বামেদের ব্রিগেড সমাবেশে শেষ মুহূর্তে চমক হয়ে উঠতে পারে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের উপস্থিতি।
ওস্তাদের মার শেষ রাতে! বামেদের ব্রিগেড সমাবেশে শেষ মুহূর্তে চমক হয়ে উঠতে পারে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের উপস্থিতি।
শরীর একেবারে বেগতিক না থাকলে আজ, রবিবার অক্সিজেন সিলিন্ডার সঙ্গে নিয়েই ব্রিগেডের মঞ্চে উঠতে পারেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। খুব অল্প সময়ের জন্য হলেও ‘জনসমুদ্রের রণধ্বনি’র সাক্ষী থাকতে চান তিনি। অন্তত শনিবার রাত পর্যন্ত তাঁর ঐকান্তিক ইচ্ছা তেমনই।
অল্প দিন আগে চার দেওয়ালের মধ্যে দীর্ঘ দিনের ঘনিষ্ঠ সহকর্মী নিরুপম সেনের স্মরণসভায় আসতে পারেননি বুদ্ধবাবু। এ বার খোলা মাঠে, ধুলো-হাওয়ার মাঝে তাই তাঁর আগমনের আশা অর্থহীন— এমনই ধরে নিয়েছেন সকলে। কিন্তু স্বয়ং বুদ্ধবাবু হাল ছাড়েননি! অশক্ত শরীরে জ্যোতি বসু যদি পেরে থাকেন, তিনিই বা পারবেন না কেন? এই প্রশ্ন ভাবাচ্ছে তাঁকে।
আরও পড়ুন: গ্রাম থেকে গরিব, সবার ভাগেই কোপ বাজেটে
গৃহবন্দি প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ইদানীং হাতে গোনা তিন-চার জন ছাড়া কারও সঙ্গে দেখাই করেন না। তাঁদেরই এক জন বুদ্ধবাবুর কাছে আর্জি জানিয়েছেন, ব্রিগেড সমাবেশে ১০ মিনিটের জন্য হলেও তিনি উপস্থিত হলে বাম কর্মী-সমর্থকেরা লড়াইয়ে উজ্জীবিত হবেন। শরীরের কারণে না হয় তিনি কিছু বলবেন না। শুধু হাজির হলেই হবে। শক্ত চোয়ালেই সিপিএমের প্রাক্তন পলিটব্যুরো সদস্যের জবাব এসেছে, তিনি এক বার গিয়ে দাঁড়াতে চান ময়দানে।
আরও পড়ুন: প্রধানমন্ত্রীর কথায় ‘যন্ত্রণা ভুলে গেলাম’
সিওপিডি-র সমস্যায় আক্রান্তকে ধুলো-ধোঁয়া বাঁচিয়ে চলতে হয়। এক দিনের ব্রিগেড সমাবেশের জন্য বুদ্ধবাবুকে শারীরিক ভাবে আরও বিপন্ন করতে কোনও ভাবেই চাইছেন না সিপিএম নেতারা। অনুপস্থিত বুদ্ধবাবুর বার্তা ব্রিগেড জনতাকে শোনোনোর জন্যই প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা। নিশ্চিত করে তাঁর উপস্থিতি নিয়ে কিছুই বলা যায় না বলে বামফ্রন্ট চেয়ারম্যান বিমান বসুকে বলতে হচ্ছে, ‘‘ডাক্তার অনুমতি দিলে বুদ্ধ আসবে। বলতে পারছি না।’’ কিন্তু অন্য বারের চেয়ে ব্রিগেডের তফাত এখানেই যে, এ বার মনের জোর দেখাতে চাইছেন বুদ্ধবাবুই।
বাড়িতে এখন এ ঘর থেকে ও ঘর ছাড়া হাঁটাচলা প্রায় বন্ধ প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রীর। চোখের সমস্যার জন্য খবরের কাগজ পড়েন না। টিভি পারতপক্ষে দেখেন না, শোনেন না। নিজে বুঝতে পারেবেন না বলে হাতে লেখেনও না। ব্রিগেড সমাবেশের জন্যই ক’দিন আগে জনতার উদ্দেশে আর্জি জানিয়েছেন মুখে বলে দিয়ে, যা লিখে নিয়ে তাঁকে আবার পড়ে শোনানো হয়েছে। তবে ভালবাসার টানে তেমন হলে ম্যাগনিফাইং গ্লাস হাতে বই নিয়ে বসেন। তাঁর এক ঘনিষ্ঠ সহকর্মীর কথায়, ‘‘এক বার কিছু ঠিক করে নিলে বুদ্ধদা’কে নড়ানো মুশকিল! উনি মানুষটাই এমন। ডাক্তারেরা ওঁকে ব্রিগেডে যেতে দিতে চাইবেন না। কিন্তু উনি চান একটি বারের জন্য জনতার সামনে গিয়ে দাঁড়াতে।’’