BJP

Arjun Singh: অর্জুনকে সামলাতে মরিয়া বিজেপি, ডাক দিল্লিতে, শনিবার রাতেই বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষের সঙ্গে বৈঠক

কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শনিবার রাতেই পীযূষ ও অর্জুনকে মুখোমুখি বসার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মতো দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন অর্জুন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২২ ১৪:০৮
Share:

পীযূশের বিরুদ্ধেই বেশি অভিযোগ অর্জুনের। ফাইল চিত্র

একনাগাড়ে কেন্দ্রীয় সরকারের নীতির বিরুদ্ধে তোপ দেগে চলা ব্যারাকপুরের সাংসদ অর্জুন সিংহকে সামলাতে মরিয়া বিজেপি নেতৃত্ব। পাট শিল্পের সমস্যা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই তিনি এমন মন্তব্য করে চলেছেন, যাতে তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বৃদ্ধিরও ‘ইঙ্গিত’ ছিল। এই নিয়ে ‘অস্বস্তি’ বেড়েই চলেছিল বিজেপির। সামাল দিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শনিবারই অর্জুনকে দিল্লিতে তলব করলেন। বাংলার স্বার্থ দেখে অর্জুন বেশি সরব হয়েছেন কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী পীযূষ গয়ালের বিরুদ্ধে। বিজেপি সূত্রে খবর, পরিস্থিতি সামাল দিতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব শনিবার রাতেই পীযূষ ও অর্জুনকে মুখোমুখি বসার নির্দেশ দিয়েছেন। সেই মতো দিল্লির উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন অর্জুন। জানা গিয়েছে, শনিবার রাতে দিল্লিতে পীযূষের বাড়িতে হবে বৈঠক।

দিল্লি রওনা হওয়ার আগে অর্জুন জানান, তাঁর কাছে বস্ত্রমন্ত্রীর ফোন এসেছিল। এই তলব কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের উদ্যোগে কি না, তা তাঁর জানা নেই। যদিও বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের নির্দেশেই এই জরুরি বৈঠকের ব্যবস্থা করা হয়েছে। অর্জুন বলেন, ‘‘রাজ্যের পাটশিল্প রক্ষা করাটা আমাদের কাছে মরণবাঁচন বিষয়। রাজ্যের বড় পরিচয় পাটশিল্প। সেই শিল্পই যদি না থাকে এবং তার জন্য কেন্দ্রের বিজেপি সরকার যদি দায়ী হয়, তবে মানুষ কেন আমাদের সঙ্গে থাকবে?’’ তিনি বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে চলে যেতে পারেন, এমন ইঙ্গিত মিলতেই কি এত তাড়াতাড়ি পদক্ষেপ করল দল? এই প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে অর্জুন বলেন, ‘‘ওই ব্যাপারে আমি কিছু বলব না। আমি আমার এলাকার মানুষের সমস্যার কথা বলেছি। আমার রাজ্যের সমস্যা নিয়ে কথা বলছি।’’

Advertisement

সম্প্রতি রাজ্যের পাটচাষি ও চটকল কর্মীদের দুরবস্থার নিরসন চেয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে সঙ্ঘাতে জড়িয়েছেন অর্জুন। তোপ দাগেন পীযূষের বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ ছিল, চটকলগুলি পাটচাষি ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে কেনা পণ্যের দামের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়ায় প্রবল সঙ্কটে পড়ে গিয়েছেন এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত অসংখ্য মানুষ। হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি জানান, কাঁচা পাটের দামের ঊর্ধ্বসীমা বেঁধে দেওয়ার সিদ্ধান্ত না বদলালে কেন্দ্রীয় নীতির বিরুদ্ধে মিছিল ও আন্দোলন করবেন তিনি। এখানেই থামেননি অর্জুন। শুক্রবার বাংলার জুটমিলগুলির ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি লেখেন। অর্জুনের বক্তব্য ছিল, ‘আমার নির্বাচনী কেন্দ্র ব্যারাকপুরে ২০টি জুটমিল রয়েছে। পাটশিল্পের সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছেন লক্ষ লক্ষ পাটচাষি। তাঁদের ভবিষ্যৎ বাঁচাতে আপনার হস্তক্ষেপ চাইছি।’ মমতা ছাড়াও ওড়িশা, অসম ও বিহারের মুখ্যমন্ত্রীকেও চিঠি দিয়েছেন তিনি। তবে বিজেপি বেশি ‘অস্বস্তি’তে পড়ে যায় মমতাকে চিঠি লেখার জন্য। সম্প্রতি রাজ্যে তৃণমূলের সন্ত্রাস চলছে, এই অভিযোগ তুলে টানা আন্দোলনের পথে রাজ্য বিজেপি। মে মাসের প্রথম সপ্তাহেই রাজ্যে আসছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। এই পরিস্থিতিতে অর্জুনের একের পর এক মন্তব্য বিপাকে ফেলছিল দলকে। সঙ্গে বাড়ছিল তৃণমূলের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার জল্পনা। যা আরও বাড়িয়ে দেয় মমতাকে পাঠানো ওই চিঠি। এর পরেই অর্জুনের সঙ্গে পীযূষের বৈঠকের উদ্যোগ নেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। অর্জুন জানিয়েছেন, এই বৈঠকে সমাধানের পথ পাওয়া যাবে বলে তিনি আশাবাদী।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন