BJP

অনুমতি ছাড়াই ‘যাত্রা’ শুরুর বিকল্প পথ ঘোষণা করে দিল বিজেপি

সোমবারই হুগলি জেলার আরামবাগে দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে আইন অমান্য কর্মসূচি পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার সভা হবে ঝাড়গ্রামে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৭ ডিসেম্বর ২০১৮ ২১:০৩
Share:

অনুমতি ছাড়াই রথযাত্রার ঘোষণা বিজেপির।

অনুমতি মিললে ভাল, না হলে অনুমতি ছাড়াই যাত্রা, প্রয়োজনে পায়ে হেঁটে। জানিয়ে দিল বিজেপি। রাজ্য প্রশাসনের কাছ থেকে ‘গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা’র অনুমতি আদায়ের জন্য সোমবারই ফের কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছে রাজ্য বিজেপি। যত ক্ষণ না অনুমতি মিলছে, তত ক্ষণ জেলায় জেলায় আইন অমান্য চলবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। পায়ে হেঁটে যাত্রার জন্যও যে প্রস্তুত হচ্ছে গেরুয়া শিবির, সে ইঙ্গিতও দেওয়া হয়েছে এ দিন।

Advertisement

রথযাত্রার অনুমতি নাকচ করার চিঠি শনিবার রাতে নবান্ন থেকে বিজেপি দফতরে পৌঁছয়। তার পরেই কলকাতা থেকে দিল্লি পর্যন্ত নড়ে বসেছে সংগঠন। শনিবার রাতেই সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে বলা হয়েছিল, যাত্রা বেরোবেই। হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার কথাও সে দিনই ঘোষণা করা হয়েছিল। কথা মতোই রাজ্য সরকারের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে বিজেপি সোমবার সকালে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়। রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে সোমবার সকালেই সে কথা জানান। যাত্রার বিষয়ে কথা বলতে এবং বাংলার রাজনৈতিক পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে অমিত শাহ যে দিল্লিতে মঙ্গলবার বৈঠকে বসছেন, তা-ও জানান দিলীপ। বিকেলে ফের সাংবাদিক সম্মেলন ডাকা হয়। সেখানেই রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু জানিয়ে দেন, রাজ্য সরকার অনুমতি নিয়ে টানাপড়েন চালিয়ে গেলে বিকল্প পথও তৈরি।

২২, ২৪ ও ২৬ ডিসেম্বর গণতন্ত্র বাঁচাও যাত্রা শুরু করতে চায় বিজেপি। ২২ তারিখ কোচবিহার, ২৪ তারিখ সাগর এবং ২৬ তারিখ তারাপীঠ থেকে যাত্রা শুরু করার পরিকল্পনা করা হয়েছে। এই কর্মসূচির জন্য অনুমতি চেয়েই মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টে সওয়াল করবেন বিজেপির কৌঁসুলিরা। তবে বিজেপির যাত্রা বন্ধ করার দাবি তুলে কলকাতা হাইকোর্টে এ দিন একটি জনস্বার্থ মামলাও দায়ের হয়েছে। প্রথমে উৎসবের মরশুম, পরে মাধ্যমিক পরীক্ষা— এই রকম একটা সময়ে বিজেপি-কে যাত্রা করতে দেওয়া উচিত নয় বলে দাবি করে মামলাটি দায়ের হয়েছে। জনস্বার্থ মামলা প্রসঙ্গে সায়ন্তন বসু বলেন, ‘‘অ্যাডভোকেট জেনারেল হাইকোর্টে যে কথাগুলো বলেছেন, জনস্বার্থ মামলাতেও সেই সব কথাই বলা হয়েছে। একটা রাজনৈতিক কর্মসূচি পালিত হলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়বে, অশান্তি শুরু হয়ে যাবে, পুলিশ-প্রশাসন নিরাপত্তা দিতে পারবে না— এই যদি পরিস্থিতি হয়, তা হলে তো পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলেই ধরে নিতে হবে।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীর শপথ নিয়েই মধ্যপ্রদেশে কৃষি ঋণ মকুব করলেন কমল নাথ

যত দিন না আইনি জটিলতা মিটছে এবং প্রশাসনের কাছ থেকে যাত্রার অনুমতি মিলছে, তত দিন পর্যন্ত জেলায় জেলায় বিক্ষোভ সমাবেশ বা আইন অমান্য চলবে বলে সায়ন্তন বসু এ দিন জানিয়েছেন। যে সব এলাকায় সভার অনুমতি মিলছে, সেখানে সভা, যেখানে অনুমতি মিলছে না, সেখানে আইন অমান্য— ঘোষণা করেছে বিজেপি।

সোমবারই হুগলি জেলার আরামবাগে দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে আইন অমান্য কর্মসূচি পালিত হয়েছে। মঙ্গলবার সভা হবে ঝাড়গ্রামে। ১৮ তারিখ বারাসত ও বনগাঁয় সভার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল, মেলেনি। তাই ১৮ তারিখ ওই দুই শহরে আইন অমান্য করবে বিজেপি। ১৯ তারিখ হাওড়ায় আইন অমান্য। ২০ ডিসেম্বর উলুবেড়িয়ায় সভা। ২১ তারিখ সভা হওয়ার কথা রয়েছে আলিপুরদুয়ারে। অনুমতি না মিললে আইন অমান্যের পথে হাঁটবেন বিজেপি নেতৃত্ব। ২৩ ডিসেম্বর পুরুলিয়ায় বড়সড় সমাবেশের আয়োজন হচ্ছে। ২৭ ডিসেম্বর সভা হবে বাঁকুড়ায়। সায়ন্তন জানিয়েছেন, আদালতের হস্তক্ষেপে যদি ২২, ২৪ ও ২৬ ডিসেম্বর তিনটি জায়গা থেকে যাত্রা শুরুর অনুমতি মিলে যায়, তা হলেও এই সভাগুলি হবে। তবে আইন অমান্য কর্মসূচিগুলি সে ক্ষেত্রে বাতিল করা হবে।

আর অনুমতি যদি শেষ পর্যন্ত ঝুলে থাকে? প্রশাসন যদি নানা অছিলায় ২২, ২৪, ২৬ ডিসেম্বরে যাত্রা শুরুর পরিকল্পনাও আটকে দেয়? তা হলে কী হবে? বিজেপি জানিয়েছে, সে ক্ষেত্রে বিকল্প পথও ভেবে রাখা হয়েছে। রাজ্যের প্রতিটি ব্লকে বিজেপি পদযাত্রা বার করবে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহ থেকে। পদযাত্রায় নানা স্তরের নেতৃত্ব অংশ নেবেন। বাসে করে যাত্রার ফাঁকে ফাঁকে যেমন নরেন্দ্র মোদী এবং অমিত শাহের সভা আয়োজন করার পরিকল্পনা হয়েছিল, পদযাত্রার ফাঁকে ফাঁকেও তেমনই হবে বলে বিজেপি এ দিন জানিয়েছে।

আরও পড়ুন: রাফাল আঁচে পুড়ল সংসদ, স্বাধিকার ভঙ্গের নোটিস শাসক-বিরোধী উভয় পক্ষের​

কিন্তু পদযাত্রার অনুমতিও যদি আটকে দেয় রাজ্য প্রশাসন? রাজ্য বিজেপির সাধারণ সম্পাদক জানিয়েছেন, ‘‘আমরা পদযাত্রার জন্য অনুমতি চাইবই না। অনুমতি ছাড়াই করব। যে ভাবে আইন জেলায় জেলায় অমান্য শুরু করে দিয়েছি, পদযাত্রাও সে ভাবেই হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন