ফাইল চিত্র।
তিনিই যে দলের পুরো দায়িত্ব নিতে চলেছেন, এক দিন আগে সে কথা সাংবাদিকদের জানিয়েছিলেন বিনয় তামাঙ্গ। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়ি জেলে বন্দি মোর্চা নেতা-কর্মীদের সঙ্গে দেখা করে নেতৃত্বের রাশ আরও জোরদার করার চেষ্টা করলেন তিনি। সেখানে ধৃত মোর্চা নেতা-কর্মীদের দ্রুত এবং নিঃশর্ত মুক্তির দাবি তুলে বুঝিয়ে দিলেন পাহাড়ের আস্থা অর্জন করতে তিনি এখন থেকেই সচেষ্ট হয়েছেন।
পাল্টা আক্রমণ করেন গুরুঙ্গও। এ দিন অডিও বার্তা দিয়ে ফের পাহাড়ে নিজের প্রভাব বজায় রাখার চেষ্টা করছেন মোর্চা সভাপতি। গুরুঙ্গের বার্তায় রয়েছে, ‘‘ত্রিপক্ষ বৈঠকের দিন ঘোষণা না হওয়া অবধি বন্ধ চলবে। কেউ জোর করে জনজীবন স্বাভাবিক করতে চাইলে পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যাবে।’’
কিন্তু এই হুমকির প্রভাবও যে কমছে, তা এ দিন পাহাড়ের পরিস্থিতি দেখে বোঝা গিয়েছে। তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ শান্তা ছেত্রী অনেক দিন পরে এ দিন কার্শিয়াঙে নিজের বাড়িতে গিয়েছেন। দার্জিলিং, কালিম্পং, কার্শিয়াং, মিরিকে বেশ কিছু দোকান নিজেরাই খুলেছেন ব্যবসায়ীরা। গাড়িও চলেছে। গোর্খ্যাল্যান্ড টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনে (জিটিএ) সহ অন্য সরকারি অফিসে সব মিলিয়ে হাজিরার হার ছিল প্রায় ৯০ শতাংশ। মোর্চার তরফে কার্শিয়াঙে মিছিল হলেও গোলমাল হয়নি। তবে মিছিল দেখে কিছু দোকানপাট বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। পরে তা খোলে। বন্ধ বিরোধীরা কোথাও জবরদস্তি করেননি। আবার মোর্চার আলোচনাপন্থীরাও দোকান খোলাতে জোরাজুরি করেননি। তাঁরা চাইছেন, পরিস্থিতি নিজে থেকে সহজ হোক।
তবে সন্ধ্যায় মিরিক পুরসভার তৃণমূলের চেয়ারম্যান লালবাহাদুর রাইয়ের গাড়িতে হামলার অভিযোগ উঠেছে। লালবাহাদুর অবশ্য গাড়িতে ছিলেন না। গুরুঙ্গপন্থীরা এই ঘটনায় নিজেদের দায় অস্বীকার করেছেন।
এই পরিস্থিতিতে বিনয় গুরুঙ্গের নাম না করে বলেছেন, ‘‘সবাই জানেন, কোন নেতা জনতার সঙ্গে রয়েছেন, কোন নেতা নেই৷ ওঁর সঙ্গে যদি জনগণ থাকলে তার মাঝে এসেই থাকা উচিত৷ আমরা যেমনটা রয়েছি৷ জঙ্গলে বা নদীতে বসে কাজ চলবে না৷’’ তবে বন্ধ তোলার ব্যাপারে তিনি যে ঘরে-বাইরে চাপে রয়েছেন, তা জানিয়েছেন তামাঙ্গ। তিনি বলেন, ‘‘বন্ধ তোলার ব্যাপারে আমার উপর রাজ্য সরকার ও জনতার—উভয়েরই চাপ রয়েছে৷ এখন রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা শুরু হয়েছে৷ আগামীদিনে কেন্দ্রের সঙ্গেও কথা হবে৷ এবং পাহাড় সমস্যার সমাধান করা হবে৷’’ তিনি আশা প্রকাশ করেন, যে হেতু সরকারি দফতরগুলিতে হাজিরার হার বেড়েছে তাই দু-তিনদিনের ভেতরেই সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে যাবে।