কার্শিয়াঙে মুখ্যমন্ত্রী। সোমবার বিশ্বরূপ বসাকের তোলা ছবি।
তাঁর ‘দিলে’র কাছেই থাকে ‘হিল’।
সোমবার সকালে দার্জিলিঙের ম্যালে দাঁড়িয়ে এ কথা জানিয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ম্যাল চৌরাস্তায় সুভাষচন্দ্র বসুর ১২১ তম জন্মজয়ন্তীর অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে মুখ্যমন্ত্রী পরিষ্কার জানিয়ে দেন, দার্জিলিং পাহাড় রাজ্যের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, গুরুঙ্গদের পৃথক রাজ্যের দাবির সঙ্গে লড়াই করতে তাঁর অস্ত্র হল, দার্জিলিংকে রাজ্যের মধ্যে রেখেই তার উন্নয়ন করা। পাহাড়ের ভোট নিয়ে তৃণমূল যে গুরুত্ব দিয়ে ভাবছে, তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী পাহাড়ে তিনটি উন্নয়ন পর্ষদ গড়েছেন। সে কথা উল্লেখ করে ওই মঞ্চে বলেন, ‘‘পাহাড়ে শান্তি আছে, থাকবে। আরও উন্নয়নের কাজ হবে। পাহাড় সব সময় হাসবে। আপনারা আমার পাশে থাকুন।’’
গত রবিবার কার্শিয়াঙের সভা থেকে পাহাড়ের জন্য নতুন আরও তিনটি বোর্ডের ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিন তরাই-ডুয়ার্সের আদিবাসীদের জন্য বোর্ড নিয়ে যে তিনি ভাবনাচিন্তা করছেন, তা-ও জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। পাহাড়ে এখন ১৫টি জনজাতির বোর্ড রয়েছে। এ দিন বিভিন্ন বোর্ডের ১৪টি প্রকল্পের শিলান্যাস এবং উদ্বোধনও করেছেন। পাহাড়ের জনজাতির মন জয় করে পুরভোটের প্রস্তুতিতে তৃণমূল যে পুরোপুরি নেমে পড়েছে, তা বিকালেই স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। এ দিনই দার্জিলিং পুরসভার ২৫ নম্বর ওয়ার্ডের মোর্চাত্যাগী কাউন্সিলর শুভময় চট্টোপাধ্যায় দলের পাহাড়ের পর্যবেক্ষক তথা মন্ত্রী অরূপ বিশ্বাসের হাত ধরে তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন।
আমন্ত্রণ জানানো হলেও জিটিএ-র কেউ মুখ্যমন্ত্রীর সভায় যাননি। শুধু দার্জিলিঙের বিধায়ক অমর রাই এসেছিলেন। মোর্চা বা জিটিএ-র তরফে সারা দিন কেউ কোনও মন্তব্যও করতে চাননি।
এ দিন গিদ্দাপাহাড়ের নেতাজি ইনস্টিটিউট অব এশিয়ান স্টাডিজকে পর্যটনস্থল হিসাবে গড়ে তোলার জন্য ১০ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। ১৯৩৬ সালে গৃহবন্দি থাকাকালীন এখানে ছিলেন নেতাজি। এর পরেই কেন্দ্রকে দোষারোপ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা নেতাজির ১২১ জন্মজয়ন্তী পালন করছি। এটা খুবই দুঃখের যে আমরা তাঁর মৃত্যু বা কোনও দিনক্ষণ সম্পর্কে কিছুই জানি না। যখন কেউ জন্মান তখন তাঁর মৃত্যু সম্পর্কেও জানা দরকার। আর নেতাজির মতো মানুষ হলে তো কথাই নেই। নইলে তো ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যায়। আমাদের কাছে যে নথি ছিল, সব প্রকাশ্যে এসেছে। কেন্দ্রীয় সরকারের কাছেও নথিপত্র রয়েছে। তদন্ত করে কেন্দ্রের সত্যিটা সামনে আনা দরকার। কিন্তু কিছুই হচ্ছে না।’’
কেন্দ্রের নোট বাতিলের প্রসঙ্গও এ দিন মমতার বক্তব্যে উঠে এসেছে।