State News

সে দিন ছিল লুচি-আলুর দম, বিকেলে ‘বিতাড়নের’ পরেই ডিনারে মুকুল-সব্যসাচী

লোকসভা নির্বাচনের আগে মুকুল রায়কে নিজের বাড়িতে ডেকে লুচি-আলুর দম খাইয়েছিলেন। রবিবার রাতে বিধাননগরের একটি ক্লাবে মুকুল রায়ের সঙ্গে নৈশভোজ সারেন সব্যসাচী।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জুলাই ২০১৯ ০০:২২
Share:

মুকুল রায়ের সঙ্গে নৈশভোজে সব্যসাচী দত্ত। —নিজস্ব চিত্র।

বিধাননগর পুরসভার মেয়র হিসাবে কার্যত অকেজো করে দেওয়া হয়েছে। দলবিরোধী কাজের জন্য তৃণমূল থেকে ছেঁটে ফেলার জল্পনাও তীব্রহয়েছে। এই আবহে দলের নিষেধ অগ্রাহ্য করে রবিবার রাতেই বিজেপি নেতা মুকুল রায়ের সঙ্গে বৈঠক করে আলাপ-আলোচনা সারলেন সব্যসাচী দত্ত। ফলে তাঁর বিজেপি-তে যোগদান নিয়ে গুঞ্জন আরও বেড়েছে। তবে এ নিয়ে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্যই করেননি দুই নেতা। এমনকি, ওই বৈঠকে কী নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে, তা-ও স্পষ্ট করে জানাননি মুকুল বা সব্যসাচী। দুই নেতারই দাবি, এটি শুধুমাত্র সৌজন্য সাক্ষাৎ।

Advertisement

রবিবার রাতে বিধাননগরের একটি ক্লাবে মুকুল রায়ের সঙ্গে নৈশভোজ সারেন সব্যসাচী। সেখানেই মুকুলের সঙ্গে তাঁর কথাবার্তা হয়। যদিও ওই বৈঠক নিয়ে সব্যসাচীর দাবি, ‘‘এই ক্লাবে কে আসবেন বা আসবেন না, তা আমার উপর নির্ভর করে না। এখানে অতিথি হিসাবে যে কেউ আসতে পারেন।’’ অন্য দিকে, সব্যসাচীর বিজেপি-তে যোগদান করা প্রসঙ্গে মুকুল রায়ের দাবি, ‘‘এমন কোন আবেদন আমার কাছে আসেনি। সব্যসাচীর থেকে এ ধরনের আবেদন এলে তা ভেবে দেখব।’’ তবে সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে তিনি যে সব্যসাচীকে পরামর্শ দিয়েছেন, তা জানিয়েছেন মুকুল। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি নেতা হিসাবে নয়, দাদা হিসাবেই সব্যসাচীকে পরামর্শ দিয়েছি।’’ যা শুনে পাশে বসা সব্যসাচীর দাবি, ‘‘যা ঘটছে তা মিডিয়াতে দেখেই হয়তো ওঁর মনে হয়েছে, আমি অসুবিধায় আছি।’’ পাশাপাশি তিনি মনে করিয়ে দিয়েছেন, মুকুল রায়ের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎ কেবলমাত্র সৌজন্যের খাতিরেই করা। এবং এ ধরনের সৌজন্যের প্রকাশ শুধুমাত্র তিনি নন, তাঁর দলের নেত্রীও করে থাকেন। তাঁর কথায়, ‘‘সৌজন্য বাঙালির চিরকালের ঐতিহ্য। প্রধানমন্ত্রীকেও মিষ্টি-পাঞ্জাবি পাঠান মুখ্যমন্ত্রী। এটাও সৌজন্য।’’

লোকসভা নির্বাচনের আগে মুকুল রায়কে নিজের বাড়িতে ডেকে লুচি-আলুর দম খাইয়েছেন। নির্বাচনের পরে বার বার বিতর্কিত মন্তব্য করে দলকে অস্বস্তিতে ফেলেছেন। গত শনিবার বিদ্যুৎ ভবনে এক বিক্ষোভে দলকে কার্যত হুঁশিয়ারিও দেন বিধাননগরের মেয়র সব্যসাচী দত্ত। সে সময় সব্যসাচী বলেছিলেন, ‘‘দলবিরোধী কথা বলছি মনে হলে আমাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হোক।’’ ওই মন্তব্য করে দলের শীর্ষ নেতৃত্বকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন সব্যসাচী। এর পর রবিবার বিধাননগর পুরসভার কাউন্সিলরদের নিয়ে তৃণমূল ভবনে বৈঠক করেন ফিরহাদ হাকিম। সূত্রের খবর, ওই বৈঠকে উপস্থিত অধিকাংশ কাউন্সিলরই মেয়র সব্যসাচী দত্তের বিরুদ্ধে মতপ্রকাশ করেন। বৈঠকে ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়কে পুরসভার কাজ দেখাশোনার ভার দেওয়া হয়েছে বলে তৃণমূল সূত্রে খবর। এবং এর ফলে মেয়র সব্যসাচীকে কার্যত অকেজো করে দেওয়া হল বলেই মত রাজনৈতিক মহলের।

Advertisement

আরও পড়ুন: সব্যসাচীকে অকেজো করে বিধাননগরের কাজ সামলাতে বলা হল ডেপুটি মেয়র তাপসকে

আরও পড়ুন: কাটমানির অভিযোগের জের, সেই প্রোমোটারের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা ঠুকলেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন

ঘটনাচক্রে, তৃণমূল ভবনের বৈঠকের পর এ দিন রাতেই মুকুল রায়ের সঙ্গে দেখা করেন সব্যসাচী। বিধাননগর পুরসভার সমস্ত কাজকর্মের ভার ডেপুটি মেয়রকে দেওয়ার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘এ নিয়ে দলের তরফে কোনও বার্তা, ফোন বা চিঠি আমার কাছে আসেনি।’’ মেয়র হিসাবে তাঁকে অকেজো করে দেওয়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘জল্পনার উপর ভিত্তি করে কোনও মন্তব্য করব না।’’

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও।সাবস্ক্রাইব করুনআমাদেরYouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন