SIR in West Bengal

১ কোটি ৩৬ লক্ষ ভোটারের নথি যাচাই নিয়ে মুচলেকা দিতে হবে বিএলও-দের! জানাতে হবে কিসের ভিত্তিতে সুপারিশ

১ কোটি ৩৬ লক্ষ ভোটারের এনুমারেশন ফর্মের তথ্যে বিভিন্ন ধরনের সন্দেহের জায়গা রয়েছে বলে মনে করছে কমিশন। কোথাও ভোটারের চেয়ে তাঁর বাবা বা মা মাত্র ১৫ বছরের বড়। আবার অনেক জায়গায় বদলে গিয়েছে বাবার নামই।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ২১:৩৮
Share:

ভোটার তালিকা। যে ভোটারদের তথ্যে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে, তাঁদের তথ্যযাচাই করবেন বিএলও-রা। — ফাইল চিত্র।

পশ্চিমবঙ্গের ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ভোটারের নথি এবং তথ্য যাচাই নিয়ে বুথ স্তরের আধিকারিক (বিএলও)-দের মুচলেকা দিতে হবে। কিসের ভিত্তিতে চূড়ান্ত তালিকায় নাম তোলার সুপারিশ করা হয়েছে, তা উল্লেখ করতে হবে মুচলেকায়। এমনটাই জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

Advertisement

রাজ্যের খসড়া তালিকা প্রকাশের পরে এ বার ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)-এর দ্বিতীয় পর্ব শুরু হয়েছে। শুরু হয়েছে আসল ঝাড়াই বাছাই প্রক্রিয়া। যে ভোটারদের তথ্য নিয়ে কমিশন পুরোপুরি সন্তুষ্ট নয়, তাঁদের তথ্য যাচাই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন। এর মধ্যে ৩০ লক্ষেরও বেশি ভোটার রয়েছেন, যাঁরা ২০০২ সালের তালিকা (ওই বছরে রাজ্যে সর্বশেষ এসআইআর হয়েছিল)-র সঙ্গে কোনও যোগসূত্র দেখাতে পারেননি। তাঁদের সকলকেই ডাকা হবে কমিশনের শুনানিতে।

এ ছাড়া প্রায় ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ভোটার রয়েছেন, যাঁদের এনুমারেশন ফর্মের তথ্যে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে বলে মনে করছে কমিশন। তাঁদেরও তথ্য যাচাই করা হবে। তবে এদের প্রথমেই শুনানির জন্য ডেকে নেওয়া হবে না। আগে সংশ্লিষ্ট এলাকার বিএলও-রা ওই ভোটারদের তথ্য যাচাই করবেন। বিএলও-রা সন্তুষ্ট না-হলে, তাঁরা সংশ্লিষ্ট ভোটারের শুনানির জন্য সুপারিশ করবেন কমিশনের কাছে। অন্যথায় বিএলও-রা সুপারিশ করবেন চূড়ান্ত তালিকায় নাম তোলার জন্য। এ ক্ষেত্রে কিসের ভিত্তিতে ওই সুপারিশ করা হচ্ছে, তা জানাতে হবে কমিশনের কাছে।

Advertisement

এই ১ কোটি ৩৬ লক্ষ ভোটারের এনুমারেশন ফর্মের তথ্যে বিভিন্ন ধরনের সন্দেহের জায়গা রয়েছে বলে মনে করছে কমিশন। কোথাও ভোটারের চেয়ে তাঁর বাবা বা মা মাত্র ১৫ বছরের বড়। কোথাও আবার ঠাকুরদা বা ঠাকুরমার চেয়ে ভোটার ৪০ বছরেরও ছোট নয়। মাঝে এক প্রজন্ম ব্যবধানের পরেও বয়সের ফারাক ৪০ বছরের কম। কোথাও ভোটারের সঙ্গে তাঁর বাবা-মায়ের বয়সের ফারাক ৫০ বছরেরও বেশি। আবার অনেক জায়গায় বদলে গিয়েছে বাবার নামই। এনুমারেশন ফর্মে এমন বিস্তর সন্দেহজনক তথ্য উঠে এসেছে।

রাজ্যে নির্বাচন কমিশনের বিশেষ পর্যবেক্ষক সুব্রত গুপ্ত জানান, খতিয়ে দেখার সময়ে লক্ষ্য করা গিয়েছে ২০০২ সালের তালিকায় এক ভোটারের নাম ছিল বাবলু দাস। এখন তাঁর নাম হয়ে গিয়েছে অনির্বাণ দাস। এনুমারেশন ফর্মে উভয় নামই রয়েছে। পরে কমিশন খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, অনির্বাণেরই ডাকনাম বাবলু। ২০০২ সালে তাঁর ডাকনামই উঠে গিয়েছিল ভোটার তালিকায়।

এই সকল তথ্যগুলি যাচাই করে দেখতে চায় কমিশন। এই যাচাইয়ের দায়িত্ব রয়েছে বিএলও-দের উপর। কোথাও কোনও গন্ডগোল রয়েছে কি না, তা জানতে হবে বিএলও-দের। কমিশন সূত্রে খবর, কোথাও ভোটারদের নামের বানান ভুল থাকলে, বা মধ্য নাম (মিডল নেম) যুক্ত হলে বা বাদ পড়লে, কিংবা অন্য কোনও ছোটখাট ত্রুটি হলে, সেই ভোটারের নাম চূড়ান্ত তালিকায় তোলার জন্য সুপারিশ করে দেওয়া যেতে পারে। তবে প্রতি ক্ষেত্রেই বিএলও-কে মুচলেকা দিতে হবে। উভয়েই যে একই ব্যক্তি তা ওই মুচলেকায় জানাতে হবে কমিশনকে। কমিশনের এই সিদ্ধান্তের ফলে বিএলও-দের উপর ফের কাজের চাপ বৃদ্ধি পেতে পারে বলে মনে করছেন ভোটকর্মী এবং বিএলও ঐক্যমঞ্চের সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement