হাত ভাঙা, চোখ উপড়ে নেওয়ার হুমকি বিজেপির

এক জনের মুখে তৃণমূল কর্মীদের চোখ উপড়ে নেওয়ার হুঁশিয়ারি। তৃতীয় জন প্রশাসনকেই গুঁড়িয়ে দেওয়ার নিদান দিলেন!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

মহম্মদবাজার শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ২৩:৪৪
Share:

প্রতীকী ছবি।

দলীয় সভা থেকে একযোগে পুলিশ-প্রশাসন-শাসক দলকে হুমকি দিলেন বিজেপি নেতারা। এক জন বললেন, পুলিশকে মারুন। এক জনের মুখে তৃণমূল কর্মীদের চোখ উপড়ে নেওয়ার হুঁশিয়ারি। তৃতীয় জন প্রশাসনকেই গুঁড়িয়ে দেওয়ার নিদান দিলেন!

Advertisement

কুকথা এ রাজ্যের রাজনীতিতে এখন প্রায় রেওয়াজ। এর আগেও বিভিন্ন সময় রাজনৈতিক দলের নেতা-নেত্রীর মুখে বিরোধী দলের নেতা-নেত্রীর উদ্দেশে অশালীন মন্তব্য শোনা গিয়েছে। সেই তালিকায় নতুন সংযোজন বীরভূমের মহম্মদবাজার থানার শ্রীকান্তপুর। ওই গ্রামে রবিবার বিজেপির জনসভার মঞ্চ থেকে দলের জেলার সাধারণ সম্পাদক কালোসোনা মণ্ডল বলেন, ‘‘পুলিশকে ভাল ভাবে বললে কথা শুনবে না। ওদেরকে মারলে ওরা কথা শুনবে। তাই পুলিশকে মারুন! প্রশাসন কিছু করতে পারবে না।’’ বিজেপি নেত্রী অনামিকা ঘোষ এক ধাপ সুর চড়িয়ে হুমকি দেন, ‘‘কোনও তৃণমূল কর্মী বিজেপি কর্মীদের চোখ রাঙালে সেই চোখ আমি উপড়ে নেব! কেউ বিজেপি কর্মীদের গায়ে হাত দিলে হাত ভেঙে দেব।’’ ওই মঞ্চ থেকেই বিজেপি-র মহিলা মোর্চার রাজ্য সভানেত্রী লকেট চট্টোপাধ্যায় নাম না করে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের সমালোচনা করে বলেন, ‘‘জেলার এক দাদা আছে। যে মহিলাদের সম্মান দিতে জানে না। তাকে নাকি সবাইকে মানতে হবে! সব ভেঙে দিন, গুঁড়িয়ে দিন। প্রশাসন কিছু করতে পারবে না। বাঁচার তাগিদে সবাইকে রাস্তায় নেমে অস্ত্র ধরতে হবে।’’

বীরভূমের পুলিশ সুপার শ্যাম সিংহ বলেন, ‘‘ওই সভার কোনও অনুমতি ছিল না। তার জন্য আমরা মামলা করছি। যে উস্কানিমূলক বক্তব্য ওখানে পেশ করা হয়েছে, তার ভিডিও ফুটেজও আমরা জোগাড় করেছি। সেটা খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ধারায় মামলা করা হবে।’’

Advertisement

কয়েক দিন আগেই এ রাজ্যের গণতান্ত্রিক পরিবেশ নেই বলে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী মন্তব্য করেছিলেন, সব রাজনৈতিক দলকে সহবতের শিক্ষা নিতে হবে। মোদীর দলের নেতা-নেত্রীরাই তা হলে এমন হুমকি দেন কী করে, সেই প্রশ্ন তুলছে বিজেপি-বিরোধীরা। মোদীর মন্তব্য স্মরণ করিয়ে দিয়েই তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মানুষকে সঙ্গে না পাওয়ার হতাশা থেকেই বিজেপি নেতা-নেত্রীরা এই ধরনের হিংস্র কথা বলছেন। কিন্তু এ সব বলে রাজ্য সরকারের উন্নয়নকে থামানো যাবে না। নিজেদেরও গণভিত্তি তৈরি করা যাবে না। এ রাজ্যের সংস্কৃতির সঙ্গে বিজেপির সংস্কৃতি মেলে না।’’

বিজেপি নেতৃত্বের অবশ্য ব্যাখ্যা, বীরভূমে সন্ত্রাসের রাজনীতি আমদানি করেছে তৃণমূলই। তাদের জেলা সভাপতি অনুব্রত পুলিশকে বোমা মারার হুমকি দিয়েও পার পেয়ে গিয়েছেন। দুবারজপুর থানার পুলিশকর্মী অমিত চক্রবর্তীকে খুনের ঘটনায় অনেক অভিযুক্ত বেকসুর খালাস হয়ে গিয়েছেন। লকেট-কালোসোনা-অনামিকারা অনুব্রতর হুমকির জবাব দিয়েছেন মাত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন