প্রতীকী ছবি।
কোনও ব্যক্তি করোনা আক্রান্ত কি না, তা জানতে তাঁর লালারসের পরীক্ষা করে স্বাস্থ্য দফতর। এবার এলাকায় গোষ্ঠী সংক্রমণ হচ্ছে কি না, তা জানতে ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ’ (আইসিএমআর) নির্দেশিকা মেনে জেলায় শুরু হয়েছে রক্তের নমুনা সংগ্রহ।
জেলা স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, করোনা-নজরদারি বাড়াতে পূর্ব মেদিনীপুরকে ১০টি ক্লাস্টারে ভাগ করেছে আইসিএমআর। এই ১০টি ক্লাস্টার হল— রামনগর-১, কাঁথি-৩, ভগবানপুর-১, পটাশপুর-১ খেজুরি- ২, হলদিয়া ব্লক, পাঁশকুড়া-১, তমলুক শহর, মহিষাদল এবং অনন্তপুর। প্রতিটি ক্লাস্টার থেকে ৪০ জন করে মোট ৪০০টি নমুনা সংগ্রহ করা হবে। তা পাঠানো হবে পুণের ল্যাবরেটরিতে। ক্লাস্টারগুলিতে বিক্ষিপ্তভাবে রক্তের নমুনা সংগ্রহ করা হবে।
পূর্ব মেদিনীপুরের মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাইচন্দ্র মণ্ডল বলেন, ‘‘আইসিএমআর আমাদের জেলাকে ১০টি ক্লাসটারে ভাগ করেছে। প্রতিটা ক্লাস্টারে ৪০ জন করে ৪০০ জনের রক্তের নমুনা নেওয়া হবে। বুধবার এবং বৃহস্পতিবার— এই দু’দিন তা সংগ্রহ করা হবে। নমুনা সংগ্রহের সময় আইসিএমআরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থাকবেন।’’
রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে লাভ কী হবে?
জেলার এক স্বাস্থ্য আধিকারিক জানাচ্ছেন, নমুনাগুলির ইমিউনোগ্লোবিন পরীক্ষা করার পর এলাকায় গোষ্ঠী সংক্রমণ হয়েছে কি না তা বোঝা যেতে পারে। পাশাপাশি, ওই এলাকার ‘হার্ড ইমিউনিটি’ কতটা, সেটাও জানা যাবে। ওই আধিকারিক জানাচ্ছেন, পাঁশকুড়ার বড়মা হাসপাতালে দুই মেদিনীপুর-সহ তিন জেলার প্রায় ১৩০ জনেরও বেশি করোনা আক্রান্তের চিকিৎসা হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১১১ জনেরই করোনা উপসর্গ ছিল না। এই রক্তের পরীক্ষার মাধ্যমে কারও শরীরে ‘আইজিজি অ্যান্টিবডি’ রয়েছে কি না, তা জানা যাবে। আক্রান্ত হওয়ার পরে ওই অ্যান্টিবডির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। এবং কেউ সুস্থ হওয়ার পরেও কয়েক মাস থেকে যায়। ফলে উপসর্গহীন কারও শরীরে ওই অ্যান্টিবডির উপস্থিতি পাওয়া গেলে বোঝা যাবে তিনি হয়তো আক্রান্ত হয়েছিলেন বা হয়েছেন।
এ দিকে, এগরার ১ নম্বর ওয়ার্ডের ২০ বছরের মহারাষ্ট্র ফেরত এক যুবক এবং এগরা থানা এলাকার ওড়িশা সীমানা লাগোয়া গ্রামের এক পরিযায়ী শ্রমিক নতুন করে করোনা আক্রান্ত হয়েছেন। এই নিয়ে গত এক সপ্তাহে এগরার প্রায় আটজন পরিযায়ী শ্রমিক করোনা আক্রান্ত হলেন। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, গত ১৮ মে হায়দরাবাদ থেকে ওড়িশা সীমানাবর্তী ওই এলাকায় আসেন বছর পঁচিশের ওই পরিযায়ী শ্রমিক। গ্রামে ফিরে একটি স্কুলে নিভৃতাবাসে থাকছিলেন তিনি। তাঁর লালারসের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতে যুবকের করোনা পজ়িটিভ রিপোর্ট আসে। নতুন করে দুই আক্রান্ত যুবককে স্বাস্থ্য দফতরের কর্মীরা পাঁশকুড়া বড়মা হাসপাতালে ভর্তি করেন।
ওই যুবদের সংস্পর্শে আসা আরও দুই পরিযায়ী শ্রমিক এবং তাঁদের বাড়ির সদস্যদের গৃহ নিভৃতাবাসে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তাঁদেরও লালারসের নমুনা সংগ্রহ করবে স্বাস্থ্য দফতর। এ ব্যপারে মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক নিতাই বলেন, ‘‘এগরা এলাকার দু’জন করোনা আক্রান্তকে বড়মা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। ওই যুবকদের সংস্পর্শে আসা এবং পরিজনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হবে।’’