Lok Sabha Election 2024

শাহ-নড্ডার ডাকে সকলে এলেও নেই ‘কাবুলিওয়ালা’! কোর কমিটির বৈঠক ভুলে দূরেই পদ্মের ‘জাত গোখরো’

বাংলায় বিজেপির তরফে লোকসভা নির্বাচনের চূড়ান্ত প্রস্তুতি শুরু হয়ে যাচ্ছে মঙ্গলবারই। একসঙ্গে এই প্রথম বার কলকাতায় বৈঠক নিতে এসেছেন দলের দুই শীর্ষনেতা। কিন্তু সেখানে নেই দলের তারকা মুখ।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:১৭
Share:

(বাঁ দিক থেকে) মিঠুন চক্রবর্তী, অমিত শাহ এবং জেপি নড্ডা। —ফাইল চিত্র।

রাজ্য বিজেপির ২৪ জনের কোর কমিটির সঙ্গে মঙ্গলবার দুপুরে বৈঠকে বসার কথা কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ এবং সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নড্ডার। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, কমিটির ২৩ সদস্যই হাজির হচ্ছেন বৈঠকে। আসছেন না শুধু মিঠুন চক্রবর্তী।

Advertisement

ঘটনাচক্রে, মিঠুন অভিনীত ছবি ‘কাবুলিওয়ালা’ সম্প্রতি মুক্তি পেয়েছে। সমাজমাধ্যমে ছবিটির প্রশংসা করছেন অনেকে। অনেকে নামভূমিকায় মিঠুনের অভিনয়কেও দরাজ শংসাপত্র দিচ্ছেন। যদিও মুক্তির অব্যবহিত আগে এই ছবির প্রচারে মিঠুনকে দেখা যায়নি। সেই সংক্রান্ত কাজ তিনি কয়েক মাস আগেই সেরে রেখেছিলেন। অতীতে তপন সিংহের নির্দেশনায় ‘কাবুলিওয়ালা’ ছবির এই চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন ছবি বিশ্বাস। দুই অভিনেতাকে নিয়ে দর্শক, সমালোচকরা তুলনাও টানছেন।

বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্য জুড়ে প্রচারের পর মাঝেমাঝেই দলের সাংগঠনিক বৈঠকে হাজির হতে দেখা গিয়েছে মিঠুনকে। কথা দিয়েছিলেন, লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি পর্বের শুরু থেকেই দলের প্রচারে ঝাঁপিয়ে পড়বেন। কিন্তু লোকসভা ভোটের চূড়ান্ত প্রস্তুতির বৈঠকেই থাকছেন না তিনি। দলের নেতারা বলছেন, মাসখানেক আগেই পারিবারিক সফরে আমেরিকায় গিয়েছেন মিঠুন। কবে ফিরবেন জানা নেই। শাহ-নড্ডার বৈঠকের খবর কি তাঁকে দেওয়া হয়েছিল? সে উত্তর অবশ্য পাওয়া যায়নি।

Advertisement

২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার তুঙ্গে থাকাকালীন ৭ মার্চ ব্রিগেডে সভা করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই মঞ্চেই বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নেন তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভা সাংসদ মিঠুন। প্রথম বক্তৃতায় নিজেকে ‘জাত গোখরো’ বলে বর্ণনা করেছিলেন। ভোটের প্রচারে অংশও নিয়েছিলেন পুরোদস্তুর। এর পরে ২০২২ সালে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে জেলায় জেলায় সাংগঠনিক বৈঠকেও তাঁকে দেখা যায়। কিন্তু পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রচারে তাঁকে বিশেষ দেখা যায়নি।

মিঠুন বিজেপিতে এসেই অবশ্য কোনও দায়িত্ব পাননি। ২০২২ সালের পুজোর পরে রাজ্য বিজেপির কোর কমিটি গঠন করেন নড্ডা। দেখা যায়, সুকান্ত মজুমদার, শুভেন্দু অধিকারী, দিলীপ ঘোষের সঙ্গে সেখানে রয়েছে মিঠুনের নামও। ২৪ জনের কমিটিতে ২০ জন সাধারণ সদস্য এবং চার জনকে ‘বিশেষ আমন্ত্রিত’ হিসাবে রাখা হয়। তাঁরা হলেন বাংলার দায়িত্বপ্রাপ্ত সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক সুনীল বনসল, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক মঙ্গল পাণ্ডে এবং দুই সহকারী পর্যবেক্ষক অমিত মালবীয় এবং আশা লাকড়া। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার নিউ টাউনের হোটেল বৈঠকে সকলেই হাজির হচ্ছেন। শুধু মিঠুন নেই।

তবে রাজ্য রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় আলোড়ন ফেলেছিলেন মিঠুন, যখন গত বছর পুজোর পরে কলকাতায় বিজেপি রাজ্য দফতরে বসে তিনি বলেছিলেন, ‘‘৩৮ জন তৃণমূল বিধায়ক আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলছেন। তার মধ্যে আমার সঙ্গে ডিরেক্টলি (সরাসরি) ২১ জন।’’ এই সংখ্যা কিসের হিসাবে? বিজেপি নেতৃত্ব জানেন? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘‘আবার বলছি, আবার বলছি, আবার বলছি! ব্যাক সাপোর্ট না থাকলে আমি কোনও কথা বলি না।’’ কিন্তু তাঁদের নাম কী? মিঠুন বলেন, ‘‘তৃণমূলের সবাই চোর নন। যাঁরা ভাল, তাঁদেরই একটা অংশ বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।’’ তাঁর ‘ঘনিষ্ঠ’ তৃণমূল বিধায়ক এবং নেতাদের কোনও তালিকা কি নেতৃত্বকে দিয়েছেন? মিঠুনের জবাব ছিল, ‘‘এত স্পষ্ট করে বলব না। আমি প্রোটোকল মেনে কথা বলি। শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছি। তাঁদের নির্দেশে আমি এখানে এসে এই কথা বলছি।’’

সেই ভবিষ্যদ্বাণী মেলেনি এখনও পর্যন্ত। বরং বিজেপি থেকে বিধায়কদের তৃণমূলে যাওয়া বেড়েছে। মিঠুনের ‘শীর্ষ নেতৃত্ব’ মঙ্গলবার কলকাতায়। আর মিঠুন কলকাতা থেকে ১২,৮১৭ কিলোমিটার দূরের নিউ জার্সিতে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন