Uttarakhand

Uttarakhand Avalanche: দশ জন ফিরলেও এখনও নিখোঁজ ১

বাগনানের যুবক চন্দ্রশেখর তাঁর সঙ্গীসাথীদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার সকালে শেষবারের মতো ফিরে এলেন তাঁর গ্রামে, কফিন-বন্দি হয়ে।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০২১ ০৭:২২
Share:

ফাইল চিত্র।

দুটো জামা, সানগ্লাসের খাপ, এক জোড়া স্নিকার— নিতান্ত আটপৌরে খান কয়েক জিনিস বুকে চেপে স্বজনহারার স্মৃতি হাতড়াচ্ছে চন্দ্রশেখর দাসের পরিবার। বাগনানের যুবক চন্দ্রশেখর তাঁর সঙ্গীসাথীদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার সকালে শেষবারের মতো ফিরে এলেন তাঁর গ্রামে, কফিন-বন্দি হয়ে। চন্দ্রশেখরের সঙ্গেই এ দিন সকাল পৌনে ন’টা নাগাদ কলকাতা বিমানবন্দরে পৌঁছয় সরিৎশেখর দাস এবং সাগর দে’র কফিন। উত্তরাখণ্ডের সুন্দরডুঙ্গা উপত্যকায় ট্রেকিংয়ে গিয়ে বরফ-ঝড়ে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া পাঁচ অভিযাত্রীর দেহ এ দিন সকালে দু’দফায় এসে পৌঁছয় বিমানবন্দরে। বাগনানের তিন অভিযাত্রীর দেহ নিয়ে বিমান মাটি ছোঁয়ার ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই আসে পায়রাডাঙার প্রীতম রায় এবং কলকাতার ঠাকুরপুকুরের সাধন বসাকের কফিন-বন্দি দেহ।

Advertisement

নবমীর রাতে উত্তরাখণ্ডে হারিয়ে যাওয়া ১১ জন অভিযাত্রীর মধ্যে দশ জনের দেহ উদ্ধার হলেও খোঁজ নেই সুখেন মাজির।

বহরমপুর মেডিক্যাল কলেজের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র প্রীতমের মামা অনুপ মণ্ডল এ দিন পৌঁছে গিয়েছিলেন বিমানবন্দরে। নাগাড়ে বিড়বিড় করে চলেছিলেন তিনি, ‘‘কী এমন হত, এমন লম্বা ছুটিতে বাড়িতে থাকলে। আসলে ফাইনাল ইয়ারে উঠে গেলে তো আর ছুটি পেত না, তাই হয়ত...!’’ পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকৃতিতে বুঁদ হয় থাকা প্রীতম বাড়ি লাগোয়া জমিতে লাগিয়েছিলেন চন্দন আর রুদ্রাক্ষ গাছ। এ দিন দুপুরে সেই গাছের নীচেই সমাহিত করা হয়েছে তাঁকে। দুপুরে তাঁর বাড়িতে এসেছিলেন রাজ্যের মন্ত্রী উজ্জ্বল বিশ্বাস।

Advertisement

বাগনানের বাড়ির উঠোনে সরিৎ-চন্দ্রশেখর এবং সাগরের কফিন খোলামাত্রই কেঁদে উঠেছে পাড়া। গানের স্কুলে শিক্ষকতা করতেন সরিৎশেখর। চন্দ্রশেখর পারিবারিক ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। তিনি খালোড় পঞ্চায়েতের সদস্যও ছিলেন।

বিমানবন্দরের কার্গো সেকশনে সকাল থেকে দাঁড়িয়ে ছিলেন বেহালার সাধনবাবুর দুই মেয়ে সমর্পিতা এবং সৃজিতা। সমর্পিতা বলেন, ‘‘বাবার সঙ্গে কতবার ট্রেক করেছি। এ ভাবে ফাঁকি দিয়ে চলে যাবে ভাবিনি।’’ কফিন নিয়ে এ দিন বাগেশ্বর থেকে বিমান নামার আগেই দিল্লি থেকে পৌঁছন চন্দ্রশেখরের জামাইবাবু অভিজিৎ রায়। বলছেন, ‘‘সরিৎ, চন্দ্র সব নিখোঁজ হয়ে গিয়েছে শুনেই পাহাড়ে ছুটে গিয়েছিলাম। উদ্ধারকারী দলের সদস্যরা বার বার যাচ্ছেন আর ফিরে এসে বলছেন, ‘বরফ উজিয়ে হাত-পা বেরিয়ে আছে। বুঝতে পারছি দেহগুলি আছে। কিন্তু উদ্ধার করা যাচ্ছে না।’’ তিনি জানান, চন্দ্রশেখরদের দেহ উদ্ধার হলেও তাঁদের মোবাইল, ক্যামেরা আর পাওয়া যায়নি। রয়েছে শুধু হোটেলে রেখে যাওয়া কয়েক জোড়া জামা-জুতো। অভিজিৎ বলেন, ‘‘ওদের ছোঁয়া লেগে থাকা ওই জামা-জুতোগুলোই রয়ে গেল!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন