বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। — ফাইল চিত্র।
বিপর্যস্ত উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চল পরিদর্শন এবং ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতে সোমবার সকালে শিলিগুড়ি পৌঁছোলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি শমীক ভট্টাচার্য। সকাল ৯টা নাগাদ বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছোন তিনি। তাঁর উত্তরবঙ্গ সফরে সঙ্গী দার্জিলিঙের সাংসদ রাজু বিস্তা, জলপাইগুড়ির সাংসদ জয়ন্ত রায়, উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন মুর্মু প্রমুখ। এ ছাড়া, শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ, মাটিগাড়া-নকশালবাড়ির বিধায়ক আনন্দময় বর্মণ, ফালাকাটার বিধায়ক দীপক বর্মণও রয়েছেন।
সোমবার সকালের উড়ানে বাগডোগরা বিমানবন্দরে পৌঁছোন শমীক। শমীককে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে যান উত্তরবঙ্গের নেতারাও। তাঁদের সঙ্গেই বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা ঘুরে দেখবেন শমীক। উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকার পরিস্থিতি তদারকি করে দেখবেন তাঁরা। অন্য দিকে, বিমানবন্দর থেকে বেরিয়েই রাজ্যের শাসকদল ও প্রশাসনকে আক্রমণ করেছেন শমীক। ফের উত্তরবঙ্গের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগও শোনা গিয়েছে তাঁর মুখে। শমীক বলেন, ‘‘দক্ষিণবঙ্গের কিছু মানুষ, নেতা ও আমলা ডুয়ার্সে আসেন লুট করতে। আপনারা খোঁজ নিয়ে দেখুন, ডুয়ার্সের কত জমি কার নামে রেজিস্ট্রি হয়েছে। এখানকার নদী থেকে অবৈধ ভাবে বালি আর বোল্ডার তুলে নদীর গতিপথ বদলে দেওয়া হয়েছে, জঙ্গল কেটে সাফ করে দেওয়া হয়েছে। ১৪ বছর ধরে লাগাতার উত্তরবঙ্গের প্রতি বঞ্চনা চলছে!’’ পাশাপাশি, উত্তরবঙ্গ যখন বিপর্যস্ত, সেই একই সময়ে কলকাতায় কার্নিভাল করা নিয়েও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সমালোচনা করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি।
উল্লেখ্য, রবিবারই বিজেপির সমস্ত জনপ্রতিনিধি ও কর্মীদের অবিলম্বে উত্তরবঙ্গের দুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানো ও সাধ্যমতো সহযোগিতা করার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। বাড়ি বাড়ি গিয়ে কী কী সাহায্যের প্রয়োজন, তা জানতে চাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল স্থানীয় নেতৃবৃন্দকে। বিশেষত, উত্তরের যে জেলাগুলি তেমন ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি, সেই জেলাগুলির নেতাদের অন্যান্য জেলায় কর্মী ও ত্রাণ পাঠিয়ে, অর্থসাহায্য করে কিংবা সম্ভব হলে নিজে গিয়ে সাহায্য করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সেই মতো রবিবার থেকেই নিজ নিজ এলাকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে শুরু করেছেন এলাকার বিজেপি নেতৃত্ব। রবিবারই সিকিমে আটকে পড়া বাঙালি পর্যটকদের দ্রুত ফেরানোর জন্য সিকিমের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করেন বিজেপি সাংসদ বিপ্লব দেব। সন্ধ্যা থেকে কালচিনির বিধায়ক বিশাল লামা, আলিপুরদুয়ারের সাংসদ মনোজ টিগ্গা প্রমুখও ত্রাণ বিলি এবং উদ্ধারকাজের অগ্রগতির উপর নজর রাখতে শুরু করেন। তা ছাড়া, সোমবার সকালে বিপর্যস্ত এলাকাগুলি পরিদর্শনে গিয়েছেন উত্তর মালদহের সাংসদ খগেন।
অন্য দিকে, ইতিমধ্যে বাগডোগরার বিমান ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কলকাতা বিমানবন্দরে তিনি জানান, সোমবারই নাগরকাটার দিকে যাবেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থ। মঙ্গলবার মুখ্যমন্ত্রী মিরিকের দিকে যাবেন। দার্জিলিঙের বিপর্যয়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মিরিক। সবচেয়ে বেশি মৃত্যুও সেখান থেকেই। মিরিকের দিকেও যত দূর সম্ভব যাবেন তাঁরা। ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলবেন।