পাওয়ার গ্রিড নিয়ে বরফ গলার ইঙ্গিত আলোচনায়

ঘণ্টাচারেকের ম্যারাথন বৈঠক শেষে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে লিখিত একটি চুক্তিপত্র তৈরি করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০১৮ ০৪:০৯
Share:

বৈঠকে যোগ দিতে এসেছেন অলীক চক্রবর্তী, শর্মিষ্ঠা চৌধুরী। রয়েছেন আন্দোলনকারী গ্রামবাসীরাও। সোমবার। ছবি: শশাঙ্ক মণ্ডল।

ভাঙড়ে পাওয়ার গ্রিড নিয়ে অচলাবস্থা কাটার ইঙ্গিত আরও স্পষ্ট হচ্ছে।

Advertisement

জমিহারাদের জন্য ক্ষতিপূরণ, ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য পুনর্বাসনের নানা সূত্র দিয়ে একটি প্যাকেজ তৈরি করে ভাঙড়ের আন্দোলনকারীদের আলোচনায় ডেকেছিল প্রশাসন। আলিপুরে জেলা পরিষদ অফিসে সোমবার বৈঠকে বসেন প্রশাসনের কর্তা ও জমি আন্দোলনকারীরা। ছিলেন পাওয়ার গ্রিড কর্তৃপক্ষ, রাজ্য বিদ্যুৎ দফতরের আধিকারিক, পুলিশ-কর্তারা। ঘণ্টাচারেকের ম্যারাথন বৈঠক শেষে দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও বলেন, ‘‘কয়েক সপ্তাহের মধ্যেই আন্দোলনকারীদের সঙ্গে লিখিত একটি চুক্তিপত্র তৈরি করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’’

আন্দোলনকারীরা অবশ্য বলছেন, এখনও চূড়ান্ত কোনও ফয়সালার পরিস্থিতি হয়নি। আলোচনা থেকে এ দিন কোনও নির্দিষ্ট সিদ্ধান্তও হয়নি। তবে দু’বছরের আন্দোলনের পরে সরকার পক্ষ যে তাঁদের সঙ্গে নিঃশর্ত আলোচনায় বসছে, এই ঘটনাকে ‘সদর্থক’ হিসেবেই দেখছেন আন্দোলনকারীরা। সদ্য জামিনে মুক্তিপ্রাপ্ত নকশাল নেতা অলীক চক্রবর্তী ছিলেন বৈঠকে। তিনি বলেন, ‘‘পাওয়ার গ্রিডের নানা কারিগরি দিক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। গ্রামবাসীদের তরফে নানা সমস্যার কথা তুলে ধরা হয়েছে। সরকার পক্ষ এখন অনেকটাই নমনীয়।’’

Advertisement

জেলা প্রশাসন সূত্রের খবর, পাওয়ার গ্রিড সম্প্রসারণে এখনও পর্যন্ত ৪টি টাওয়ার বসানো বাকি। প্রায় ২ কিমি তার টানার কাজও অসমাপ্ত। আন্দোলকারীদের দাবি, মাটি থেকে ৯ মিটার উচ্চতার জায়গায় তার ১২ মিটার উচ্চতায় বাঁধা হোক। কয়েকটি ইটভাটার উপর দিয়ে গ্রিডের তার গিয়েছে। সে ক্ষেত্রে তা বিপজ্জনক পরিস্থিতি তৈরি করতে পারে বলে আন্দোলকারীদের আশঙ্কা। বিকল্প কোনও ব্যবস্থা করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখা হবে বলে জেলা প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছে। পাওয়ার গ্রিড থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহের ক্ষেত্রে বিশেষ ধরনের গ্যাস ব্যবহার হয়। ওই গ্যাস সিলিন্ডার ‘লিক’ করলে বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে বলে আন্দোলনকারীদের তরফে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়। জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘এই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে বিচারাধীন। তবে এখনও পর্যন্ত যা জানা গিয়েছে, কোনও ভাবেই ওই গ্যাস বিপজ্জনক নয়। সারা দেশে পাওয়ার গ্রিডের প্রায় ৫০টি প্রকল্পে ওই গ্যাসের ব্যবহার হচ্ছে। কোনও ক্ষেত্রেই ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়নি।’’ এ বিষয়ে ভবিষ্যতে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে বলে আন্দোলনকারীদের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।

দিনতিনেকের মধ্যে পাওয়ার গ্রিড ও জেলা প্রশাসনের কর্তারা যৌথ ভাবে পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক। কিছু ক্ষেত্রে যদি ক্ষতিপূরণের প্রয়োজন হয়, তা হলে তা বিবেচনা করা হবে বলেও জানিয়েছেন রত্নাকর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement