Local News

পাঁচ বছর পর নিখোঁজ ছেলের সন্ধান নিউটাউনে, বাকরুদ্ধ বীরভূমের বৃদ্ধ

ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বীরভূমের রাজগ্রামে বাড়ি হাসুর। হাসু বলেন, “গ্রামে ঠিক এরকম এক যুবক ছিল। ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে গ্রাম থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয়েছিল। মুরারই থানায় জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।”

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৮ ২০:০০
Share:

পরিবার ফিরে পাওয়া সেই যুবক। —নিজস্ব চিত্র

গত কয়েকদিন ধরেই নিউটাউনের বালিগড়ি গ্রামে ঘুরে বেড়াচ্ছিলেন এক যুবক।ছেঁড়া পোশাক, উদ্দেশ্যহীন চলাফেরা, অসংলগ্ন কথাবার্তা। সব মিলিয়ে বোঝাই যাচ্ছিল মানসিক ভারসাম্যহীন ওই যুবক। নিজের খেয়াল খুশি মতই ঘুরে বেড়াতেন। গ্রামের মানুষ মাঝে মাঝে খাবার-দাবারও দিচ্ছিলেন।

Advertisement

ওই গ্রামেই একটি বাড়িতে ভাড়া থাকেন হাসু সেখ। নিউটাউনে রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। কয়েকদিন ধরেই এই মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে খুঁটিয়ে নজর করছিলেন তিনি। হাসু বলেন,“ছেলেটিকে দেখে চেনা চেনা মনে হচ্ছিল। কিন্তু যা হয়, ভবঘুরের মত চেহারায় ঠিক ঠাওর করতে পারছিলাম না। ছেলেটাকে ডেকে কথা বলারও চেষ্টা করলাম। কথার টানটাও খুব চেনা লাগল।”

আর তার পরেই হঠাৎ নিজের গ্রামের এক যুবকের কথা মনে পড়ে যায় হাসুর। ঝাড়খণ্ড লাগোয়া বীরভূমের রাজগ্রামে বাড়ি হাসুর। হাসু বলেন, “গ্রামে ঠিক এরকম এক যুবক ছিল। ২০১৩ সালের নভেম্বর মাসে গ্রাম থেকে হঠাৎ উধাও হয়ে যায়। অনেক খোঁজাখুঁজি করা হয়েছিল। মুরারই থানায় জানানো হয়েছিল। কিন্তু কোনও খোঁজ পাওয়া যায়নি।” হাসু গ্রামের সেই যুবকের সঙ্গে মিল পান বালিগড়ির ওই নাম-পরিচয়হীন যুবকের।

Advertisement

আরও পড়ুন: স্টিকারে ঢাকা মেয়াদ উত্তীর্ণ ওষুধের তারিখ, নদিয়ায় খেয়ে অসু্স্থ শিশু

নিজের সন্দেহের কথা জানান পাড়ার আরও কয়েকজনকেও। খবর যায় ওই এলাকার তৃণমূল নেতা টুটুন গাজির কাছেও। তিনি উদ্যোগী হয়ে যুবককে ধরে তাঁর চুল-দাড়ি কাটিয়ে ভাল পোশাক পরানোর ব্যবস্থা করেন। আর সেই ছবি হাসু হোয়াটস অ্যাপ করে পাঠান নিজের গ্রামে এক পরিচিতর কাছে। সেই ছবির সূত্র ধরেই হাসুর গ্রামের লোকজন বালিগড়ির ওই যুবককে পাঁচ বছর ধরে নিখোঁজ মুরসলিন সেখ হিসেবে চিহ্নিত করেন। তারপরই খবর দেওয়া হয় মুরসলিনের বাবা-মাকে। ভিডিও কল করা হয়। তাঁরাও এক বার দেখেই চিনতে পারেন নিজেদের ছেলেকে।

রবিবার সকাল থেকে চলা এই গোটা প্রক্রিয়া শেষ পর্যন্ত পূর্ণতা পায় বিকেলে। বীরভূম থেকে ছুটে আসেন মুরসলিনের বাবা নইমুল এবং তাঁর ভাইয়েরা। পাঁচ বছর পর ছেলেকে খুঁজে পেয়ে কার্যত বাকরুদ্ধ বৃদ্ধ। বাড়ি থেকে এতদূরে এতদিন পরে যে ছেলেকে খুঁজে পাবেন, কোনওদিন আশাই করেননি নইমুল।

আরও পড়ুন: চালকের কেবিনে মানসিক রোগী, রানাঘাটে ট্রেনের ধাক্কা বাফারে

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন