তৃণমূলের বিধায়ক-নেতা-কর্মীদের মতোই পুলিশের হাতেও ‘ভিক্ট্রি সাইন’।
পাশে বসা তৃণমূলের বিধায়ক-নেতা-কর্মীরা। জয়ের উল্লাস সকলের চোখেমুখে। হাতে ‘ভিক্ট্রি সাইন’। শাসক দলের বিজয়োৎসবের এই ছবিতে এ বার এক ফ্রেমেই ধরা পড়লেন পুলিশের একাধিক কর্তা। তৃণমূলের বিধায়ক-নেতা-কর্মীদের মতোই তাঁদের হাতেও ‘ভিক্ট্রি সাইন’। রীতিমতো ভাইরাল এই ছবি প্রকাশ্যে আসতেই ফের বড়সড় প্রশ্নের মুখে পুলিশের নিরপেক্ষ ভূমিকা। ঘটনাস্থল জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জ।
সদ্যসমাপ্ত পঞ্চায়েত নির্বাচনে কোথাও পেশীর জোরে, কোথাও বা অস্ত্রের জোরে বিরোধীদের দাবিয়ে রাখায় অভিযোগ উঠেছে শাসক দলের বিরুদ্ধে। কোথাও বা আবার মনোনয়নপত্র জমা দিতে গিয়ে শাসক দলের কর্মী-সমর্থকদের তাড়া খেয়েছেন বিরোধীরা। বহু জায়গাতেই শাসক দলের প্রার্থীর সামনেই ছাপ্পা ভোট পড়েছে বলে অভিযোগ। বিরোধী পক্ষের দাবি ছিল, প্রতিটি ক্ষেত্রেই পাশে ছিল পুলিশের ‘হাত’। পুলিশের নিষ্ক্রিয় ভূমিকা নিয়ে এ রকম ভূরি ভূরি অভিযোগ ছিল বিরোধীদের। তবে বরাবরই অভিযোগের সত্যতা অস্বীকার করেছে পুলিশ-প্রশাসন।
এ বার শাসক দলের বিজয়ী প্রার্থীর সঙ্গে বসে একসঙ্গে বিজয়োৎসব পালনও করলেন পুলিশ আধিকারিকেরা। সোশ্যাল মিডিয়ার সৌজন্যে সে ছবি প্রকাশ্যে আসতেই তা রীতিমতো ভাইরাল। যদিও তা কোনও ভাবেই ‘দোষ’-এর নয়, তেমনটাই মত পুলিশের। পাশাপাশি, এই ঘটনার কথা অস্বীকার করেছেন তৃণমূল বিধায়ক।
আরও পড়ুন
জেতা প্রার্থীর হার! নালিশ হেনস্থারও
বিজেপি-র দাবি, ভাইরাল হওয়া ওই ছবিটি গত ১৭ মে পঞ্চায়েত নির্বাচনের গণনার দিনের। তাদের অভিযোগ, সে দিন গণনাকেন্দ্রের বাইরে রাজগঞ্জের তৃণমূল নেতাদের সঙ্গে জয়ের উল্লাসে মাতেন একাধিক পুলিশ আধিকারিক। তৃণমূলের জেলা পরিষদের প্রার্থী লাভলি বেগম জেতার পরে জলপাইগুড়ির রাজগঞ্জের বিধায়ক এবং পুলিশ আধিকারিকরা একসঙ্গে উৎসবে মাতেন। এবং ওই ছবি সেখানকারই বলে দাবি বিজেপি-র।
আরও পড়ুন
আশাকে সম্মান, নাম না-করেও বিজেপিকে নিশানা মমতার
যদিও রাজগঞ্জ থানার ওসি তমাল দাস এ নিয়ে ‘দোষ’-এর কিছু দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘‘রাজগঞ্জের এম এন হাইস্কুলে গণনার দিন জয়ী প্রার্থীদের নিয়ে দেখা করতে এসেছিলেন বিধায়ক খগেশ্বর রায়। তখনই এই ছবিটি তোলা হয়েছে। এতে খারাপ কী আছে, বুঝতে পারছি না। বিজেপি এটা নিয়ে যা খুশি তাই করছে।’’
পুলিশ স্বীকার করলেও ওই ছবি তোলার কথা অস্বীকার করেছেন রাজগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক খগেশ্বর রায়। তাঁর কথায়: ‘‘না না! এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি।’’ সব শুনে অবশ্য জনতার কোর্টেই বল ঠেলে দিয়েছে বিজেপি। দলের জেলা সভাপতি দেবাশিস চক্রবর্তীর কটাক্ষ, ‘‘সাধারণ মানুষ দেখুক আর বিচার করুক!’’