মুকুল রায়।
শাসকদলের মন্ত্রীদের একাংশ, প্রায় সকল বিরোধী নেতা-নেত্রী, এমনকি সাংবাদিকদের টেলিফোনে নির্বিচারে সরকার আড়ি পাতছে বলে অভিযোগ করলেন বিজেপি নেতা মুকুল রায়। তাঁর আরও অভিযোগ, পুলিশ এখন দলদাসে পরিণত হয়েছে। জেলার পুলিশ সুপাররাই এখন তৃণমূলের জেলা সভাপতি। থানার ওসি’রা ব্লক সভাপতির কাজ করছেন।
পুলিশের প্রতি তাঁর হুঁশিয়ারি, গণতন্ত্রে এ জিনিস চলতে পারে না। এখন যারা বিরোধী তারাই ভবিষ্যতের ক্ষমতাসীন দল হবে। পুলিশ যেন সেটা মনে রেখেই কাজ করে। স্মরণ করিয়ে দেন দিল্লি আদালতে আড়িপাতা কাণ্ডে তিনি ইতিমধ্যেই মামলা করেছেন।
এ নিয়ে কোনও প্রতিক্রিয়া দিতে চাননি নবান্নের কর্তারা। এক শীর্ষ কর্তা শুধু বলেন, ‘‘যা বলার সরকার আদালতে বলবে।’’
শনিবার দলের রাজ্য সভাপতি মুকুল রায়, কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয়র পাশে বসে মুকুল বলেন, ‘‘আমার, দিলীপ ঘোষের, বাবুল সুপ্রিয়র, আপনাদের সকলের ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, এ নিয়ে মামলায় রাজ্য সরকার ৯ জন কৌঁসুলি দাঁড় করিয়েছিল। তাঁদের মধ্যে একজনকে মোটা টাকার পারিশ্রমিক দিয়ে আনা হয়েছিল। শুনানির দিন বিচারপতি সরকারি আইনজীবীদের বলেন, আপনারা শুধু এক লাইন লিখে দিন, ফোনে আড়ি পাতা হচ্ছে না। তাঁরা তা লিখে দিতে পারেননি। বিচারপতি এক মাসের মধ্যে সরকার ও টেলিফোন কোম্পানিগুলিকে জবাবি হলফনামা দিতে বলেছেন।
মুকুলের আরও অভিযোগ, ‘‘এক জন প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তিত্বকে ডেকে জানতে চাওয়া হয়েছে, তাঁর ফোনের টাওয়ার কেন কৈলাস বিজয়বর্গীয় এবং আমার ফোনের টাওয়ারের সঙ্গে মিলে যাচ্ছে। ফোনে যে আড়ি পাতা হয়, এই ঘটনাই তার প্রমাণ!’’
উলুবেড়িয়ার কুলগাছিয়ায় দলীয় সভায় মুকুল এ দিন হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘চ্যালেঞ্জ নিয়ে বলছি, বাংলায় সরকার ও তার আমলারা বশংবদ দাস। পশ্চিমবঙ্গে ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে। রাস্তায় নেমে যে ভাবে তাঁরা কথা বলছেন, মনে হচ্ছে, এসপি-রা তৃণমূলের জেলা সভাপতি, ওসি-রা ব্লক সভাপতি। যে সব পুলিশ অফিসার দালালি করছেন, তাঁরা জেনে রাখবেন, গণতন্ত্রে আজ যে বিরোধী, কাল সে ক্ষমতায়। আজ যে ক্ষমতায়, কাল সে বিরোধী।’’ লগ্নি টানার বিদেশ সফরে মুখ্যমন্ত্রী কেন রাজ্য পুলিশের এডিজি(আইন-শৃঙ্খলা) অনুজ শর্মাকে নিয়ে গিয়েছিলেন, সে প্রশ্নও এ দিন তুলেছেন মুকুল। তাঁর আরও অভিযোগ, সিআইডি-র প্রধান যিনি হয়েছেন তাঁর বিরুদ্ধেও অধস্তনদের কুপ্রস্তাব দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তিনি এখন অন্যের বিরুদ্ধে তদন্ত করছেন। যদিও দুই পুলিশ কর্তার কেউই কোনও মন্তব্য করতে চাননি।