২০১৭ সালের ৪ জুলাই মুম্বইয়ে গয়না শিল্প সংক্রান্ত আলোচনাসভায় অমিত মিত্র ও মেহুল চোক্সী। ছবি: শিল্প দফতরের ওয়েবসাইট।
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দাঁড়ানো শিল্পপতিদের ভিড়ে পিএনবি কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত নীরব মোদী— দাভোসের এই ছবি হইহই করে ছড়িয়েছে। নীরবের মামা তথা ওই কেলেঙ্কারিতে আর এক অভিযুক্ত মেহুল চোক্সীকে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে ‘মেহুলভাই’ বলে মোদীর সম্বোধনের ভিডিও ছড়িয়েছে উল্কার গতিতে। কিন্তু ‘পিকচার’ তখনও বাকি ছিল! রবিবার রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ পাল্টা যে ছবি প্রকাশ করলেন, তাতে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের পাশে ‘মেহুলভাই’! জানুয়ারির গোড়াতেই যিনি দেশ ছেড়েছেন বলে দাবি গোয়েন্দাদের।
বিজেপির প্রকাশিত ছবির সত্যতা আনন্দবাজারের পক্ষে যাচাই করা সম্ভব হয়নি। তবে রাজ্যের শিল্প উন্নয়ন নিগমের ওয়েবসাইটে ‘মিডিয়া’ বিভাগে এ দিন রাত পর্যন্ত ছবিটি দেখা গিয়েছে। অমিতবাবুকে ফোনে এবং এসএমএস পাঠিয়ে প্রতিক্রিয়া জানতে চাওয়া হলেও জবাব মেলেনি। তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘‘মুড়ি-মিছরির এক দর হল নাকি? বিজেপি শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছে। পলাতক শিল্পপতির সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ছবি আর এই ছবি এক নয়।’’ সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র বলেন, ‘‘এ বারের শিল্প সম্মেলনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এক পাশে অম্বানী, অন্য পাশে আদানিকে নিয়ে বসেছিলেন। ওঁরাই তো আসল। ওঁদের আত্মীয়ের সঙ্গে শিল্পমন্ত্রীর ছবি আর নতুন কী!’’
নীরব-নরেন্দ্র ছবি নিয়ে দিলীপের দাবি, ‘‘দাভোসে নীরবকে প্রধানমন্ত্রী আমন্ত্রণ জানাননি। উনি ঢুকে পড়েছিলেন। এখানে শিল্পমন্ত্রী তো মেহুলকে রাজ্যে ডেকে আনতে মুম্বই যান!’’ এক তৃণমূল নেতার জবাব, ‘‘দাভোসের আগেই তো নীরব সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে নালিশ করা হয়েছিল। কিন্তু রাজ্যের অর্থমন্ত্রীর পক্ষে তো ওই শিল্পপতির গোপন কারবার জানা অসম্ভব। একটি শিল্পসংস্থার প্রধান হিসেবেই তাঁকে ডাকা হয়েছিল।’’ ওই তৃণমূল নেতা বলেন, ‘‘দিলীপ ঘোষ খামোকাই এটা নিয়ে বাজে রাজনীতি করছেন।’’
আরও পড়ুন: ৫০০ কোটি ঋণ নিয়ে বেপাত্তা রোটোম্যাকের মালিক
শিল্প উন্নয়ন নিগমের ওয়েবসাইট বলছে, গয়না ও রত্ন সংক্রান্ত লগ্নি টানার সেই সম্মেলনে শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন মেহুল। সঙ্গে ছিলেন তাঁর সংস্থার সিইও সঞ্জীব অগ্রবাল-সহ অনেকে। পরে শিল্পমন্ত্রীর সঙ্গে যৌথ সাংবাদিক বৈঠকও করেন মেহুল। সেই ছবিও আছে সরকারি ওয়েবসাইটে।