জখম পুলিশকর্মী। নিজস্ব চিত্র
বেশির ভাগ জায়গায় তাঁরা নেহাত দর্শকের ভূমিকা— এমন অভিযোগ রাজ্য জুড়ে। যদি বা গা ঘামাতে গেলেন, জুটল মারধর। গুলিবিদ্ধও হলেন এক পুলিশ কর্মী।
সোমবার, শাসক দলের তাণ্ডবের সাক্ষী থাকল দক্ষিণ ২৪ পরগনার নানা প্রান্ত। অভিযোগ যথারীতি মানতে চাননি শাসক দলের নেতারা। উস্তির মগরাহাট ১ ব্লক অফিসের সামনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়া নিয়ে শাসক দলের সঙ্গে বিরোধীদের মারপিট বাধে। গোলমাল ঠেকাতে এগিয়ে যান রফিক জামান নামে এক সাব ইন্সপেক্টর। ভিড়ের মধ্যে থেকে কয়েকটি গুলি চলে। রফিকের বাঁ হাতের কনুইয়ের উপরে একটি গুলি এসে লাগে। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। কারা গুলি চালাল, খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানান পুলিশ সুপার কোটেশ্বর রাও।
সকালের দিকে ভাঙড়ের চন্দনেশ্বরের তৃণমূল নেতা তথা ভাঙড় ১ ব্লকের তৃণমূলের প্রাক্তন সভাপতি জাহাঙ্গির খান চৌধুরী ও তাঁর গোষ্ঠীর লোকজন মহকুমাশাসকের দফতরে মনোনয়ন জমা দিতে যান। সে সময়ে চন্দনেশ্বর ১ পঞ্চায়েতের প্রধান শাজাহান মোল্লা দলবল নিয়ে বাধা দেন বলে অভিযোগ। দু’পক্ষের বচসা, মারপিট বাধে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদেরও মারধর করা হয়। তাঁদের উদ্ধারে এগিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। সাব ইন্সপেক্টর লক্ষ্মীকান্ত বিশ্বাসকে মারধর করা হয়।
বারুইপুর জেলা পুলিশের কর্তাদের সদর দরজার সামনেই কার্যত শাসক শিবির তাণ্ডব চালিয়েছে বলে অভিযোগ। মহিলা প্রার্থীদের চুলের মুঠি ধরে পুলিশের সামনেই মাটিতে ফেলে মারধর করা হয়। রেয়াত করা হয়নি বয়স্ক প্রার্থীদেরও। পুলিশের সামনেই তাড়া করে মারধর করা হয় কাউকে কাউকে— অভিযোগ এমনই। বারুইপুর জেলা পুলিশ সুপার অরিজিৎ সিংহ বলেন, ‘‘দু’জন পুলিশ কর্মী জখম হয়েছেন। ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’
এ দিন বারুইপুরে মনোনয়নপত্র জমা ও তোলার সময়ে তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। বিরোধীদের দাবি, বেলা ১১টা থেকে বারুইপুর, বিষ্ণুপুর এলাকায় রাস্তা আটকে দেয় শাসক দলের কর্মীরা। প্রার্থীদের গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করে অটো-টোটাতে তুলে ফেরত পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশ দাঁড়িয়ে থাকা ছাড়া কিছুই করেননি, অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন মহলে।
আলিপুরে মহকুমাশাসকের অফিসে যাওয়ার পথে বজবজ, মহেশতলা ও বিষ্ণুপুরে বিরোধীদের বাস, গাড়ি থেকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। দফতর থেকে বিরোধীদের মারধর করে বের করে দেওয়া, অপহরণেরও অভিযোগ উঠছে। এ ক্ষেত্রেও পুলিশের ভূমিকায় ক্ষুব্ধ বিরোধী শিবির।