মিলেছে পাট্টা, কুন্তী জানাতে চান মমতাকে

খোয়াই হাটের প্রান্তিক ব্যবসায়ী কুন্তীদেবী। হাটে কখনও একতারা, বাঁশি, কখনও বা মাটির পুতুল, পেনদানি, আমড়ার আঁটি দিয়ে তৈরি কারুকাজ বিক্রি করে সংসার টানেন তিনি।

Advertisement

দেবস্মিতা চট্টোপাধ্যায়

বোলপুর শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০১৮ ০১:৩১
Share:

সভাস্থল: মুখ্যমন্ত্রীর বৈঠকের জন্য সাজছে গীতাঞ্জলির মঞ্চ। নিজস্ব চিত্র

আড়াই মাস আগের কথা। তারিখ ছিল ২ জানুয়ারি। কংকালীতলা ঘুরে ফেরার পথে শ্যামবাটি ক্যানালের রাস্তায় নেমে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। হাঁটতে থাকেন খোয়াই হাটের রাস্তা ধরে।

Advertisement

ঠিক তখনই কাণ্ডটা ঘটান কুন্তী সাউ। নিরাপত্তার বেড়াজালের ওপার থেকে চিৎকার করে মুখ্যমন্ত্রীর দিকে আর্জি ছুঁড়ে দেন তিনি— ‘দিদি, আমি তো বাড়ি পেলাম না!’

আড়াই মাস পর বোলপুরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁকে ফের সামনে পাওয়ার আশায় মুখিয়ে রয়েছেন কুন্তীদেবী। কারণটা অন্য। কয়েক দিন আগে জমির পাট্টা হাতে পেয়েছেন তিনি। খুশির খবরটা মুখ্যমন্ত্রীকে তো জানাতেই হবে।

Advertisement

খোয়াই হাটের প্রান্তিক ব্যবসায়ী কুন্তীদেবী। হাটে কখনও একতারা, বাঁশি, কখনও বা মাটির পুতুল, পেনদানি, আমড়ার আঁটি দিয়ে তৈরি কারুকাজ বিক্রি করে সংসার টানেন তিনি। পরিবারে চার জন। স্বামী মারা গিয়েছেন অনেক দিন। বড় মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন কোনওমতে। কিন্তু সেই মেয়ে ফের বাপের বাড়িতে ফিরেছেন তাঁর মেয়েকে নিয়ে। নাতনির খরচও তাই জোগাড় করতে হয় কুন্তীদেবীকে। গোয়ালপাড়া মহাসঙ্ঘের কাছে একটা জায়গায় দিন গুজরান করেন সকলে। পাশেই ভাইয়ের বাড়ি। কিন্তু ঠাঁই মেলেনি সেখানে।

মুখ্যমন্ত্রীকে খোয়াই হাটে দেখে তা-ই এগিয়ে গিয়েছিলেন কুন্তীদেবী। অনুরোধ ছিল একটাই— ‘একটা বাড়ি চাই।’ আশ্বাস দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়— তাঁর বাড়ি করে দেওয়া হবে। পাশে থাকা সরকারি আধিকারিকদের প্রশ্নও করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী— ‘উনি এখনও ঘর পাননি কেন?’

কুন্তীদেবী সেই সময় সাংবাদিক বলেছিলেন— ‘বাধ্য হয়েই দিদিকে ও কথা বলেছি। হাট সাজানোর কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। কিন্তু আমি বাড়ি পেলাম না। আমার কিছু নেই বলেই তো দিদির কাছে চেয়েছি।’

বাড়ি না পাওয়ার কারণ হিসেবে জেলাশাসক পি মোহন গাঁধী তখন জানিয়েছিলেন, জমির পাট্টা নেই বলে তাঁকে বাড়ি দেওয়া যাচ্ছে না।

প্রশাসনিক সূত্রে খবর, মুখ্যমন্ত্রীর হস্তক্ষেপে সেই সমস্যা এখন মিটেছে। এ নিয়ে জেলাশাসক বলেন, ‘‘উনি জমির পাট্টা পেয়ে গিয়েছেন। পেয়েছেন গীতাঞ্জলি প্রকল্পের প্রথম কিস্তির টাকাও। এখন চাইলেই বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করতে পারেন কুন্তীদেবী।’’

মঙ্গলবার বীরভূমে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী। পূর্ব বর্ধমানের গুসকরায় প্রশাসনিক বৈঠক সেরে সড়কপথে এ দিন বিকেল ৫টা নাগাদ রাঙাবিতানে পৌঁছন তিনি। আগামী কাল দুপুরে জেলায় প্রশাসনিক বৈঠক করবেন তিনি। আগের বার
কুন্তীদেবী মমতাকে জানিয়েছিলেন সরকারি প্রকল্পে তাঁর বাড়ি না পাওয়ার কথা। এ বার তিনি আশায় রয়েছেন, ফের খোয়াই হাটে আসবেন ‘দিদি’। জমির পাট্টা পাওয়ার খবর যে তাঁকে দিতেই হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন