চা বাগানকেই সামনে রেখে প্রভাব বাড়াচ্ছে বিজেপি

সংগঠন বৃদ্ধিতে এ বার বিজেপির নজর ডুয়ার্সে চা বলয়। সদ্য বিধানসভা ভোটে চা বলয়ের একটি আসন বিজেপির দখলে গিয়েছে। চা বলয়ের অন্য আসনেও দলের ভোটের হার বেড়েছে বলে নেতাদের দাবি। সে কারণেই চা বলয়ে সংগঠনকে মজবুত করতে সক্রিয় হয়েছে দলের রাজ্য নেতৃত্ব।

Advertisement

পার্থ চক্রবর্তী

বীরপাড়া শেষ আপডেট: ০৬ জুন ২০১৬ ০২:২১
Share:

দিলীপ ঘোষ। — নিজস্ব চিত্র

সংগঠন বৃদ্ধিতে এ বার বিজেপির নজর ডুয়ার্সে চা বলয়। সদ্য বিধানসভা ভোটে চা বলয়ের একটি আসন বিজেপির দখলে গিয়েছে। চা বলয়ের অন্য আসনেও দলের ভোটের হার বেড়েছে বলে নেতাদের দাবি। সে কারণেই চা বলয়ে সংগঠনকে মজবুত করতে সক্রিয় হয়েছে দলের রাজ্য নেতৃত্ব।

Advertisement

রবিবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বীরপাড়ায় এসে দলীয় সভা করেছেন। এ দিন বীরপাড়া-মাদারিহাট কেন্দ্র থেকে জয়ী মনোজ টিগ্গাকেও সংবর্ধনা দেওয়া হয় দলের তরফে। মূলত ওই সভাতে হাজির থাকতেই দিলীপবাবুর ডুয়ার্সে আসা। তবে এ দিন ডিমডিমা, বীরপাড়া, ধুমচিপাড়া এবং হান্টাপাড়া চা বাগানও পরিদর্শন করেছেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে দলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্যে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘চা বাগানের সমস্যার কথা আমরা বিধানসভায় জানাব। রাজ্য সরকারের থেকে চা শ্রমিকদের অধিকার আদায় করা হবে।’’

বিজেপি সূত্রের খবর, বিধানসভা ভোটের ফল বিশ্লেষণ করে সংগঠনে রদবদল হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হবে। বিধানসভা ভিত্তিক পৃথক কমিটিও হবে। চা বাগান এলাকায় সংগঠনের কাজকর্ম দেখভালের জন্যও পৃথক আরেকটি কমিটি হবে। এ দিন দিলীপবাবু যে বাগানগুলিতে গিয়েছিলেন, সবই অচলাবস্থায় রয়েছে। প্রথমে বন্ধ চা বাগান নিয়েই আন্দোলন শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন দলের নেতারা। বিজেপির রাজ্য সভাপতির অভিযোগ, ‘‘উত্তরবঙ্গের চা বাগানগুলির দুরবস্থা রাজ্য সরকারের চোখে পড়ছে না। বন্ধ চা বাগানে কিছু মামুসি সুযোগসুবিধে ছাড়া কোনও সাহায্য নেই সরকারে। বন্ধ বাগান খুলতেও কোনও পদক্ষেপ নেই।’’ চা শ্রমিকদের রেশন ব্যবস্থা নিয়েও অভিযোগ তুলেছেন বিজেপির রাজ্য নেতা। চা বাগানের শ্রমিকদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার রেশন দিলেও, তা যথাযথ ভাবে সব শ্রমিক পরিবারের কাছে পৌঁছয় না বলে অভিযোগ। শ্রমিকদের যে চাল সরবরাহ করা হচ্ছে, তা পোকায় কাটা বলে অভিযোগ। বন্ধ বাগানে পানীয় জল, বিদ্যুৎ ও চিকিৎসা পরিষেবা নিয়ে একের পর এক অভিযোগ তুলেছেন দিলীপবাবু।

Advertisement

কেন্দ্রীয় বাগিচা আইনে চা বাগান চলে। সে কারণে তৃণমূলের তরফে চা বাগানের সমস্যা নিয়ে পাল্টা কটাক্ষ করা হয়েছে বিজেপি। তৃণমূলের আলিপুরদুয়ার জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তীর দাবি, ‘‘বিজেপি সাম্প্রদায়িক দল। ওদের থেকে কিছু শেখার নেই। মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই চা শ্রমিকদের বন্ধ বাগান ভাতা থেকে শুরু সব ধরনের মৌলিক পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। আইন অনুযায়ী কেন্দ্রের বাগান খোলার দায়িত্ব নেওয়ার কথা। তাও বিজেপি সরকার করছে না।’’ সৌরভবাবুর কটাক্ষ, ‘‘চা বাগান এবং উত্তরবঙ্গের বাসিন্দারা তৃণমূল সরকারের কাজে কতটা সন্তুষ্ট, তা বিধানসভা ভোটেই প্রমাণ হয়েছে।’’

ডুয়ার্সের চা বলয়ের পাঁচটি আসনের মধ্যে চারটি আসনই দখল করেছে তৃণমূল। একটি পেয়েছে বিজেপি। বামেরা একটিও আসন পায়নি। শাসক দলের সঙ্গে পাল্লা দিতে বিরোধী সংগঠনের পুরোটাই নিজেদের দখলে আনাই আপাতত দলের লক্ষ্য বলে বিজেপির জেলা নেতাদের দাবি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন