পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
মাধ্যমিকের প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় তৎপর হতেই তড়িঘড়ি তাঁর বাড়িতে গিয়ে রিপোর্ট পৌঁছে দিলেন মধ্যশিক্ষা পর্ষদের সভাপতি কল্যাণময় গঙ্গোপাধ্যায়। রবিবার সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ নাকতলায় পার্থের বাড়ি যান তিনি। প্রশ্ন ফাঁস সংক্রান্ত তদন্তের রিপোর্ট দেন কল্যাণময়বাবু। তবে সূত্রের খবর, এ দিন পার্থের সঙ্গে সভাপতির সাক্ষাৎ হয়নি। পরে পার্থ জানান, দু’একদিনের মধ্যেই কল্যাণময়বাবুর সঙ্গে সবিস্তারে কথা বলবেন। শনিবার পার্থ জানিয়েছিলেন, আজ সোমবার পর্ষদের সভাপতির সঙ্গে আলোচনা করবেন। তার আগেই রবিবার তড়িঘড়ি রিপোর্ট পেশ করল পর্ষদ।
মাধ্যমিক পরীক্ষায় জলপাইগুড়ির ময়নাগুড়ির সুভাষনগর হাই স্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিদয়াল রায়ের বিরুদ্ধে নির্ধারিত সময়ের আগেই প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলার অভিযোগ ওঠে। এসআই বিশ্বনাথ ভৌমিক প্রথম অভিযোগ করেন। তাঁর দাবি, অঙ্ক পরীক্ষার দিনই ঘটনাটি তাঁর চোখে পড়ে। তার পরে স্কুলের আর এক শিক্ষক বিশ্বজিৎ রায় প্রশ্ন ফাঁস নিয়ে পুলিশের কাছেও অভিযোগ করেন। এই ঘটনা নিয়ে তোলপাড় হয় রাজ্য।
পরীক্ষা শুরুর আগে পর্ষদ জানিয়েছিল সমস্ত রকম নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হয়েছে। এমনকী, নির্ধারিত সময়ের আগে ক্লাস রুমে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলা হলেও পর্ষদের সেই বার্তা পৌঁছে যাবে। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পরীক্ষার অনেক আগেই প্রশ্নপত্র খোলা হয় বলে অভিযোগ। কিন্তু তার পরেও পর্ষদ কেন জানতে পারল না, তা নিয়েই প্রশ্ন ওঠে। ইতিমধ্যে ওই প্রধান শিক্ষক-সহ পরীক্ষার দায়িত্বে থাকা অন্য তিন কর্তা, জেলা স্কুল পরিদর্শক এবং পরিচালন সমিতির সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পর্ষদ। তার ভিত্তিতেই পদক্ষেপ করার ইঙ্গিত দিয়েছিল পর্ষদ। এ দিন পার্থের কাছে সেই রিপোর্টই দেওয়া হয়। মন্ত্রী বলেন, ‘‘আগেই বলেছিলাম দোষী প্রমাণিত হলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেব। আগে রিপোর্টটা খতিয়ে দেখি। তারপরে দু’একদিনের মধ্যে পর্ষদ সভাপতির সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলব।’’
এই পরিস্থিতিতে সুভাষনগর হাইস্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষা ভিডিয়ো রেকর্ড করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ সে ইসঙ্গে পরীক্ষার নিয়ম যাতে কঠোরভাবে পালিত হয় তাও স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে শিক্ষা দফতর সূত্রে খবর৷ হরিদয়ালবাবুর জায়গায় সেন্টার ইনচার্জ করা হয়েছে সহকারী প্রধান শিক্ষক নিরঞ্জন অধিকারীকে৷ নিরঞ্জনবাবু বলেন, ‘‘আমরা আশাবাদী, সুভাষনগর স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক শান্তিপূর্ণ ভাবেই হবে৷’’