Suvendu Adhikari & Abhishek Benaerjee

অভিষেকের কেন্দ্রে ভোটার তালিকায় কারচুপি! আরও অভিযোগ জানিয়ে শুভেন্দুর চিঠি নির্বাচন কমিশনকে

শুভেন্দুর নেতৃত্বাধীন বিজেপির প্রতিনিধি দলের অভিযোগ, অনেক জায়গাতেই তাদের নেতাকর্মীদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ সত্ত্বেও কমিশন পদক্ষেপ করেনি বলে দাবি বিজেপির।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৬:৪৭
Share:

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (বাঁ দিকে) এবং শুভেন্দু অধিকারী। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।

লোকসভা ভোটের জন্য চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের পরেও কারচুপির অভিযোগ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ রাজ্য বিজেপি। শুক্রবার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নেতৃত্বে কলকাতায় মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক আরিজ আফতাবের সঙ্গে দেখা করে বিজেপির প্রতিনিধি দল। একটি স্মারকলিপিও জমা দেওয়া হয়েছে। বিজেপির মূল অভিযোগ, অনেক জায়গাতেই বিজেপির নেতাকর্মীদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে আবার তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের ভোটার তালিকা নিয়েই বেশি অভিযোগ শুভেন্দুদের।

Advertisement

প্রসঙ্গত, গত ২২ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন। সাধারণত চূড়ান্ত তালিকা প্রতি বছর প্রকাশিত হয় ৫ জানুয়ারি। এ বছর তা বাড়িয়ে করা হয়েছিল ২২ জানুয়ারি। কমিশন সূত্রের বক্তব্য, সংশোধনে আরও সময় দেওয়ার জন্য এই সময়সীমা বাড়ানো হয়েছিল। কিন্তু এর পরেও ভোটার তালিকায় অনেক ত্রুটি রয়েছে বলে কমিশনকে জানিয়েছেন শুভেন্দুরা। দাবি করা হয়েছে, চূড়ান্ত ভোটার তালিকায় অনেক ভ্রান্তি রয়েছে। অনেক ভোটারের নামই নেই। আবার জাল ভোটারের নাম রয়ে গিয়েছে।

ওই চিঠিতে উদাহরণ হিসাবে দক্ষিণ ২৪ পরগনার ডায়মন্ড হারবার কেন্দ্রের উল্লেখ করা হয়েছে। দাবি করা হয়েছে ফলতা বিধানসভা এলাকায় বিজেপির সাংগঠনিক জেলার অনেক পদাধিকারীর নামও বাদ দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘদিনের ভোটারদের নাম বাদ দেওয়া ছাড়াও এক বুথের বাসিন্দার নাম অন্য বুথ এলাকায় করে দেওয়া হয়েছে। প্রসঙ্গত, আগেও ভোটার তালিকায় কারচুপি হতে পারে জানিয়ে কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল বিজেপি। সেই সব অভিযোগ নিয়ে কমিশন পদক্ষেপ করেনি বলে দাবি করে নতুন করে এক দিনের জন্য শুনানির আর্জি জানিয়েছে বিজেপি।

Advertisement

শুক্রবার ডায়মন্ড হারবার আসন এলাকায় বিজেপি করেন, অথচ ভোটার তালিকায় নাম নেই, এমনদের কয়েক জনকে নিয়ে আসেন শুভেন্দুরা। রাজ্য নেতৃত্বের তরফে তিনি ছাড়াও ছিলেন জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় এবং শিশির বাজোরিয়া। পরে সাংবাদিক বৈঠক করে শুভেন্দু বলেন, ‘‘এটা হিমশৈলের চূড়া মাত্র। চোর বিডিওগুলো এই নোংরা কাজের সাথে যুক্ত। অনেক রিটার্নিং অফিসার ও মহকুমাশাসকও এই অপকর্মে জড়িত। মৌখিক সমর্থন দিয়েছেন অনেক জেলাশাসক। এ বারের ভোটার তালিকায় যে ভাবে সংগঠিত চুরি হয়েছে, সেটা ভূভারতে কখনও হয়নি।’’ শুভেন্দুর আরও বক্তব্য, ‘‘কেন্দ্রের তরফে বলা হয়েছিল, যদি কোনও মৃতের নাম থেকে যায়, কোনও চুরি হয় তালিকায়, তার দায় যাবে জেলাশাসকের উপরে। তার পরেও কোনও পরিবর্তন নেই। আমরা দাবি করেছি যাঁদের নাম বাদ পড়েছে, তাঁদের নাম আবার নথিভুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে।’’

এ ছাড়াও কমিশনের কাছে তিনটি দাবি জানিয়েছে বিজেপি। চিঠিতে বলা হয়েছে, বারাসত লোকসভা এলাকায় বাংলাদেশি নাগরিকদের নাম ভোটার তালিকায় ঢোকানোর কথা বলেছিলেন স্থানীয় তৃণমূলনেত্রী রত্না বিশ্বাস। এ নিয়ে কমিশনে অভিযোগ জানানো হলেও কোনও পদক্ষেপ এখনও পর্যন্ত করা হয়নি। এ ছাড়াও কমিশনে বিজেপির দাবি, নির্বাচন কমিশনের চোখে ধুলো দিতে রাজ্যের ৭৯ জন আইপিএস বা ডব্লুপিএস পর্যায়ের এবং ২৮৫ জন ইন্সপেক্টর পর্যায়ের পুলিশ অফিসারের দায়িত্ব রদবদল করা হয়েছে নির্বাচনী আচরণবিধি কার্যকরের আগে আগে। একই সঙ্গে বিজেপির অভিযোগ, রাজ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে সরাসরি তৃণমূলের সঙ্গে যুক্তরা কর্মরত রয়েছেন। নির্বাচনের সময়ে তাঁরা তৃণমূলের চোখ ও কান হিসাবে কাজ করতে পারে। এ বিষয়ে কমিশন যাতে অবিলম্বে পদক্ষেপ করে, সে দাবিও জানানো হয়েছে বিজেপির তরফে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন