BJP

রাজ্যে বিজেপির হাতিয়ার ‘হিন্দুত্ব’

তৃণমূল অবশ্য বিজেপির অভিযোগপত্রকে গুরুত্বই দিচ্ছে না।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ মার্চ ২০২০ ০৫:৩৮
Share:

প্রতীকী ছবি।

তৃণমূলের ‘দিদিকে বলো’র মোকাবিলা করতে গিয়ে খোলাখুলি সাম্প্রদায়িক তাস খেলতে নেমে পড়ল বিজেপি। আসন্ন পুরভোট এবং আগামী বছরের বিধানসভা ভোটকে মাথায় রেখে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের বিরুদ্ধে ১০ দফা বিষয় নিয়ে একটি অভিযোগপত্র প্রকাশ করেছে তারা। যার একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে মমতা কতটা ‘হিন্দু বিরোধী’, তার ব্যাখ্যা। ‘আর নয় অন্যায়’ শীর্ষক ওই অভিযোগপত্র নিয়ে আগামী শুক্রবার থেকেই বাড়ি বাড়ি যাবেন বিজেপি নেতারা। রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বিজেপির প্রচারের এই ধরন থেকেই স্পষ্ট— সাম্প্রদায়িক মেরুকরণকেই ভোট জয়ের প্রধান কৌশল করছে তারা। তা করতে গিয়ে বিজেপির অভিযোগপত্রে কোথাও কোথাও তথ্যবিকৃতিও করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

Advertisement

তৃণমূল অবশ্য বিজেপির অভিযোগপত্রকে গুরুত্বই দিচ্ছে না। তৃণমূলের মহাসচিব তথা রাজ্যের মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা অভিযোগ, ‘‘বিজেপিই তো আর্থিক এবং সামাজিক অন্যায়ের প্রতীক! ‘আর নয় অন্যায়’ কথাটা তো ওদের নিজেদের দিকে আঙুল তুলে বলা উচিত!’’

বিজেপি-র ওই চার পাতার প্রচারপত্রে তিনটি অনুচ্ছেদ জুড়ে মমতাকে মুসলিম তোষণকারী হিসাবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। তার মধ্যে ‘হিন্দু বিরোধী মমতা’ নামক অনুচ্ছেদে লেখা হয়েছে, ‘১৯৪৭ সালে দেশকে ভাগ করা হয়েছিল এই ভেবে যে পশ্চিমবাংলা বাঙালি হিন্দুদের ভূমি হবে। কিন্তু বাংলায় বামফ্রন্ট আর তৃণমূলের রাজ্য সরকার এত বছর ধরে বাঙালি হিন্দুদের অত্যাচার করে গেল’। পর্যবেক্ষকদের মতে, এই ধরনের কথা বুঝিয়ে দেয়, বিজেপি বাংলাকে কার্যত ‘হিন্দুভূমি’ করতে চায়। ওই অনুচ্ছেদেই লেখা হয়েছে, ‘উর্দু ভাষাকে জোর করে পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার প্রতিবাদ করায় রায়গঞ্জের একটি স্কুলে নির্মম ভাবে দু’জন পড়ুয়াকে গুলি করে হত্যা করা হয়’। যদিও তথ্য বলছে, রায়গঞ্জের সংশ্লিষ্ট স্কুল উর্দু এবং সংস্কৃত শিক্ষকের শূন্য পদের তথ্য জমা দেয় স্কুলের জেলা পরিদর্শকের কাছে। তার পর স্কুল সার্ভিস কমিশন নিয়ম মেনে পরীক্ষা এবং ইন্টারভিউয়ের মধ্য দিয়ে ওই স্কুলে এক জন উর্দু এবং এক জন সংস্কৃত শিক্ষক পাঠায়। তাঁদের যোগদান ঘিরে গোলমাল বাধে।

Advertisement

বিজেপির অভিযোগপত্রে অন্য দু’টি অনুচ্ছেদে ‘শরণার্থী বিরোধী’ এবং ‘সন্ত্রাস প্রেমী’ হিসাবে দেখানো হয়েছে মমতাকে। মুখ্যমন্ত্রীকে ‘শরণার্থী বিরোধী’ বলতে গিয়ে তাঁর সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ) বিরোধী অবস্থানকে নিশানা করেছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রীর ‘সন্ত্রাস প্রেম’ বোঝাতে গিয়েও আইনশৃঙ্খলাগত সমস্যাকে ‘সাম্প্রদায়িক’ হিসাবে তুলে ধরেছে বিজেপি।

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থবাবু বলেন, ‘‘দেশ জুড়ে বিজেপি যে পরিমাণ অন্যায় করছে, তাতে এ রাজ্যের মানুষ ওদের জায়গা দেবেন না। তাই মেরুকরণের ধুয়ো তুলে এই নিন্দনীয় রাজনীতি করা ছাড়া ওদের পথ নেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন