পশিচমবঙ্গের দায়িত্ব নেওয়ার পরে বুধবার কলকাতায় প্রথম বার বিজেপি দফতরে এসে কৈলাস বিজয়বর্গীয়র দাবি— আগামী বছর বিধানসভা ভোটে তৃণমূলকে হারানোর ক্ষমতা বিজেপির রয়েছে। তিনি বলেন, ‘‘২০১৬ সালে এ রাজ্যে তিনটি বিরোধী শক্তিকে হারিয়ে আমরাই ক্ষমতা দখল করব।’’
মঙ্গলবার এ রাজ্যে এসে ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে পূর্বাঞ্চল থেকে আরও বেশি সংখ্যক আসন লাভের লক্ষ্যে দলীয় নেতাদের প্রস্তুতি নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ। তাঁর ওই বক্তব্য থেকে দলের একাংশের ধারণা হয়, তা হলে হয়তো বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব ২০১৬ সালে এ রাজ্যের বিধানসভা ভোট নিয়ে চিন্তিত নন। সভাপতির এই বক্তব্যে ভুল বার্তা যাচ্ছে বুঝে বিজেপি নেতারা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে সক্রিয় হয়ে উঠলেন তাঁদের আগামী কর্মসূচি জানাতে।
কৈলাসের পাশাপাশি এ দিন দফায় দফায় সাংবাদিক সম্মেলন করে এ রাজ্যে দলের অন্যতম দায়িত্বপ্রাপ্ত কেন্দ্রীয় নেতা সিদ্ধার্থনাথ সিংহও বোঝানোর চেষ্টা করেন, তাঁরা আগামী বছরের বিধানসভা ভোটেও জোরালো ভাবে লড়াইয়ে থাকবেন। কোনও ভাবেই ছাড় দেওয়া হবে না রাজ্যের শাসক দলকে। এবং ওই ভোটে এ রাজ্যে দলের ভাল ফল হবে বলেও আশাবাদী সিদ্ধার্থনাথ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘অমিত শাহ বলেছেন, ২০১৪-র লোকসভা ভোটে দিল্লি দখলের যাত্রা লখনউ থেকে শুরু হয়েছিল। আর ২০১৯-এ সেই যাত্রা বাংলা থেকে শুরু হবে।’’ সিদ্ধার্থের ব্যাখ্যা, তার আগে বিধানসভা ভোটে এ রাজ্যে দল ভাল ফল করবে বলেই তো ২০১৯-এ বাংলা থেকে যাত্রা শুরুর আশা প্রকাশ করেছেন উনি!
সর্বভারতীয় সভাপতির বক্তব্যের বিভ্রান্তি কাটাতে কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি আসরে নেমেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি রাহুল সিংহও। তাঁর কথায়, ‘‘অমিতজি ২০১৯-এর লোকসভা ভোটের পূর্ণ প্রস্তুতির কথা বলেছেন। রাজ্য নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠকে তিনি স্পষ্ট করে দিয়েছেন, এ রাজ্যে সারদা, টেট কেলেঙ্কারি, সন্ত্রাস এবং আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে ছেলেখেলার বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার-বিরোধী আন্দোলন আরও তীব্র করতে হবে।’’
অমিত তৃণমূলের বিরুদ্ধে সরাসরি মন্তব্য না করায় ও ২০১৯ সালের ভোটে বেশি গুরুত্ব দেওয়ায় সমালোচনায় নেমেছেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরি। বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের গোপন আঁতাঁতের ইঙ্গিত দিয়ে ইয়েচুরির কটাক্ষ, ‘‘তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যে ম্যাচ-ফিক্সিং হয়ে গিয়েছে। তৃণমূলের বিভিন্ন সাংসদ, মন্ত্রী, নেতা সারদা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে পড়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে সিবিআই তদন্তের কাজ ধীর গতিতে চলবে। তার বদলে তৃণমূল বিজেপিকে রাজ্যসভায় বিভিন্ন বিল পাশে সাহায্য করবে।’’ বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসুও বলেন, ‘‘অমিত শাহ বুঝতে পেরেছেন রাজ্যে বিজেপির পরিস্থিতি ভাল নয়। ২০১৬ সালে বিজেপি কিছুই করতে পারবে না। তাই, ২০১৯ সালের জন্য তিনি সংগঠনের দিকে নজর দিতে বলেছেন কর্মীদের।’’