Nabanna Abhijan

বিজেপির নবান্ন অভিযান রুখতে পুলিশে ছয়লাপ চারদিক! রাখা হচ্ছে বজ্র, জলকামান, নজরদারি ড্রোনেও

নিরাপত্তা ব্যবস্থার নজরদারিতে থাকবেন বিশেষ কমিশনার দময়ন্তী সেন। নিরাপত্তার তদারকিতে থাকবেন দু’জন করে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার। থাকছেন ১৮ জন ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিক।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৮:৩৮
Share:

বিজেপির নবান্ন অভিযানের আগে ব্যারিকেড তৈরি করছে পুলিশ। ছবি টুইটার।

বিজেপির নবান্ন অভিযান কর্মসূচি রুখতে বিশাল বাহিনী তৈরি পুলিশের। মঙ্গলবার সকাল থেকেই কাজে নেমে পড়েছে তারা। শহরের বিভিন্ন প্রান্তে গেরুয়া বাহিনীর মিছিল আটকাতে কড়া নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে ফেলা হয়েছে চতুর্দিক। বিভিন্ন রাস্তায় ব্যারিকেড দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, নিরাপত্তা ব্যবস্থার নজরদারিতে রয়েছেন বিশেষ কমিশনার দময়ন্তী সেন। শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিরাপত্তার তদারকিতে রয়েছেন দু’জন করে অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার। নিরাপত্তা ব্যবস্থায় থাকছেন ১৮ জন ডিসি পদমর্যাদার আধিকারিক। এ ছাড়াও ৩২ জন অ্যাসিস্ট্যান্ট কমিশনার, ৬২ জন ইনস্পেক্টর থাকছেন।

শহরের নানা প্রান্ত থেকে নবান্নমুখী বিজেপির মিছিল ঠেকাতে পাঁচটি জলকামান রাখা হচ্ছে। থাকছে দু’টি বজ্র। এ ছাড়াও গোটা পরিস্থিতি ড্রোনে নজরদারি চালানো হবে। প্রসঙ্গত, বিজেপির এই কর্মসূচির অনুমতি দেয়নি পুলিশ। তবে পুলিশি অনুমোদনের তোয়াক্কা না করেই নবান্ন অভিযানে নামতে চলেছে পদ্মশিবির।

Advertisement

মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত দ্বিতীয় হুগলি সেতু এবং দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত হাওড়া ব্রিজ এড়িয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভোর ৪টে থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত শহরে মালবাহী গাড়ি ঢোকা নিষিদ্ধ করেছে পুলিশ। সকাল ১১টা থেকে ৩টে পর্যন্ত এনসি স্ট্রিট এবং কলেজ স্ট্রিটে যান নিয়ন্ত্রণ করা হবে। বিকল্প পথ হিসাবে লেনিন সরণি, মৌলালি হয়ে এজেসি বোস রোড ধরে এগোনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে পুলিশের তরফে। দুপুর ১২টা থেকে বিজেপির কর্মসূচি শেষ না হওয়া পর্যন্ত স্ট্র্যান্ড রোড এবং উত্তর অভিমুখে কিংসওয়ে মোড় পর্যন্ত যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হবে। এর জেরে সাধারণ মানুষের ভোগান্তি হতে পারে বলে আশঙ্কা।

কলকাতা ও হাওড়া থেকে তিনটি মিছিল যাওয়ার কথা নবান্নের উদ্দেশে। একটি মিছিল শুরু হওয়ার কথা কলকাতার কলেজ স্কোয়ার থেকে, অন্য দু’টি হাওড়া ময়দান এবং সাঁতরাগাছি থেকে। এ দিনের কর্মসূচি রুখতে নবান্নের আশপাশে পাঁচ কিলোমিটার এলাকা কার্যত দুর্গে পরিণত করেছে পুলিশ। প্রায় ৩০টি ছোট-বড় ব্যারিকেড করে ঘিরে ফেলা হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের প্রধান কার্যালয়কে। কলকাতা এবং হাওড়া সিটি পুলিশ ছাড়াও বিভিন্ন জেলা থেকে আনা হয়েছে অতিরিক্ত বাহিনী। হাওড়া সেতু, হাওড়া ময়দান চত্বর এবং সাঁতরাগাছি স্টেশন সংলগ্ন কোনা এক্সপ্রেসওয়েতে তৈরি করা হয়েছে ত্রিস্তরীয় ব্যারিকেড। হাওড়ার দু’জায়গায় দায়িত্বে থাকবেন ডিআইজি পদমর্যাদার পুলিশকর্তারা। সামগ্রিক পরিস্থিতির উপরে নজর রাখার জন্য ছ’টি ড্রোন ব্যবহার করা হবে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। কলকাতার বিভিন্ন প্রান্ত এবং হাওড়া মিলিয়ে মোতায়েন থাকবে প্রায় চার হাজার পুলিশ। এই তিনটি মূল মিছিল ছাড়াও ছোট ছোট মিছিল যাতে বিদ্যাসাগর সেতু দিয়ে নবান্নের দিকে যেতে না পারে, সে জন্য ওই সেতুর বিভিন্ন র‌্যাম্প-সহ ১৯টি জায়গায় কলকাতা পুলিশের তরফে ব্যারিকেড করা হচ্ছে। এর জেরে যান চলাচল ব্যাহত হতে পারে বলে পুলিশের একাংশ আশঙ্কা প্রকাশ করলেও গোটা শহর সচল রাখার চেষ্টা করা হবে বলে লালবাজার সূত্রের খবর।

হাওড়া সিটি পুলিশ সূত্রে খবর, ১২টার পরে হাওড়ার দিকে ফোরশোর রোড, আন্দুল রোড, বিদ্যাসাগর সেতুর হাওড়ার দিকের অংশ দিয়ে কোনও গাড়ি চলতে দেওয়া হবে না। বন্ধ থাকবে সাধারণের যাতায়াতও। মিছিল শুরুর ঘণ্টা দুয়েক আগে থেকেই ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক দিয়ে আসা হাওড়া এবং কলকাতামুখী সব গাড়ি হাওড়া-আমতা রোড ও নিবেদিতা সেতু বা বালি ব্রিজের দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন