প্রতিবাদ: বসিরহাট-বাদুড়িয়া ও গোর্খাল্যান্ড নিয়ে বিজেপি সমর্থকদের মিছিল। সেন্ট্রাল অ্যাভিনিউয়ে। ছবি: বিশ্বনাথ বণিক।
বাদুড়িয়া-কাণ্ড নিয়ে রাজ্যপালের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রীর প্রকাশ্য সংঘাত বেধেছিল আগেই। রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীকে ‘বিজেপি-র লোক’ বলে তকমা দিয়েছিলেন রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী। শনিবার সেই রাজ্যপালের কাছে গিয়েই রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দাবি জানালেন বিজেপি-র রাজ্য নেতারা। দলের রাজ্য সম্পাদক প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমরা রাজ্যপালকে অনুরোধ করেছি, আপনি কেন্দ্র এবং রাষ্ট্রপতিকে বলুন, যাতে এ রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারি হয়।’’
রাজ্যপাল অবশ্য ইতিমধ্যেই বলেছেন, রাজ্য সরকার বাদুড়িয়া-কাণ্ডে যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তাতে তিনি সন্তুষ্ট। এই অবস্থায় রাজ্য বিজেপি-র দাবিকে তিনি কতটা গুরুত্ব দেবেন, রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন তা নিয়েও।
আরও পড়ুন: সোশ্যাল মিডিয়ায় পুলিশ কড়া, ফের গ্রেফতার
রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বিজেপির এই দাবিকে আমল দিতেই রাজি নন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘যে দল কেন্দ্রে ক্ষমতায় আছে, তারা যখন এমন অগণতান্ত্রিক দাবি করে, তখন তার উত্তর দিতেও প্রবৃত্তি হয় না। শুধু এটুকুই বলব, সাহস থাকলে করে দেখান। আর ৩৫৬ জারির ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ এক বার পড়ে নিন।’’ এ দিনই বসিরহাটের পরিস্থিতি সরেজমিনে দেখতে তিন সাংসদ ওম মাথুর, সত্যপাল সিংহ ও মীনাক্ষি লেখিকে রাজ্যে পাঠান বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। ওম দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের বিশ্বস্ত নেতা ও উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র ও হরিয়ানায় ভোটের প্রচারে তাঁকে কাজে লাগিয়ে লাভ হয়েছিল। তাঁকেই এ বার পশ্চিমবঙ্গে পাঠালেন অমিত।
বিজেপি-র অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইচ্ছা করে বাদুড়িয়া-বসিরহাটের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করছেন না। যারা অশান্তি পাকাচ্ছে, তাদের গ্রেফতার করা হচ্ছে না। এই প্রেক্ষিতেই রাজ্যে ৩৫৬ ধারা জারির আর্জি জানিয়ে এ দিন রাজভবনে রাজ্যপালের কাছে দাবিপত্র দেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ-সহ রাজ্য নেতৃত্ব। সেখান থেকে বেরিয়ে রাজভবনে যাওয়ার আগে একই দাবিতে এ দিন দলের রাজ্য দফতর থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল করে বিজেপি। দিলীপবাবু, প্রাক্তন বিধায়ক শমীক ভট্টাচার্য, রাজ্যসভা সাংসদ রূপা গঙ্গোপাধ্যায়, দলীয় সম্পাদক লকেট চট্টোপাধ্যায়-সহ বিজেপি-র নেতা-কর্মীরা মিছিলের শেষে সমাবেশ করে মুখ্যমন্ত্রীর কুশপুতুলও পোড়ান।
দিল্লি থেকে আসা বিজেপি-র কেন্দ্রীয় প্রতিনিধিরাও বসিরহাটের দিকে রওনা দিলে শুক্রবারের মতোই এ দিনও পুলিশের কাছে বাধা পান। মধ্যমগ্রামের গ্রিন পার্কের কাছে তাঁদের আটকায় বিধাননগর কমিশনারেটের পুলিশ। উভয়পক্ষের বাগবিতণ্ডা হয়। পরে পুলিশ তাঁদের গ্রেফতার করে নিয়ে যায় এবং ছেড়ে দেয়।