রথ নিয়ে বিজেপি ও প্রশাসনের বৈঠক আজ

প্রশাসন বুধবার বিজেপির রাজ্য দফতরে চিঠি পাঠিয়ে দলের তিন নেতাকে বৈঠকে ডেকেছে। চিঠি দেওয়া হয়েছে সেই তিন নেতার নামে, যাঁদের মধ্যে দু’জনকে নিয়ে আগে আপত্তি জানিয়েছিল প্রশাসন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৫৪
Share:

রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ। —ফাইল চিত্র।

রথযাত্রা নিয়ে আজ, বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৫টায় লালবাজারে প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন রাজ্য বিজেপির তিন প্রতিনিধি। দু’পক্ষই ‘সমঝোতা’র রূপরেখা নিয়ে বৈঠকে আসছে। প্রশাসন সূত্রের খবর, রথযাত্রার প্রস্তাবিত পথে কোথাও সাম্প্রদায়িক উত্তেজনার আশঙ্কা থাকলে তা বদলাতে বলা হবে বিজেপিকে। পক্ষান্তরে, বিজেপি সূত্রের খবর, প্রশাসনের প্রস্তাব ‘যুক্তিসঙ্গত’ মনে হলে তারাও তা মেনে নেবে।

Advertisement

প্রশাসন বুধবার বিজেপির রাজ্য দফতরে চিঠি পাঠিয়ে দলের তিন নেতাকে বৈঠকে ডেকেছে। চিঠি দেওয়া হয়েছে সেই তিন নেতার নামে, যাঁদের মধ্যে দু’জনকে নিয়ে আগে আপত্তি জানিয়েছিল প্রশাসন। জল গড়ায় আদালতে। ওই তিন জনের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন মুখ্যসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব এবং রাজ্য পুলিশের ডিজি। তবে ওই তিন জনের মধ্যে এক জনের সঙ্গে নবান্নে বৈঠক করতে তীব্র আপত্তি রয়েছে প্রশাসনের শীর্ষ মহলের। তাই ‘নিরপেক্ষ’ জায়গা হিসেবে লালবাজারকে বাছা হয়েছে বলে সূত্রের খবর।

সকালে কলকাতায় পৌঁছনোর কথা দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক এবং কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের। গত রবিবার ডিজি-র সঙ্গে বৈঠক হতে পারে, এই আশায় কলকাতায় এসেছিলেন তিনি। লালবাজারের বৈঠকে তিনিও যেতে আগ্রহী। সে ক্ষেত্রে আদালতের নির্দেশ মানতে তিন সদস্যের মধ্যে এক জনকে বদলাতে হবে। রাজ্য প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্তা বলেন, ‘‘বিজেপি নতুন করে কী প্রস্তাব দেয়, সেটাই দেখার। ওদের প্রস্তাব পেয়ে যাত্রার পথ ও পরিকল্পনা পুলিশ খতিয়ে দেখবে। কোথাও অশান্তির আশঙ্কা থাকলে তা কোর্ট ও বিজেপিকে জানানো হবে।’’ নবান্নের এক কর্তা জানান, বিজেপির প্রস্তাবিত যাত্রাপথে কোথাও যাতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি না হয়, সেটা দেখা প্রশাসনের কাজ। রাজ্যের প্রতিনিধিরা সেটাই দেখবে। বিজেপির এক নেতা বলেন, ‘‘আমাদের যাত্রাপথে ৪২টি লোকসভা কেন্দ্রকে ছোঁয়া এবং ৩৬টি বড় জনসভা— এই দু’টো প্রশাসন মানলেই তাদের প্রস্তাবে রাজি হব।’’

Advertisement

যাত্রাপথে ৩৬টি বড় জনসভা ও ১২২টি ছোট সভারও পরিকল্পনা করেছিল বিজেপি। তাতে সাম্প্রদায়িক উত্তেজনা তৈরি হতে পারে বলে নবান্নে রিপোর্ট দিয়েছিলেন গোয়েন্দা-প্রধান সিদ্ধিনাথ গুপ্তা। তৃণমূল জানিয়েছিল, বিজেপির রথযাত্রার পাল্টা তারা ‘পবিত্র’ যাত্রা করবে। মামলার জেরে বিজেপির রথযাত্রা স্থগিত হওয়ায় তৃণমূলও পাল্টা কর্মসূচি করেনি। নবান্নের খবর, বিজেপির রথযাত্রা ঠেকাতে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চের পর্যবেক্ষণের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যেতে চেয়েছিল রাজ্য। কিন্তু কয়েক জন বিশিষ্ট আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে পিছিয়ে আসে তারা। রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়া ঠিক হবে না বলে মত দেন অনেক আইনজীবী। এর পরেই সরকার বিজেপির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে বৈঠকে বসতে সায় দিয়েছে।

বৃহস্পতিবারেই দিল্লিতে বৈঠক ডেকেছেন সর্বভারতীয় বিজেপি নেতৃত্ব। সব রাজ্য শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের ডাকা হয়েছে। দলের সভাপতি অমিত শাহ ও সর্বভারতীয় সংগঠন সম্পাদক রামলালের বৈঠকে থাকার কথা। রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘এটি পূর্ব নির্ধারিত বৈঠক। দলের সাংগঠনিক বিষয় এবং লোকসভা নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে রিপোর্ট পেশ করতে হবে।’’ সূত্রের খবর, পাঁচ রাজ্যে ভোটে ভরাডুবির পরে, লোকসভা ভোটের আগে বাড়তি সতর্কতা কী হতে পারে, তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে ওই বৈঠকে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন