Ragging

র‌্যাগিং প্রশাসন আটকাতে পারে না, ছোটদের বুকে টেনে নিতে হবে বড়দের, পরামর্শ শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্যের

শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন, সব দেশের সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র‌্যাগিং হয়। তবে তা ‘নির্মম’ হলে অবশ্যই প্রতিবাদ হবে। এই র‌্যাগিং রুখতে এগিয়ে আসতে হবে বড় ক্লাসের পড়ুয়াদেরই।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৩ ১৭:০০
Share:

শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। — ফাইল চিত্র।

প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর পর থেকেই সিসি ক্যামেরা বসানোর দাবি উঠেছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর প্রশাসন এবং রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণ কায়েমের দাবি তুলেছে বিরোধীরা। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু সোমবার স্পষ্ট জানালেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে র‌্যাগিং কর্তৃপক্ষ বা রাষ্ট্র আটকাতে পারে না। পড়ুয়ারাই পারেন। এ ক্ষেত্রে এগিয়ে আসতে হবে উঁচু ক্লাসের পড়ুয়াদের। তিনি এ-ও জানিয়েছেন, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান স্বাধীন ভাবে চলবে। তবে অবশ্যই স্বেচ্ছাচারী ভাবে নয়।

Advertisement

বিধানসভার বাইরে দাঁড়িয়ে ব্রাত্য জানালেন, রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপে র‌্যাগিং রোখা সম্ভব নয়। র‌্যাগিং রুখতে পারেন পড়ুয়ারাই। তাঁর কথায়, ‘‘র‌্যাগিং সারা ভারতের বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানে হয়। র‌্যাগিং যদি শারীরিক নিগ্রহ হয়, নির্মম হয়, তাতে যদি কোনও মায়ের কোল খালি হয়, মৃত্যুর মতো মর্মান্তিক হয়, তা হলে মানুষ এর প্রতিবাদ করবে। এটা কর্তৃপক্ষ বা রাষ্ট্র আটকাতে পারেন না।’’ এর পরেই ব্রাত্য র‌্যাগিং রোখার দায় ছাত্রদের কাঁধে দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘যখন সিনিয়র ছেলেরা জুনিয়রদের ভালবাসতে শিখবেন, বলবেন, ‘মজা করছি বটে, তোকে ভালওবাসছি! জড়িয়ে ধরছি তোকে!’ তখন র‌্যাগিং বন্ধ হবে। ছাত্রদের সদিচ্ছা, ভালবাসাই পারে এটা বন্ধ করতে। এই পদক্ষেপ কানুন নিরপেক্ষ। রাষ্ট্রের হস্তক্ষেপ নিরপেক্ষ। একমাত্র ছাত্রেরাই পারে।’’

রবিবার কাশ্মীরের মতো যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়কেও ‘ঠান্ডা’ করার নিদান দিয়েছিলেন বিজেপি সাংসদ দিলীপ ঘোষ। তিনি বলেছিলেন, ‘‘কাশ্মীর ঠান্ডা করে দেওয়া হয়েছে,আর যাদবপুর ইউনিভার্সিটি তো কোন ছার! বুটের লাথি মেরে জেএনইউ ঠান্ডা করে দেওয়া হয়েছে।’’ এই প্রসঙ্গে ব্রাত্য জানান যে, এ সব আসলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে ‘গৈরিকীকরণ’-এর চেষ্টা বিজেপির। রাজ্যবাসী এ সব মেনে নেবেন না। তাঁর কথায়, ‘‘ভারত জুড়ে যে ভাবে গৈরিকীকরণ করা হচ্ছে, তার ধ্বজাধারী যদি এখানে এসে বুট মারতে চান এবং রাজ্যবাসী যদি মেনে নেন, তখন সেটা দেখা যাবে। এখনও তা মানেননি। সামনের বছর হয়তো সাংসদই থাকলেন না দিলীপ ঘোষ!’’

Advertisement

প্রথম বর্ষের ছাত্রের মৃত্যুর পর থেকে হস্টেল এবং বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের গুরুত্বপূর্ণ অংশে সিসি ক্যামেরা বসানোর দাবি উঠেছে। এই দাবি তুলেছে তৃণমূল ছাত্রপরিষদ। তৃণমূল ছাত্রপরিষদের যাদবপুর ইউনিটের সভানেত্রী রাজন্যা হালদারও ক্যাম্পাসে দাঁড়িয়ে এই দাবি তুলেছেন। তবে ব্রাত্য যদিও জানিয়েছেন, এই নিয়ে ২৫ রকমের মতামত রয়েছে। ২৬ রকমের মতামত দিয়ে বিষয়টিকে জটিল করার তিনি পক্ষপাতী নন। আপাতত তাঁর একটাই দাবি, বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠনের পরিস্থিতি ফিরে আসুক। এর পরেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের স্বাধীন ভাবে চলার পক্ষেও সওয়াল করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘স্বাধীন ভাবে চলুক, তবে স্বেচ্ছাচারী ভাবে নয়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন