শীতের সকালে ২৫ ছাত্রীর লেগিংস খোলাল বোলপুরের স্কুল

মঙ্গলবার বোলপুরের মকরমপুরে আইসিএসই বোর্ডের ওই স্কুলের সামনে বিক্ষোভও দেখান অভিভাবকেরা।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

বোলপুর শেষ আপডেট: ২০ নভেম্বর ২০১৯ ০৫:১৮
Share:

স্কুল থেকে ফেরত পাওয়া লেগিংস হাতে ক্ষুব্ধ অভিভাবকেরা। —নিজস্ব চিত্র

সাত সকালের ঠান্ডা এড়াতে মেয়েদের লেগিংস পরিয়ে স্কুলে পাঠিয়েছিলেন অভিভাবকেরা। স্কুলের নির্দিষ্ট করে দেওয়া শীতের পোশাকের সঙ্গে তা মেলেনি। অভিযোগ, তাতেই খুলে নেওয়া হল অন্তত ২৫ জন ছাত্রীর লেগিংস! সোমবার বোলপুরের একটি বেসরকারি ইংরেজি মাধ্যম স্কুলের এই ঘটনার সমালোচনা হয়েছে সর্বস্তরে। ঘটনার রিপোর্ট চেয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।

Advertisement

মঙ্গলবার বোলপুরের মকরমপুরে আইসিএসই বোর্ডের ওই স্কুলের সামনে বিক্ষোভও দেখান অভিভাবকেরা। প্রিন্সিপাল সিস্টার অর্চনার যদিও দাবি, ‘‘স্কুলে একটা নির্দিষ্ট পোশাক বিধি রয়েছে। সে সম্পর্কে আগেই অভিভাবকদের জানানো হয়েছিল।’’ যা শুনে অভিভাবকদের প্রশ্ন, পোশাক-বিধি কি শিশুদের স্বাস্থ্য ও সম্মানের চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ?

অভিভাবকেরা জানান, সকাল সাড়ে ৭টায় ক্লাস শুরু। স্কুলের ফ্রকের সঙ্গেই ঠান্ডা এড়াতে অনেককে লেগিংস পরাচ্ছিলেন তাঁরা। খবর যায় প্রিন্সিপালের কাছে। অভিযোগ, তিনিই শাস্তি হিসেবে ‘অন্য’ লেগিংস খুলে নেওয়ার নির্দেশ দেন। লোয়ার কেজি থেকে চতুর্থ শ্রেণি মিলিয়ে তেমন ছাত্রী ছিল ২০-২৫ জন। এক পড়ুয়ার কথায়, ‘‘আমাদের সবাইকে লাইন করে দাঁড় করিয়ে লেগিংস খোলানো হয়।’’ ছুটির সময়ও ফেরত দেওয়া হয়নি পোশাক। ছাত্রীদের ওই অবস্থায় বাড়ি ফিরতে দেখে হতবাক হয়ে যান অভিভাবকেরা। কিছু ছাত্রী বাড়িতে কান্নায় ভেঙে পড়ে। রাতেই কিছু অভিভাবক শান্তিনিকেতন থানায় যান। পুলিশ স্কুলের তরফে কয়েক জনকে ডেকে পাঠায়। অভিভাবকদের জানানো হয় লিখিত অভিযোগ হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: গোলাপি বলের ম্যাচে ইডেনে বাঙ্কার, নজরমিনার পুলিশের

মঙ্গলবার স্কুল ছুটির সময় ওই ছাত্রীদের অভিভাবকেরা প্রিন্সিপালের ঘরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পোশাক খুলিয়ে ক্লাস করানোর দাবি অবশ্য সিস্টার অর্চনা মানেননি। তাঁর দাবি, ‘‘কোথাও ভুল হচ্ছে। এমন কোনও ঘটনা ঘটেনি।’’ যদিও মধুমিতা রায়, মিতা গড়াই, হিমাংশু পালের মতো অভিভাবকেরা পাল্টা বলেন, ‘‘পোশাক যদি না-ই খোলানো হবে, তা হলে এ দিন আমাদের ফেরত দেওয়া হল কী করে? এ থেকেই বোঝা যাচ্ছে প্রিন্সিপাল মিথ্যে বলছেন।’’

উদ্বিগ্ন শিক্ষামন্ত্রী জানান, রাজ্যের অধীনে থাকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা ও আচার আচরণ সংক্রান্ত বিষয় নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের পক্ষে সম্ভব হয়। কিন্তু, বেসরকারি স্কুলে তা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘‘তবু শিক্ষা দফতরের আধিকারিকদের বলব পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট দিতে। তার পরে দফতরের সচিবকে বলব আইসিএসই বোর্ডের সঙ্গে কথা বলতে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন