মোদীর হাতে গালার পুতুল তুলে দিয়েছেন বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি।
উপহারটি দেখতে ছোট, কিন্তু আসলে অনেক বড়। তা যেন গোটা বাংলার প্রতিনিধি!
পূর্ব মেদিনীপুরের ঐতিহ্যের গালার পুতুল হাতে পেয়ে নাকি এই মন্তব্য করেছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার ওড়িশার পথে কলাইকুণ্ডা বিমান ঘাঁটিতে নেমেছিলেন মোদী। তখনই গালার তৈরি ছোটখাটো একটা গণেশ প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন বিজেপির ঝাড়গ্রাম জেলা সভাপতি সুখময় শতপথী। সুখময় বলেন, ‘‘ওই গণেশ পেয়ে প্রধানমন্ত্রী খুব খুশি হয়েছেন। খুঁটিয়ে পুতুলটি দেখেই উনি আমাকে ও কথা বলেন।’’
সুখময় নিজেও শিল্পী। তিনি ঝাড়গ্রামের এক শিল্পশিক্ষাকেন্দ্রের কর্ণধার। সেই কেন্দ্রের আমন্ত্রণেই কিছুদিন আগে অরণ্যশহরে এই গালার পুতুল তৈরির কর্মশালায় এসেছিলেন পূর্ব মেদিনীপুরের পটাশপুরের গালার পুতুলের শিল্পী বৃন্দাবন চন্দ। এই গণেশও তাঁরই হাতে গড়া। তাঁর সৃষ্টি প্রধানমন্ত্রীর হাতে পৌঁছেছে জেনে উচ্ছ্বসিত বৃন্দাবন। শিল্পী বললেন, ‘‘আমি ভাবতেই পারিনি আমার কাজ এত দূরে পৌঁছবে।’’
প্রথমে মাটির তাল থেকে তৈরি করা হয় এই পুতুল। পরে আগুনে পুড়িয়ে পোক্ত করা হয়। গায়ে লাগানো হয় গালায় মেশানো নানা রঙের পোঁচ। তারপর নানা রঙের গালার সুতো জড়িয়ে ফুটিয়ে তোলা হয় নকশা। পটাশপুরের খড়ুইয়ের পশ্চিমসাঁই গ্রামের বাসিন্দা বৃন্দাবনের দাবি, রাজ্যে এখন একমাত্র তিনিই এমন পুতুল তৈরি করেন। তাঁর কথায়, ‘‘আগে এই এলাকার অনেক ঘরেই গালার পুতুল তৈরির চল ছিল। এখন আর কেউই করে না।’’
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর হাতে এই গালার পুতুলই।
বৃন্দাবন জানালেন, আগে উইঢিবির মাটির তাল থেকে পুতুল হত। পরে লাক্ষার দাম অনেক বাড়ায় অনেকেই এই পুতুল তৈরি ছেড়ে দেন। তিনি বলেন, ‘‘কেবল পুতুল বানিয়ে সংসার চালাতে অনেক কষ্ট। তবুও হাল ছাড়িনি। এখনও এই পুতুল আঁকড়ে বেঁচে আছি। শিল্পী মৃণাল মণ্ডলের তত্ত্বাবধানে বিভিন্ন কর্মশালাতেও যাই।’’
সুখময় জানান, প্রধানমন্ত্রীও জানতে চেয়েছেন, এই পুকুলের ইতিবৃত্ত। সুখময় বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি বৃন্দাবনবাবু এক বিলুপ্তপ্রায় শিল্পকর্মকে বাঁচিয়ে রাখতে লড়ছেন। আমরাও যতটা পারি সাহায্য করছি। মোদীজি তাতে সাধুবাদ জানিয়েছেন।’’