Suvendu Adhikari

ডিসেম্বরে কী হবে তৃণমূল সরকারের? খোলসা করলেন শুভেন্দু, ‘জয় শ্রীরাম’ ধ্বনি পদ্ম-বৈঠকে

ডিসেম্বরের পরে রাজ্য সরকার থাকবে না বলে গেরুয়া শিবির কয়েক মাস ধরেই দাবি করে আসছে। কিন্তু ঠিক কী হতে চলেছে তা খোলসা করেননি কেউ। বৃহস্পতিবার বললেন শুভেন্দু।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২২ ১৮:০১
Share:

বৃহস্পতিবার দলীয় কর্মসূচিতে শুভেন্দু ও সুকান্ত। ছবি: পিটিআই

বেশ কিছু দিন ধরেই বিজেপির পক্ষে দাবি করা হচ্ছে, আগামী ডিসেম্বরের পরে রাজ্যে তৃণমূল সরকার আর থাকবে না। শুরুটা করেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। গত অগস্টে তিনি প্রথম বার বলেন, ‘‘ডিসেম্বর মাসে এই সরকার কার্যত আর থাকবে না। ২০২৪ সালে বিধানসভা ও লোকসভার নির্বাচন একসঙ্গে হবে। দেখতে থাকুন।’’ এর পরে বিজেপির রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার থেকে শুরু করে গেরুয়া শিবিরের একের পর এক নেতা ‘ডিসেম্বর তত্ত্ব’ শোনাতে শুরু করেন। কিন্তু স্পষ্ট ভাবে তার অর্থ বলেননি কেউই। বিজেপি কর্মীদের মধ্যে তো বটেই নেতাদের মধ্যেও নানা জল্পনা ছিল। বৃহস্পতিবার সেই ধোঁয়াশা খোলসা করলেন শুভেন্দু। আর যে প্রেক্ষাগৃহে তিনি এই মন্তব্য করলেন, সেখানে তাঁর বক্তব্যের মাঝেমাঝেই জমা হওয়া বিজেপি নেতারা ‘জয় শ্রীরাম’ স্লোগান তোলেন।

Advertisement

সদ্যই রাজ্য বিজেপির সব শাখা সংগঠনগুলি নতুন করে সাজানো হয়েছে। এর পরে বৃহস্পতিবার সাতটি মোর্চার রাজ্য নেতৃত্বকে নিয়ে একটি সাংগঠনিক সভা হয় বিধাননগরে পূর্বাঞ্চলীয় সংস্কৃতি কেন্দ্র (ইজ়েডসিসি)-এর প্রেক্ষাগৃহে। সেখানে বক্তব্য রাখতে গিয়েই আগামী ডিসেম্বরে তৃণমূল সরকারের কী হবে তার ব্যাখ্যা দেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘আমরা জোর গলায় বলেছিলাম পশ্চিমবঙ্গে ডিসেম্বর মাসের পরে এই সরকারটা সরকার হিসাবে থাকবে না। লেম ডাক সরকার হবে।’’ ইংরেজি ‘লেম ডাক’ শব্দের বাংলা করলে দাঁড়ায় ‘অসহায়’, ‘অক্ষম’ বা ‘অভাগা’। তিনি এমন কেন বলছেন তার ব্যাখ্যাও দেন শুভেন্দু। সেই সঙ্গে দাবি করেন এই সরকার যে দুর্বল হয়ে পড়েছে তার নমুনাও ইতিমধ্যে দেখা যাচ্ছে।

শুভেন্দু বলেন, ‘‘আপনারা দেখেছেন, ২০১৪ সালের প্রাথমিক টেট চাকরিপ্রার্থীরা করুণাময়ীর সামনে লাগাতার অনশন, অবস্থান ইত্যাদি করছেন। আপনারা দেখেছেন, পশ্চিমবঙ্গ সরকার ইতিমধ্যেই একটা লেম ডাক সরকার হয়ে গিয়েছে। নইলে যে সরকারের মালিক বলেন, ‘কথায় কথায় আদালত হস্তক্ষেপ করে আমাদের কাজ করতে দিচ্ছে না’ তাদেরই উলটপুরাণ। সরকার চলে গিয়েছে আদালতে এঁদেরকে (বিক্ষোভকারীদের) তোলার জন্য।’’ সরকার যে দুর্বল হয়ে পড়েছে সেই দাবি করে শুভেন্দু আরও বলেন, ‘‘যে সরকারের ক্ষমতা থাকে না, যে সরকার আন্দোলনকে ভয় পায়, সেই সরকারই আদালতে যায়। তাদের হাতে ক্ষমতা, পুলিশ, আইন থাকা সত্ত্বেও তারা গিয়েছে আদালতে এঁদেরকে (বিক্ষোভকারীদের) তোলার জন্য। তাই ডিসেম্বরের আগেই দুর্বল সরকার।’’

Advertisement

বর্তমান রাজ্য সরকারের সঙ্গে বাম জমানার শেষ দিকের তুলনাও করেন শুভেন্দু। তিনি বলেন, ‘‘এটা আমরা বাম আমলেও দেখেছিলাম। ২০০৭ সালের ১৪ মার্চে নন্দীগ্রামে গণহত্যার পরে বুদ্ধবাবুর (প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য) কোনও সিদ্ধান্ত কেউ মানত না। ঠিক একই ভাবে আদালতে যাওয়ার মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয়েছে, এই সরকারটি অত্যন্ত দুর্বল সরকারে পরিণত হয়েছে।’’

বিজেপির বৃহস্পতিবারের বৈঠকে সুকান্ত, শুভেন্দু ছাড়াও হাজির ছিলেন প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ, রাজ্যের সহ-পর্যবেক্ষক তথা রাঁচীর মেয়র আশা লাকড়া। সকলেই আগামী দিনে কী ভাবে বিভিন্ন মোর্চা একসঙ্গে কাজ করবে তার পরিকল্পনা তুলে ধরেন। বিজেপি সূত্রে খবর, এই বৈঠকের অন্যতম আলোচ্য বিষয় ছিল কী ভাবে সব মোর্চার মধ্যে সমন্বয় রেখে চলা যায়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন