গুরুঙ্গকে চ্যালেঞ্জ বিনয়ের

এ দিন সর্বদল বৈঠকে পাহাড়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রী উন্নয়নের ডালি সাজিয়ে দিয়েছেন। তাতে রাজ্যকে পুরোদস্তুর পাশে পেয়ে অনেকটাই চাঙ্গা বিনয় শিবির।

Advertisement

কৌশিক চৌধুরী

শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ২২ নভেম্বর ২০১৭ ০৩:০০
Share:

পিনটেল ভিলেজে সর্বদল বৈঠক শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে গোপন ডেরা থেকে অডিও বার্তায় দ্রুত দিল্লি যাওয়ার ঘোষণা করেন বিমল গুরুঙ্গ। পাহাড়বাসীকে শান্তি বজায় রাখার আবেদন ছাড়াও নিজেকে ‘অধ্যক্ষ’ বলে ঘোষণা করেন গুরুঙ্গ। মঙ্গলবার সেই সর্বদল বৈঠক শেষ হতেই গুরুঙ্গকে পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেন মোর্চার নব নিযুক্ত সভাপতি তথা জিটিএ প্রশাসনিক বোর্ডের চেয়ারম্যান বিনয় তামাঙ্গ। তাঁর কথায়, ‘‘জঙ্গলে লুকিয়ে থেকে থেকে ওঁর হয়তো শহর দেখার ইচ্ছা হয়েছে। ক্ষমতা থাকলে আর ভারতবাসী হলে উনি বাগডোগরা বিমানবন্দর দিয়ে দিল্লি গিয়ে দেখান। আমরা খবর পাচ্ছি, নেপাল দিয়ে উনি নাকি দিল্লি যাবেন। লুকিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন কেন! সামনে আসুন!’’

Advertisement

এ দিন সর্বদল বৈঠকে পাহাড়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রী উন্নয়নের ডালি সাজিয়ে দিয়েছেন। তাতে রাজ্যকে পুরোদস্তুর পাশে পেয়ে অনেকটাই চাঙ্গা বিনয় শিবির। মোর্চা সভাপতি বিনয়ের মন্তব্য, ‘‘ওঁর নামে তো ৯৩টি ফৌজদারি মামলা রয়েছে। একটি ইউএপিএ মামলা শুধুমাত্র সু্প্রিম কোর্টে স্বস্তি পেয়েছেন। বাকিগুলিতে কী হবে? আমরা আদালতের নির্দেশকে সম্মান করি।’’ এর পরেই অভিযোগ করে জানান, সুপ্রিম কোর্টে লড়াইয়ের জন্য আইনজীবীদের প্যানেলের ফি’র জন্য বিমল গুরুঙ্গ ২ কোটি টাকা খরচ করেছেন। ওই আইনজীবী দেশে সেরা শিল্পপতি, ব্যবসায়ীদের হয়ে আইনি লড়াই করেন। গুরুঙ্গ জঙ্গলে লুকিয়ে এত টাকা পাচ্ছেন কোথায়? কারা তাঁকে সাহায্য করছেন? পাহাড়বাসীকে জানতে হবে। বিনয়ের বক্তব্য, ‘‘বহু আন্দোলনে আমাদের ভাইবোনেরা কষ্ট করে আইনি লড়াই করছেন।’’ একই সঙ্গে তাঁর দাবি, ‘‘আমরা গুরুঙ্গের আয়কর ফাইল খতিয়ে দেখার দাবি জানাচ্ছি।’’

এ দিন দুপুর আড়াইটা নাগাদ গুরুঙ্গের অডিও বার্তা প্রকাশ্যে আসে। সাড়ে ৭ মিনিটের বার্তার সুপ্রিম কোর্টকে একাধিকবার ধন্যবাদ দিয়েছেন গুরুঙ্গ। তার পরেই বারবার ১৫ দিনের মধ্যে তিনি দিল্লি যাবেন বলেও জানান। আবার পাহাড়বাসী তাদের ‘অধ্যক্ষের’ জন্য মন্দির, মসজিদ, গির্জায় প্রার্থনা করার জন্য ধন্যবাদ জানান। তার পরে নিজেদের লক্ষ্যে পৌঁছতে গণতান্ত্রিক পথেই তিনি বরাবর থেকেছেন বলে দাবি করেন। তেমনই, পাহাড়বাসীকে সর্তক থাকার পরামর্শও দেন। মিছিল, সভায় বিনয়-অনীতেরা গোলমাল পাকিয়ে ‘পুলিশি তাণ্ডবের’ মুখে ফেলতে পারে বলেও গুরুঙ্গ আশঙ্কা প্রকাশ করেন।

Advertisement

সন্ধ্যায় সব শোনার পর মোর্চার নতুন সাধারণ সম্পাদক অনীত থাপা বলেন, ‘‘এখন উন্নয়নের সময়। আলাদা রাজ্যের জন্য বিশেষজ্ঞ দল গড়ে সমীক্ষা হবে। সেখানে জঙ্গলে বসে অডিও টেপ ছেড়ে প্রাসঙ্গিক থাকতে মরিয়া গুরুঙ্গ। পাহাড়বাসী তো ওকে ‘অডিও বাবা’ নাম দিয়েছেন। দেখা যাক, বাবা এর পর কী করেন!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন