য স্পষ্ট জানিয়ে দেন, পঞ্চায়েত সংক্রান্ত আরও অনেক মামলা চলছে আদালতে। যেগুলোর রায় এখনও বেরোয়নি। এই পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে তাঁর রায় দেওয়াটা সমীচীন নয়। পাশাপাশি তিনি এটাও জানান, অন্যান্য বেঞ্চে হওয়া মামলাগুলোর রায় দেখার পরেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
এ দিন অন্য একটি মামলায় আদালতের কড়া সমালোচনার মুখে পড়তে হয় কমিশনকে। মনোনয়নের জন্য এক দিন মেয়াদ বাড়ানো নিয়ে কমিশনের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন কংগ্রেসের ঋজু ঘোষাল। এ দিন সেই মামলাটি ওঠে বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার এবং অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চে। কিন্তু ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়ে দেয়, কমিশন অরাজনৈতিক ভাবে কাজ করবে এটাই প্রত্যাশিত ছিল। কিন্তু সেই অনুসারে কাজ করেনি তারা। কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। এরই পাশাপাশি বেঞ্চ জানিয়েছে, তিন দফার নির্বাচনকে এক দফায় নিয়ে এসে মানুষকে কমিশনেরবিরুদ্ধে আঙুল তোলার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। আদালতের মতে, কমিশন সঠিক পরিকল্পনা করলে এ সব এড়ানো যেত।
বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার বলেন, “নির্বাচন কমিশন একটি সাংবিধানিক এবং স্বশাসিত সংস্থা। কমিশনের আইনেই বলা আছে কী করা উচিত, আর কী নয়। তাই নতুন করে এই প্রক্রিয়ার মধ্যে হস্তক্ষেপ করবে না ডিভিশন বেঞ্চ।”
ডিভিশন বেঞ্চের শুনানির পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, “নির্বাচনে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা এবং প্রার্থীদের নিরাপত্তা চেয়ে আমরা মামলা করেছিলাম। কিন্তু নিরাপত্তা বিঘ্নিত হচ্ছে।” পাশাপাশি তিনি আরও বলেন, “৩৪ শতাংশ আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে শাসকদল। সে জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রায় ১ কোটি ৭৫ লক্ষ ভোটারই তাঁদের ভোটাধিকারই প্রয়োগ করতে পারছে না। এর থেকে মনে হচ্ছে গোটা নির্বাচনটাই যেন একটা প্রহসনে পরিণত হয়েছে।”
অন্য দিকে, বিজেপি নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নির্বাচন আজ বিশ বাঁও জলে। আর এর জন্য দায়ী কমিশন ও সরকার। আগামী মঙ্গলবারের পর জানা যাবে ভোট কবে হবে।” তবে যত দফাই ভোট হোক না কেন বিজেপি যে সব কিছুতেই রাজি এ দিন সেটা স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি।