ফাইল চিত্র।
লোকসভা এবং বিধানসভা— পরপর দু’টি নির্বাচনে তিনি ছিলেন তৃণমূলের প্রার্থী। লোকসভায় দাঁড়িয়েছিলেন দার্জিলিং কেন্দ্রে। বিধানসভায় শিলিগুড়িতে। কোনও বারই জেতেননি। তবুও দলের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠতা যথেষ্ট। এমনকী, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও তিনি প্রিয়পাত্র। তৃণমূল সরকারের ‘বঙ্গভূষণ’ পুরস্কারে ভূষিত সেই জাতীয় ফুটবলার ভাইচুং ভুটিয়া প্রকাশ্যে গোর্খাল্যান্ডের পক্ষে মুখ খুললেন। তৃণমূলের নেতারা অনেকেই তাঁর এই ভূমিকায় ‘হতবাক’।
দেশের প্রাক্তন ফুটবল অধিনায়ক ভাইচুং বৃহস্পতিবার সিকিমের একটি পত্রিকায় দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেছেন, ‘‘ব্যক্তিগত ভাবে আমি চাই গোর্খাল্যান্ড আলাদা রাজ্য হোক। প্রায় তিন দশক ধরে পাহাড়ের মানুষ এই দাবিতে আন্দোলন চালাচ্ছেন।’’ সাম্প্রতিক আন্দোলনের সময়ে ভাইচুং নীরবই থেকেছেন। সে কথা জানিয়ে তাঁর বক্তব্য, ‘‘এই সময়টায় পাহাড়ের অনেক লোকের সঙ্গে বৈঠক করেছি। পুরনো কিছু আমলার পাশাপাশি তৃণমূল নেতাদের সঙ্গেও গোর্খাল্যান্ড আন্দোলন নিয়ে আমার কথা হয়েছে। অনেক কিছুই আলোচনা হয়েছে এবং ভিতরে ভিতরে অনেক কিছুই ঘটছে।’’
আরও পড়ুন: পাহাড়ের আস্থা অর্জনের চেষ্টা বিনয়ের
ভাইচুঙের দাবি, ‘‘অনেক তৃণমূল নেতা, আমলা এবং বঙ্গ সমাজের একাংশ গোর্খাল্যান্ডের পক্ষে। কিন্তু প্রকাশ্যে সে কথা বলার ক্ষমতা তাঁদের নেই।’’ ভাইচুংয়ের এ ধরনের বিস্ফোরক বক্তব্যের পর দলের শীর্ষ নেতারা কেউই প্রকাশ্যে মন্তব্য করতে চাননি। শুধু উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘অশান্তির দিনগুলোয় ভাইচুং খুবই চুপচাপ থাকতেন। তবে এ ধরনের কথা বলবেন, বুঝিনি। কেন বললেন, জানি না! ওঁর সঙ্গে কথা বলব।’’
উত্তরবঙ্গ ক্রীড়া উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান ভাইচুংয়ের জন্ম সিকিমে। এ বার দার্জিলিং থেকে পালিয়ে বিমল গুরুঙ্গ সিকিমে গা-ঢাকা দিয়েছেন বলে বারবারই দাবি করছে এ রাজ্যের পুলিশ। যে কারণে গুরুঙ্গকে ধরতে তারা সিকিম পর্যন্ত ধাওয়াও করেছে। গোর্খাল্যান্ড-রাজ্যের পক্ষে সিকিমের প্রচ্ছন্ন মদত রয়েছে বলেও অভিযোগ। সে ক্ষেত্রে ভাইচুংয়ের গোর্খাল্যান্ডের পক্ষে মুখ খোলার অন্য কোনও যোগসূত্র আছে কি না, তা নিয়েই তৃণমূলের অন্দরে গুঞ্জন শুরু হয়েছে।