তাপমাত্রা ৪১ ডিগ্রি থেকে নেমে এসেছে ৩৭ ডিগ্রির নীচে। তবুও স্বস্তি নেই। ভোট-গরম একাকার হয়ে ফেসবুকে ভাসছে কটাক্ষ — ‘সূর্যে’র কি এতটুকু ‘মমতা’ নেই রে?
কারণ, তাপমাত্রা কমলেও বেড়ে গিয়েছে আর্দ্রতা। আর তাতে অস্বস্তিসূচক ৬৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের উপরেই থেকে গেল। রাস্তায় বেরিয়ে মানুষ ঘেমে-নেয়ে একশা! মঙ্গলবার থেকে তাপমাত্রাও আবার চড়তে শুরু করেছে। বুধবার থেকে কলকাতা ও সংলগ্ন এলাকার তাপমাত্রা বাড়ার সম্ভাবনা। তাপপ্রবাহের পূর্বাভাসও দিয়েছে আবহাওয়া দফতর।
সোমবার দক্ষিণবঙ্গের কিছু এলাকায় মৃদু কালবৈশাখী হয়েছে। কলকাতার আকাশেও ঢুকেছিল ঘন কালো মেঘ। তা থেকে ঝড়বৃষ্টি হয়নি বটে, তবে সেই মেঘ থেকে গিয়েছে পরিমণ্ডলে। তাতে সূর্য কিছুটা ঢাকা পড়েছে। যার জেরে মঙ্গলবার কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৬.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে এসেছে। কিন্তু সর্বাধিক আর্দ্রতা ছাড়িয়েছে ৯০ শতাংশের কোঠা। ফলে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে অস্বস্তিসূচক। দুপুর দুটোয় যা পৌঁছে গিয়েছে ৬৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। এই সময়ে সাধারণত ১০ ডিগ্রি কম থাকে অস্বস্তিসূচক।
গত সপ্তাহ দুয়েক ধরে কলকাতার তাপমাত্রা ঘন ঘন ওঠানামা করছে। কখনও তাপপ্রবাহ, কখনও অস্বস্তি চরমে। তাপমাত্রার এই ওঠানামার সঙ্গে তাল রাখতে পারছে না মানুষের শরীর। সর্দি-জ্বরের সঙ্গে নানা ধরনের পেটের অসুখে নাজেহাল মানুষ। পরজীবী বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, আবহাওয়া যত অস্থির হবে, ততই জল ও হাওয়া-বাহিত বিভিন্ন জীবাণু শক্তিশালী হবে। আর ঘেমে-নেয়ে মানুষ যত কাহিল হবে, ততই শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা কমবে। আর জীবাণুরা সহজেই ঢুকবে শরীরে। পরজীবী বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, দু-একটা কালবৈশাখীর পরে আবহাওয়া কিছুটা স্থিতিশীল হবে।
কিন্তু কোথায় সেই কালবৈশাখী?
কেন্দ্রীয় সরকারের আবহবিজ্ঞান মন্ত্রকের পূর্বাঞ্চলীয় ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গোকুলচন্দ্র দেবনাথ আগামী কয়েক দিনের মধ্যে কালবৈশাখীর সম্ভাবনা দেখছেন না। তিনি বলেন, ‘‘কালবৈশাখী তৈরি হওয়ার জন্য যে সব অণুঘটক পরিমণ্ডলে থাকা দরকার, তা এখন নেই।’’ গোকুলবাবুর পূর্বাভাস, পরিমণ্ডলে যেটুকু মেঘ রয়েছে, তা-ও বিদায় নেবে। ফলে তাপমাত্রা বাড়বে লাফিয়ে। মঙ্গলবারই তার ইঙ্গিত মিলতে শুরু করেছে। তিনি বলেন, এ দিন থেকে ফের বাঁকুড়ায় (৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস), বীরভূমে (৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) ও আসানসোলে (৪৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তাপপ্রবাহ শুরু হয়েছে।
বৃহস্পতিবার উত্তর কলকাতার সাত কেন্দ্রে ভোট। গোকুলবাবুর পূর্বাভাস মিললে ওই দিন কিন্তু কলকাতা তাপপ্রবাহের কবলে পড়ার আশঙ্কা।