রবিবার ডোমকলের একটি বিয়েবাড়িতে। নিজস্ব চিত্র
বিয়েবাড়ি বলে কথা!
বরের মাসি, কনের পিসির ব্যস্ততার অন্ত নেই। কাজি লিখছেন কবুলনামা। কচিকাঁচারা ছুটে বেড়াচ্ছে।
মুর্শিদাবাদের শীতলনগরের সেই বিয়েবাড়িতে ঢোকার মুখে থমকে দাঁড়ালেন এক সিপিএম নেতা, ‘‘এ কী? এখানেও নীল সাদা! বলি বিয়ে হচ্ছে নাকি তৃণমূলের অনুষ্ঠান?’’ পাশ থেকে ফুট কাটেন আর এক প্রবীণ কমরেড, ‘‘এই তো চলছে এখন। আমাদের সময়ে বাপু এমন ছিল না!’’
বিয়ের বাড়ির লোকজন বেজায় বিড়ম্বনায়। হাওয়া অন্য দিকে বইছে বুঝতে পেরে হাল ধরেন কনের মামা, ‘‘আজ্ঞে, ওটা ঠিক নীল নয়, ইয়ে বেগুনি, মানে নীলচে বেগুনি আর কি!’’ তখনও গজগজ করে চলেছেন পোড়খাওয়া সিপিএম নেতা, ‘‘রাখো তোমার নীলচে বেগুনি! এই কাপড়েই তৃণমূলের মঞ্চ, প্যান্ডেল সব হচ্ছে!’’
কোনও রকমে তাঁদের ভিতরে নিয়ে গিয়ে বসান কনের মামা আমিরুল ইসলাম। তার পরে ডেকরেটরকে ডেকে বলেন, ‘‘পইপই করে বলেছিলাম, অন্য কাপড় দাও।’’ ডেকরেটর বাবলু সাহা বলছেন, ‘‘আমিই বা কী করব, বলুন? এখন তো নীল-সাদার অর্ডারই বেশি। হাজার রঙের কাপড় রাখার মুরোদ আমাদের নেই। তাই এই দিয়েই চালাচ্ছি। বাঘা বাঘা সিপিএম নেতার বাড়িতেও এই দিয়েই কাজ করছি।’’ অনেক বিয়েবাড়িতে ঝোলানো বেলুনও নীল-সাদা। অন্য রং নাকি পাওয়া যায় না।
আরও পড়ুন: বিএড বইয়ে বিদ্ধ যাদবপুর, বিতর্ক তুঙ্গে
ডোমকলের বেশির ভাগ ডেকরেটরের একই দশা। তাঁদের দাবি, প্রায় প্রতিদিনই সরকারি কিংবা তৃণমূলের অনুষ্ঠান লেগেই আছে। আর সেখানে নীল-সাদা রং ছাড়া চলবে না। তাই নীলচে-বেগুনি কাপড় কেনা হয়েছে। তৃণমূলও আপত্তি করে না। আবার অনুষ্ঠান বাড়িতেও কাজ চালানো যায়!
এ বঙ্গে রঙেও অনেক কিছু আসে যায়!