ভুবনেশ্বর আদালতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে শ্রীকান্ত মোহতাকে। —নিজস্ব চিত্র।
শ্রীভেঙ্কটেশ ফিল্মস (এসভিএফ) কর্তা শ্রীকান্ত মোহতাকে নিজেদের হেফাজতে চাইলই না সিবিআই। শুক্রবার দুপুরের বিমানে তাঁকে কলকাতা থেকে ভুবনেশ্বরে নিয়ে যায় সিবিআই। সেখানে বিশেষ সিবিআই আদালতে শ্রীকান্তকে এ দিন তোলা হয়। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থার দাবি মেনে তাঁকে ১৪ দিন জেল হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।
শ্রীকান্তের আইনজীবীরা তাঁর জামিনের আবেদন জানিয়েছিলেন। আদালতে তাঁরা জানান, ২০১০ সালে যে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগে শ্রীকান্ত মোহতাকে গ্রেফতার করা হয়েছে, তা একটি ব্যবসায়িক লেনদেন। তার সঙ্গে চিটফান্ডের কোনও যোগ নেই।
সিবিআইয়ের আইনজীবীরা পাল্টা বিচারককে জানান, প্রায় ২৫ কোটি টাকার চুক্তি হয়েছিল গৌতম কুণ্ডুর রোজ ভ্যালি সংস্থারই ব্র্যান্ডভ্যালু কমিউনিকেশনসের সঙ্গে এসভিএফ কর্তার। ৭০টি ছবি বানানো এবং সম্প্রচার সংক্রান্ত সেই চুক্তির খেলাপ করে টাকা আত্মসাৎ করেন শ্রীকান্ত।
আরও পড়ুন: ‘সুন্দরী, কিন্তু রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা নেই’! প্রিয়ঙ্কাকে নিয়ে বিতর্কিত মন্তব্য বিহারের আরও এক মন্ত্রীর
এই অভিযোগ নিয়ে শ্রীকান্তের আইনজীবীরা বলেন, ওই বিষয়ে এর আগেই গৌতম কুণ্ডু কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন। সেই মামলা খারিজ করে দেয় হাইকোর্ট। এর পর শীর্ষ আদালতেও গিয়েছিলেন গৌতম। এর সঙ্গে চিটফান্ডের কোনও যোগ নেই। যদিও সিবিআই সেই দাবি মানতে চায়নি। তাঁদের আইনজীবীর দাবি, চিটফান্ডের টাকা জেনে শুনেই নিয়েছিলেন শ্রীকান্ত মোহতা।
আরও পড়ুন: মুকুলের হাত ধরে ‘ভাইপো’ বিজেপিতে, অনুব্রত বললেন ‘চিনিই না, পাগল সব’
এর পরই শ্রীকান্তের আইনজীবীরা বলেন, এসভিএফ কর্তার স্বাস্থ্যের অবস্থা খুব খারাপ। তাঁর হৃদযন্ত্রে সমস্যা আছে, তাই নিয়মিত চিকিৎসা প্রয়োজন। তাঁরা আদালতের কাছে আবেদন করেন যাতে শ্রীকান্তকে কলকাতার কোনও বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার সুযোগ দেওয়া হয়। নিজের খরচেই চিকিৎসা করা হবে বলেও জানান শ্রীকান্তের আইনজীবীরী। কিন্তু তার বিরেধিতা করেন সিবিআইয়ের আইনজীবী। তিনি জামিনের তীব্র বিরোধিতা করে বলেন, জেলের হাসপাতালেই প্রয়োজনে চিকিৎসা করা যাবে শ্রীকান্তের।
এসভিএফ কর্তার আইনজীবীরা দাবি করেন, সিবিআইয়ের হাতে কোনও তথ্য প্রমাণ নেই। তাঁরা জামিনের দাবিতে গলা চড়াতে থাকেন। তখন এই মামলার কেস ডায়েরি বিচারককে দেখতে অনুরোধ করেন সিবিআইয়ের কৌঁসুলী। তিনি বিচারকের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, কেস ডায়েরিতে কয়েকটি গোপন তথ্য রয়েছে। বিচারপতিকে তিনি ওই তথ্য দেখতে অনুরোধ করেন এবং বলেন, ওই তথ্য খোলা আদালতে প্রকাশ্যে বলা সম্ভব নয় তদন্তের স্বার্থে। সিবিআইয়ের কেস ডায়েরিতে থাকা ‘সিক্রেট ইনফরমেশন’ দেখে গোয়েন্দা সংস্থার দাবি মেনেই বিচারক ১৪ দিনের জেল হেফাজতের নির্দেশ দেন।
তবে সিবিআই সূত্রে খবর, এখন হেফাজতে না নিলেও, ক’দিন পরে শ্রীকান্তকে হেফাজতে নিয়ে জেরা করার অনুমতি চাইবেন তদন্তকারীরা।