বিনয় তামাঙ্গ। ছবি: সংগৃহীত
দিল্লি নয়, পাহাড়কে চেনা ছন্দে ফেরাতে তাঁরা নবান্নের দিকেই এখন তাকিয়ে। সোমবার কলকাতায় যাওয়ার আগে এই কথাই জানিয়ে গেলেন মোর্চার ‘নতুন মুখ’ বিনয় তামাঙ্গ। দলনেতা বিমল গুরুঙ্গ যে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন, তা সযত্নে এড়িয়ে বললেন, ‘‘পাহাড়ের মানুষ গোর্খাল্যান্ড চান। সেটা মাথায় রেখেই আমরা সব করছি। কিন্তু, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে মর্যাদা দিয়েই এগোতে হবে। তাই রাজ্যের ডাকে সাড়া দিয়ে যাচ্ছি।’’ তাঁর কথায়, ‘‘পাহাড়কে পুরানো ছন্দে ফেরাতে আলোচনায় বসাটা অত্যন্ত জরুরি। কারণ, পাহাড়ের সকলেই এখন নবান্নের দিকে তাকিয়ে।’’
আরও পড়ুন: ঋণের ভার বয়ে দেওয়া হচ্ছে ডিএ
ঘটনাচক্রে, গ্রেফতারি এড়াতে গোপন ডেরায় থাকলেও নবান্নের দিকে নজর বিমল গুরুঙ্গেরও। তাঁকে ছাড়াই পাহাড় নিয়ে আলোচনা ফলপ্রসূ হলে বিনয় যে সত্যিই পাহাড়ের ‘নতুন নায়ক’ হওয়ার পথে এক লাফে অনেকটাই এগোবেন, সেটা বুঝছেন গুরুঙ্গও। তাই অস্ত্র আমদানি মামলায় অভিযুক্ত ‘ফেরার’ সঞ্জয় থুলুংকে দিয়ে পাহাড়ের কিছু সংবাদমাধ্যমে বিবৃতি দিইয়েছেন তিনি। তাতে সঞ্জয়ের হুঁশিয়ারি, গোর্খাল্যান্ড ছাড়া অন্য বিষয়ে কথা হলে ‘ওয়াক আউট’ করতে হবে। না হলে পরিণাম ভাল হবে না।
গুরুঙ্গ শিবিরের এই হুঁশিয়ারির পরে স্পষ্ট, মোর্চার কট্টরপন্থী ও আলোচনাপন্থীদের মধ্যে ফাটল আরও চওড়া হয়েছে। যদিও আলোচনাপন্থীরা এ সবে ভয় পাচ্ছেন না। তাঁরা মনে করছেন, এর ফলে বৈঠকে সুবিধাই হবে। ওই ধরনের অস্থিরতা এড়ানোর জন্যই জিটিএ চুক্তির পর্যালোচনা বা পাহাড়ের জন্য আরও স্বায়ত্তশাসনের দাবির ব্যাপারে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক ডাকতে রাজ্যকে অনুরোধ করা যাবে। তাঁদের আশা, এ বার থেকে রাজ্যকে পাশে পাবেন তাঁরা।
কী ভাবে? এ দিন বিনয়কে বিমানবন্দরে পৌঁছে দিয়েছে সাদা পোশাকের পুলিশ। পাহারা থাকছে কলকাতাতেও। পাহাড়ে নেতাদের বাড়ির কাছে টহল দিচ্ছে পুলিশ। ষষ্ঠ তফসিল প্রাপ্তি চূড়ান্ত করে সুবাস ঘিসিঙ্গ পাহাড়ে ফিরতে পারেননি। পুলিশের সহযোগিতা পাননি তিনি। এ বার আলোচনা ফলপ্রসূ হলে কিন্তু বিনয়দের আগলে রাখার ইঙ্গিত দিয়েছে রাজ্য। মুখ্যমন্ত্রী সোমবারও বলেছেন, ‘‘পাহাড়ে শান্তি চাই।’’
এই অবস্থায় বিনয়কে সামনে রেখে এগোতে চাইছেন গুরুঙ্গ-বিরোধীপাহাড়ি নেতারা। বাবা-মায়ের প্রতি গুরুঙ্গের ব্যবহার ভুলতে পারেননি মন ঘিসিঙ্গ। বারবার অপমানের কথা এখনও মনে রয়েছে হরকাবাহাদুর ছেত্রীর। দাদা মদন তামাঙ্গের খুনে দোষীরা সাজা না পাওয়ায় দুঃখ রয়েছে অমর লামার। এই অলিখিত জোটই এখন গুরুঙ্গের নতুন কাঁটা।