‘ক্ষোভে’র চাপে তৃণমূল নেতৃত্ব

গত বারের বেশ কিছু বিজয়ী সদস্য গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এমনকী জেলা পরিষদেও মনোনয়ন পাননি এমন অভিযোগ পৌঁছচ্ছে দলের শীর্ষস্তরে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:২০
Share:

প্রতীকী ছবি।

স্বয়ং তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সতর্ক করে দিয়ে বলেছিলেন, গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব এড়াতে কোনও অভিযোগ না থাকলে পঞ্চায়েতে জেতা তৃণমূলের সদস্যদের এ বার প্রার্থী করতে হবে। তা সত্ত্বেও গত বারের বেশ কিছু বিজয়ী সদস্য গ্রাম পঞ্চায়েত, পঞ্চায়েত সমিতি এমনকী জেলা পরিষদেও মনোনয়ন পাননি এমন অভিযোগ পৌঁছচ্ছে দলের শীর্ষস্তরে। প্রায় সব ক্ষেত্রেই পুরনোদের মনোনয়ন দেওয়া বা উপায়ান্তর না থাকলে অন্য ভাবে ‘মর্যাদা’ দেওয়ার পথে যাচ্ছে দল।

Advertisement

দিন কয়েক আগে এমনই একটি ঘটনা ঘটেছিল নদিয়ার মহেশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সুমনা বিশ্বাসকে নিয়ে। সোমবার সেই তালিকায় যুক্ত হলেন নদিয়ারই জেলা পরিষদের সদস্য সুনীল(কেষ্ট) পাল। এখন যেহেতু মনোনয়ন দেওয়ার সুযোগ নেই, তাই প্রয়োজনে তাঁকে জেলায় সাংগঠনিক দায়িত্ব দিয়ে তাঁর ‘ক্ষোভ’ প্রশমনের চেষ্টা করছে দল। উত্তর ২৪ পরগনায় ব্যারাকপুর-২ ব্লকে গ্রাম পঞ্চায়েত ও পঞ্চায়েত সমিতির ২৩ জন জেতা সদস্যকে প্রার্থী করতে রাজি হননি জেলা নেতৃত্ব। এই অভিযোগ জানার পরে মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপেই ২৩ জন ফের মনোনয়ন পেশের সুযোগ পান।

আরও পড়ুন: দলে নিয়ন্ত্রণ চাই, পার্থকে সিদ্দিকুল্লা

Advertisement

যাঁরা তৃণমূলের প্রার্থী হতে পারছেন না, তাঁদের একটি বড় অংশ চলে যাচ্ছেন বিজেপি শিবিরে। সেখানে অনেকে প্রার্থীও হচ্ছেন। এই অবস্থায় শাসক দলের পক্ষে বিষয়টি দু’দিক থেকে চিন্তার কারণ হয়েছে। এক, তৃণমূল থেকে বিজেপিতে চলে যাওয়ার প্রবণতা। দুই, নিজেদের দলের ভাঙন রোধ।

নদিয়া জেলা নেতৃত্ব এ বার তাঁকে প্রার্থী না করায় ‘অভিমানে’ বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন নদিয়ার জেলা পরিষদের সদস্য সুনীলবাবু। দলনেত্রীর নির্দেশে সোমবার তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় সুনীলবাবুর ক্ষোভ প্রশমনের চেষ্টা করেন। পার্থবাবুর নাকতলার বাড়িতে নদিয়ার তৃণমূল নেতা শঙ্কর সিংহের উপস্থিতিতে সুনীলবাবুকে নিয়ে দীর্ঘক্ষণ বৈঠক করেন। বৈঠকের পরে পার্থবাবু বলেন, ‘‘জেলা পরিষদের সদস্য হিসেবে কাজ করেও এ বার আসন পাননি সুনীলবাবু। ফলে ক্ষোভে বিজেপিতে চলে গিয়েছিলেন। ওঁর অভিমান-ক্ষোভের যুক্তি আছে। উনি বিজেপির মনোনয়ন পত্র প্রত্যাহার করে তৃণমূলেই ফিরে আসবেন। ওঁকে জেলায় সাংগঠনিক দায়িত্ব দেওয়া হবে।’’ সুনীলবাবুর বক্তব্য, ‘‘বিজেপির হয়ে মনোনয়ন দিয়েছিলাম, তা প্রত্যাহার করে নেব।’’

কিন্তু নেত্রীর নির্দেশ এ ভাবে জেলায় জেলায় অমান্য হচ্ছে কেন? পার্থবাবুর জবাব, ‘‘তৃণমূলের প্রার্থী হওয়ার এত বেশি উৎসাহ যে অনেক জায়গাতেই সমস্যা হচ্ছে। তবে জেতা প্রার্থীরা যাতে মনোনয়ন জমা দিতে পারেন, সে জন্য পর্যবেক্ষকরা নজর রাখছেন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন