পুরুলিয়ার দুই দলীয় কর্মীর রহস্যমৃত্যু নিয়ে তৃণমূলকে কোণঠাসা করতে চাইছে বিজেপি। দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ শনিবার টুইট করে বলেন, ‘মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সম্পূর্ণ ব্যর্থ’। একই সুরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর এ দিন কলকাতা প্রেস ক্লাবে বলেন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গে হত্যার রাজনীতি আমদানি হয়েছে।’’ নবান্ন অবশ্য ইতিমধ্যেই পুরুলিয়ার দুই মৃত্যু নিয়ে প্রাথমিক ভাবে সিআইডিকে অনুসন্ধান করার নির্দেশ দিয়েছে। সরানো হয়েছে জেলার এসপি-কে।
কিন্তু বিজেপির শীর্ষনেতাদের এই ধরনের প্রতিক্রিয়ায় রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়েছে গুঞ্জন। অনেকেরই প্রশ্ন, বিজেপি কি আইনি পথে সিবিআই তদন্তের দিকে এগোনোর চেষ্টা করবে? এ দিনই সেই দাবি তুলেছেন দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ।
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য পাল্টা জানিয়ে দেন, ‘‘এই রাজ্যকে গুজরাত, উত্তরপ্রদেশ বা রাজস্থান ভাবলে বিজেপি সভাপতি ভুল করবেন। সেখানে কী ধরনের নারকীয় হত্যাকাণ্ড ঘটেছে, আমরা জানি।’’ তাঁর আরও বক্তব্য, ‘‘যে কোনও মৃত্যুই দুঃখের। আমরাও চাই, পূর্ণাঙ্গ তদন্ত হোক। আসলে বিজেপি নেতাদের মাথা খারাপ হয়ে গিয়েছে। তাই ওঁদের নেতারাই রোজ মারব-কাটব-জ্বালিয়ে দেব বলে হুমকি দিচ্ছেন। মমতার পশ্চিমবঙ্গে ওই সব উস্কানি দিয়ে কোনও লাভ হবে না।’’
বলরামপুরের ঘটনায় তৃণমূল ও রাজ্য প্রশাসনকে কাঠগড়ায় তুলেছে কংগ্রেস ও সিপিএম। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, ‘‘বিজেপির সঙ্গে আমাদের মতাদর্শগত পার্থক্য আছে। তবে এই দু’টোই রাজনৈতিক খুন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই রাজ্যকে বিরোধীশূন্য করার চেষ্টা চলছে। দলের যুব সভাপতির হুমকির পরই দু’টো খুন।’’ বিজেপির কৈলাস বিজয়বর্গীয়ও এ দিন টুইট করে সে দিকে ইঙ্গিত করেছেন। সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তী অবশ্য বলেন, ‘‘কোন দলের, তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ হল দুই যুবক খুন হয়েছেন।’’
এ বারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে পুরুলিয়ায় তৃণমূলের সঙ্গে সমান টক্কর দিয়েছে বিজেপি। বেশি সংখ্যায় গ্রাম পঞ্চায়েত তাদের দখলে এসেছে। খোদ বলরামপুরেই তৃণমূলের জেলা পরিষদের সভাধিপতি হেরেছেন বিজেপির কাছে। ফলে গোটা রাজ্যেই বলরামপুরের রহস্যময় দুই মৃত্যুর ঘটনাকে তুলে ধরতে তৎপর বিজেপি। রাজ্য বিজেপির একাধিক নেতা ইতিমধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছেছেন।