সব স্কুলেই বাংলা আগামী শিক্ষাবর্ষে

বিতর্ক, টানাপড়েনে ইতি টেনে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। মুখ্যমন্ত্রী বুধবার জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই রাজ্যের সব স্কুলে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা পড়া বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ জুন ২০১৭ ০৪:৪৬
Share:

বিতর্ক, টানাপড়েনে ইতি টেনে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।

Advertisement

মুখ্যমন্ত্রী বুধবার জানিয়ে দিয়েছেন, আগামী শিক্ষাবর্ষ থেকেই রাজ্যের সব স্কুলে প্রথম থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত বাংলা পড়া বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে। তবে সর্বভারতীয় বোর্ডগুলির দশম শ্রেণিতে বোর্ডের পরীক্ষায় বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত না-করে স্কুলেই বাংলার পরীক্ষা নেওয়া যেতে পারে। এ দিন টাউন হলে বেসরকারি স্কুল, কলেজগুলির সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী এটা পরিষ্কার করে দেওয়ার পরে বাংলার আবশ্যিক পঠনপাঠন নিয়ে সংশয়ের অবকাশ আর থাকছে না বলেই মনে করছে শিক্ষা শিবির।

বেসরকারি স্কুলের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে মমতা এ দিন জানান, প্রাদেশিক ভাষাকে বাধ্যতামূলক ভাবে পড়ানোর ব্যাপারে প্রতিটি রাজ্যেই আইন আছে। কিন্তু এই রাজ্যে তা করা হচ্ছে না। ‘‘আমরা কোনও কিছুই চাপিয়ে দিতে চাই না। পড়ুয়ারা নিজেদের ইচ্ছেমতো ইংরেজি, হিন্দি, উর্দু, নেপালি, অলচিকি, গুরমুখি— যে-ভাষা চাইবে পড়তে পারে। কিন্তু তৃতীয় ভাষা হিসেবে তো বাংলা পড়া যেতেই পারে,’’ বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। স্কুল স্তরে বাংলাকে বাধ্যতামূলক করা হচ্ছে বলে কয়েক দিন আগেই ঘোষণা করেছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন সেই সিদ্ধান্তেই সিলমোহর দিলেন।

Advertisement

মমতা মনে করেন, স্কুল স্তর থেকে অন্তত তিনটি ভাষা পড়া দরকার। তার মধ্যে একটিকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ে ছেড়ে দেওয়াটাও কোনও কাজের কথা নয়। কেননা ওই শ্রেণি পর্যন্ত এগিয়ে ছেড়ে দিলে পরবর্তী কালে সেই ভাষাটা সম্পর্কে ছাত্র বা ছাত্রীর আর আগ্রহ অবশিষ্ট থাকে না। তাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয় পড়ুয়াই। বাড়তি একটি ভাষার ঐশ্বর্য থেকে সে বঞ্চিত হয়। যে যত বেশি ভাষা জানে, সে তত সমৃদ্ধ হয়। আইসিএসই, সিবিএসই বোর্ডের বেশির ভাগ স্কুলেই বাংলাকে গুরুত্ব দেওয়া হয় না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে বাংলা যাতে মর্যাদা পায়, সেই লক্ষ্যে পড়ুয়াদের বাংলা পড়ার উপরে জোর দিতে বলেন তিনি।

আরও পড়ুন: স্কুল ফি’তে কমিটির নজরদারি

মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য শুনে রাজ্যের আইসিএসই স্কুলগুলির সংগঠনের সভাপতি এবং রামমোহন মিশন স্কুলের অধিকর্তা সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘আইসিএসই, সিবিএসই বোর্ডের নিয়ম অনুযায়ী দশম শ্রেণিতে দু’টি ভাষার পরীক্ষা হয়। তৃতীয় ভাষা চালু হলে অসুবিধা হতে পারে।’’

‘‘এই অসুবিধার কথা মাথায় রেখেই আমরা দশম শ্রেণি পর্যন্ত ত্রিভাষা পড়ানোর কথা বলেছি। আইসিএসই বা সিবিএসই— আলাদা ভাবে কিছু উল্লেখ করা হয়নি,’’ বলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি জানিয়ে দেন, দশম শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষায় তৃতীয় ভাষা রাখার তো দরকার নেই। তবে স্কুলে ওই তৃতীয় ভাষার পরীক্ষা নিতে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন