প্রচারে গা নেই, তৃণমূলের ‘হুইপ’ সুতাহাটায়

ভোটের আগেই পূর্ব মেদিনীপুরের সুতাহাটা ব্লক প্রায় তৃণমূলের দখলে চলে এসেছে। গত বার বামেদের হাতে থাকা পঞ্চায়েত সমিতি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখল করে নিয়েছে শাসকদল।

Advertisement

কেশব মান্না

সুতাহাটা শেষ আপডেট: ০১ মে ২০১৮ ০৫:২৯
Share:

প্রতীকী ছবি।

আর দু’সপ্তাহও নেই। অথচ ভোটের হাওয়া উধাও সুতাহাটায়। এলাকায় প্রচারের নামগন্ধ নেই। চোখে পড়ছে না তৃণমূলের দেওয়াল লিখনও!

Advertisement

বস্তুত, ভোটের আগেই পূর্ব মেদিনীপুরের সুতাহাটা ব্লক প্রায় তৃণমূলের দখলে চলে এসেছে। গত বার বামেদের হাতে থাকা পঞ্চায়েত সমিতি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দখল করে নিয়েছে শাসকদল। জেলা পরিষদের একটি এবং গ্রাম পঞ্চায়েতের ৮৯টি আসনেও ঘাসফুলের প্রার্থীরা জয় নিশ্চিত করে ফেলেছেন ভোটের আগেই।

তবে কি বেশিরভাগ আসনে ভোট হচ্ছে না বলেই জমছে না প্রচার?

Advertisement

তৃণমূলের অন্দরে কান পাতলে অবশ্য শোনা যাচ্ছে অন্য কথা। দলীয় সূত্রের খবর, সুতাহাটা ব্লকের একটি জেলা পরিষদ আসনে তৃণমূল প্রার্থী আনন্দময় অধিকারী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় হলেও অন্য আসনটিতে লড়াই হচ্ছে। সেখানে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রয়েছেন তৃণমূল প্রার্থী মিলন পাত্র এবং এসইউসি-র নারায়ণ প্রামাণিক। মনোনয়ন পেশের পরে বেশ কিছু দিন কেটে গিয়েছে। কিন্তু ঘাসফুলের প্রার্থী মিলন মণ্ডলের সমর্থনে এখনও প্রচারই শুরু হয়নি। দেওয়াল লিখন থেকে ফ্লেক্স, ব্যানার— কিছুই চোখে পড়ছে না।

প্রচারে এই ‘ঢিলেমি’ কাটাতে আসরে নেমেছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রের খবর, রবিবার এ নিয়ে চৈতন্যপুরে বৈঠক হয়েছে। সেখানে দলের ব্লক সভাপতি অমিয়কুমার দাস রীতিমতো ‘হুইপ’ জারি করে কর্মীদের জানিয়েছেন, অবিলম্বে প্রচার শুরু করতে হবে। সে কথা স্বীকার করে ব্লক সভাপতি অমিয়বাবু বলেন, ‘‘সব কর্মীকে প্রচারে ঝাঁপাতে নির্দেশ দিয়েছি। দ্রুত দেওয়াল লিখন সেরে ফেলতে
বলা হয়েছে।’’

সুতাহাটার যে একটিমাত্র জেলা পরিষদ আসনে ভোট হচ্ছে, তা কুকড়াহাটি, চৈতন্যপুর ও আশদতলিয়া অঞ্চল নিয়ে গঠিত। কিন্তু গোটা তল্লাটে তৃণমূল প্রার্থীর প্রচার খুঁজে পাওয়া ভার। বিরোধীদের অভিযোগ, সন্ত্রাস ছড়িয়ে যে ভাবে ভোটের আগেই ভোট শেষ করে দেওয়া হয়েছে, তাতে তৃণমূলের মধ্যেও ক্ষোভ রয়েছে। তাই একাংশ কর্মী-সমর্থক প্রচারে নামছেন না। সিপিএমের জেলা সম্পাদক মণ্ডলীর সদস্য শ্যামল মাইতির কথায়, ‘‘তৃণমূল সন্ত্রাস করে বিরোধীদের মনোনয়নটুকু দিতে দেয়নি। তার প্রতিবাদে প্রকৃত তৃণমূল কর্মীরা বসে যাচ্ছেন।’’ একই সুরে বিজেপি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক মানসকুমার রায় বলছেন, ‘‘মনোনয়ন পর্বে বিরোধীদের সঙ্গে যে আচরণ তৃণমূল করেছে, তা ওদের নিজের লোকেরাও মানতে পারেনি।’’

এই ব্যাখ্যা অবশ্য উড়িয়ে দিচ্ছে তৃণমূল। যে প্রার্থীর প্রচারে ভাটা, সেই মিলন বলছেন, ‘‘গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতিতে দল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে যাওয়ায় কর্মীদের কিছুটা আত্মতুষ্টি ছিল। তা ছাড়া, আমার আসনটির জন্য আলাদা পরিকল্পনা নিয়েছেন নেতৃত্ব। তাই প্রচার শুরুতে একটু দেরি হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন