কমিশনের সঙ্গে সংঘাতের খেসারত

কমিশনের সঙ্গে অসহযোগের রাস্তায় চলে গিয়েছিল রাজ্য প্রশাসন। তার জেরে কমিশনার পিছু হটেছিলেন বটে। কিন্তু মুখ পুড়ল আদালতে। গত ক’দিনের ঘটনাপ্রবাহ খতিয়ে দেখে এমনটাই মনে করছেন নবান্নের আমলাদের একটা বড় অংশ।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:৫৩
Share:

রাজ্য নির্বাচন কমিশন ‘একতরফা ভাবে’ মনোনয়ন পেশের সময়সীমা এক দিন বাড়িয়ে দেওয়ায় ক্ষুব্ধ হয়েছিল নবান্ন। এর পরে শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা দু’দফায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্রকুমার সিংহের বাড়ি গিয়ে তাঁকে নরমে-গরমে সমঝে এসেছিলেন বলে অভিযোগ। পাশাপাশি, কমিশনের সঙ্গে অসহযোগের রাস্তায় চলে গিয়েছিল রাজ্য প্রশাসন। তার জেরে কমিশনার পিছু হটেছিলেন বটে। কিন্তু মুখ পুড়ল আদালতে। গত ক’দিনের ঘটনাপ্রবাহ খতিয়ে দেখে এমনটাই মনে করছেন নবান্নের আমলাদের একটা বড় অংশ।

Advertisement

১০ তারিখ সকাল ১১টা থেকে বিকেল ৩টে পর্যন্ত কত জন মনোনয়ন জমা দিতে পেরেছিলেন, কত জন মনোনয়ন জমা দিতে এসে ফিরে যান, তার সবিস্তার তথ্য এ দিন কমিশনের সচিবের কাছে জানতে চেয়েছিলেন বিচারপতি সুব্রত তালুকদার। সচিব কোনও জবাব দিতে পারেননি।

কমিশনের অন্দরমহলের খবর, মনোনয়নের সময়সীমা বাড়ানো মাত্র রাজ্য সরকার কমিশনের সঙ্গে কার্যত যুদ্ধে নেমে পড়ে। জেলায় জেলায় নির্দেশ যায়, বিডিও অফিসগুলিতে কোনও পুলিশ পাঠানো হবে না। পুলিশ না থাকায় মনোনয়ন নেননি বিডিও-রা। ইতিমধ্যে আগের নির্দেশ প্রত্যাহার করে কমিশনের নতুন বিজ্ঞপ্তিও এসে যায়। কিন্তু মনোনয়ন দেওয়ার জন্য কত জন এসেছিলেন, সে ব্যাপারে কমিশনকে কিছুই জানায়নি সরকার। ফলে এ দিন সচিবকে চুপ করেই থাকতে হয়েছে।

Advertisement

প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তার মতে, ৯ তারিখ রাতে থেকে ১০ তারিখ সারা দিন রাজ্য প্রশাসনের লক্ষ্য ছিল, যেনতেন প্রকারে কমিশনের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করানো। সেই লক্ষ্যে চাপ দিতে গিয়ে অন্যান্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহের দিকে তারা নজর দেয়নি। তারই খেসারত দিতে হল আদালতে।

কমিশনের উপরে প্রশাসনের প্রভাব বিস্তার প্রসঙ্গে ওই কর্তার মন্তব্য, ‘‘এক সময় রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের (সিইও) অফিস ছিল মহাকরণে। রাজ্য সরকার যাতে তাঁর উপর প্রভাব বিস্তার করতে না পারে, সে জন্য কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন সিইও অফিস মহাকরণ থেকে সরিয়ে দিয়েছিল। আর রাজ্য নির্বাচন কমিশনের অফিস প্রশাসনিক চৌহদ্দির বাইরে থেকেও সচিবালয়ের শাখা অফিস হিসাবেই কাজ করেছে।’’

কমিশনের অবশ্য দাবি, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের নির্দেশ জেলা প্রশাসন যতটা গুরুত্ব দিয়ে দেখে, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ক্ষেত্রে তা হয় না। ফলে কমিশনের নির্দেশ মানার আগে নবান্নের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকেন ডিএম-এসপি’রা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন