লোকসৃষ্টি: কলকাতার পার্ক স্ট্রিটে বিশ্ব বাংলার একটি বিপণন কেন্দ্রে। ছবি: সুমন বল্লভ
অর্থনৈতিক বিচারে তাঁরা পিছিয়ে ঠিকই। তবে শিল্পসামগ্রী তৈরিতে নয়।
জঙ্গলমহলের হস্তশিল্পীদের তৈরি রকমারি জিনিসপত্র দেশ-বিদেশের ক্রেতাদের নজর কাড়তে শুরু করেছে। বিশ্ব বাংলা বিপণন কেন্দ্রগুলির হিসেব বলছে, মাত্র চার মাসের উদ্যোগে ওই অঞ্চলে তৈরি তিন লক্ষ টাকার সামগ্রী বিক্রি হয়েছে।
প্রশাসনের দাবি, পশ্চিম মেদিনীপুর, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া-সহ জঙ্গলমহলের প্রায় ১৫ জন শিল্পী দেড় বছরের কাজের বরাত পেয়েছেন। তার মধ্যে তিন মাসের কাজের অগ্রিম দেওয়া হয়েছে শিল্পীদের, যা নজিরবিহীন।
বাঁশ, বেত, ঘাস, কাঠ-সহ বিভিন্ন উপকরণ দিয়ে ঘর সাজানো এবং দৈনন্দিন জীবনে কাজে লাগার মতো হাতে তৈরি শিল্পসামগ্রী তৈরি করেন জঙ্গলমহলের আদিবাসীরা। এই সব পণ্য তো আছেই, নজর কেড়েছে পাথরের তৈরি কালো রঙের থালা, বাটি, গ্লাস, টেরাকোটাও। বিশ্ব বাংলার বিপণন কেন্দ্রগুলিতে এখন এই সব পণ্যের চাহিদাই বেশি। সেই জন্য আরও ৮০ থেকে ১০০ জন শিল্পীকে এই কাজের সঙ্গে পাকাপাকি ভাবে যুক্ত করার পরিকল্পনা রয়েছে।
বিশ্ব বাংলার মুখ্য উপদেষ্টা পার্থ কর জানান, যে-সব শিল্পী বরাত পাচ্ছেন, তাঁদের তৈরি শিল্পপণ্য বিপণন কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়ার জন্য যাবতীয় খরচ দেওয়া হচ্ছে। আর পণ্যের দাম সরাসরি চলে যাচ্ছে শিল্পীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। জঙ্গলমহলের পিছিয়ে থাকা আদিবাসী পরিবারগুলির আয় বাড়াতে তাদের তৈরি শিল্পদ্রব্য বিশ্ব বাংলার বিপণন কেন্দ্রে রাখার পরিকল্পনা হয়েছিল। সেই উদ্দেশ্য কিছুটা হলেও সফল, দাবি পার্থবাবুর।
এই মুহূর্তে পশ্চিমবঙ্গ, দিল্লি-সহ বিভিন্ন জায়গায় বিশ্ব বাংলার আটটি বিপণন কেন্দ্র রয়েছে। সেখানে বাংলার শিল্পীদের তৈরি বিভিন্ন ধরনের শাড়ি, লোকশিল্পীদের ব্যবহৃত যন্ত্র, হস্তশিল্পসামগ্রী, এমনকী নলেন গুড়ও রাখা হয়। বিপণন কেন্দ্রগুলিতে আদিবাসীদের তৈরি হস্তশিল্প রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই কাজ শুরু করেই ভাল সাড়া মিলছে, দাবি প্রশাসনের।
নবান্নের এক কর্তা জানান, আদিবাসী শিল্পীদের কাজে উৎসাহ দিতে যন্ত্র ব্যবহারের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। তা হলে অল্প সময়ে বেশি কাজ করতে পারবেন তাঁরা।