জয়ন্ত দত্ত। ছবি: সুশান্ত সরকার।
সরকারি নির্দেশ মেনে অবৈধ বালি তোলা রুখতে গিয়ে নিজের দফতরেই মার খেলেন বলাগড়ের ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক (বিএলএলআরও) জয়ন্ত দত্ত। অভিযোগের আঙুল শাসক দলের বিরুদ্ধে। যদিও অভিযুক্ত নেতা বিষয়টি অস্বীকার করেছেন।
পরিবেশ আদালতের নির্দেশে হাওড়া, হুগলি ও দুই ২৪ পরগনায় নদী থেকে বালি তোলা বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেছে রাজ্য সরকার। তবু বলাগড়ে গঙ্গা থেকে অবৈধ ভাবে মাটি এবং বালি তোলার অভিযোগ আসছিল। শুক্রবার জয়ন্তবাবুর নির্দেশে গুপ্তিপাড়া খেয়াঘাটের সামনে বালিবোঝাই একটি গাড়ি আটক করা হয়। অভিযোগ, গাড়িটি ছাড়ানোর জন্য শাসক দলের তরফে অনুরোধ আসে। তৃণমূলের এক মহিলা প্রধানও গাড়িটি ছাড়ানোর চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ। তবে কাজ হয়নি। এর আগে ২২ জুলাই মুক্তারপুরে বালি বোঝাই একটি ট্রাক আটকানো হয়। সে ক্ষেত্রেও একই অনুরোধ এসেছিল। শোনা হয়নি। জরিমানা করা হয়েছিল। বদলা নিতেই হামলা হল বলে মনে করছেন ব্লক প্রশাসন কর্তারা। থানায় জয়ন্তবাবু জানিয়েছেন, এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ তৃণমূলের ব্লক সভাপতি এবং ডুমুরদহ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান শ্যামাপ্রসাদ রায় বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর নেতৃত্বে কিছু লোক জয়ন্তবাবুর ঘরে ঢোকে। জয়ন্তবাবুকে ক্ষমা চাইতে হবে বলে তারা দাবি করে। জয়ন্তবাবু রাজি না-হওয়ায় শুরু হয় মারধর।
আরও পড়ুন: আসিকুর কি খুন হয়েছেন, ধন্দ ভাঙড়ে
জয়ন্তবাবু পরে বলেন, ‘‘কর্তব্য পালন করতে গিয়ে মার খেতে হবে ভাবিনি। গত বছর জেলায় বালি তোলা থেকে সব থেকে বেশি রাজস্ব আমাদের ব্লক আদায় করেছিল। এটা বোধ হয় তারই পুরস্কার!’’ হুগলি জেলা (গ্রামীণ) পুলিশ সুপার সুকেশ জৈন জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে।
শ্যামাপ্রসাদবাবুর দাবি, ‘‘উনি (জয়ন্ত) মানুষকে পরিষেবা না-দিয়ে সিপিএমের হয়ে কাজ করছেন। তাই মানুষ ওঁর সঙ্গে কথা বলতে গিয়েছিল। কেউ মারেনি।’’ যদিও তৃণমূলেরই বিধায়ক অসীম মাঝি প্রকারান্তরে ঘটনাটি স্বীকার করে বলেছেন, ‘‘এ ভাবে আক্রমণাত্মক হওয়া ঠিক নয়।’’