‘রথ’ সাজবে দিল্লির বাস, আসছেন শাহও

ডিসেম্বরের ৫, ৭ এবং ৯ তারিখ রাজ্যের তিন প্রান্ত থেকে রওনা হবে এই বাসগুলি। বিজেপি যার নাম দিয়েছে ‘রথ’। সেই রথে থাকার কথা অমিত শাহেরও। রথ চলবে, সঙ্গে চলবে নির্বাচনের প্রচার। আনুমানিক হিসেবে এই কর্মসূচি মাস দেড়েকের। বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক শিবপ্রকাশের মতে, এই রথ হবে ‘গেম চেঞ্জার’। 

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৪৩
Share:

অমিত শাহ। —ফাইল চিত্র।

বাস আসছে দিল্লি থেকে। তিনটি। সবই বাতানুকূল। সেখানে সওয়ার হবেন বড় বড় নেতারা।

Advertisement

ডিসেম্বরের ৫, ৭ এবং ৯ তারিখ রাজ্যের তিন প্রান্ত থেকে রওনা হবে এই বাসগুলি। বিজেপি যার নাম দিয়েছে ‘রথ’। সেই রথে থাকার কথা অমিত শাহেরও। রথ চলবে, সঙ্গে চলবে নির্বাচনের প্রচার। আনুমানিক হিসেবে এই কর্মসূচি মাস দেড়েকের। বিজেপির কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক শিবপ্রকাশের মতে, এই রথ হবে ‘গেম চেঞ্জার’।

তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা বক্তব্য, ‘‘মানুষের লুঠের টাকায় বিলাসবহুল ফাইভস্টার হোটেলের মতো রথ সাজানো হচ্ছে। তবে ভাড়াটে সৈন্য দিয়ে যুদ্ধে জেতা যায় না।’’ তৃণমূল নেতা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কটাক্ষ, ‘‘ওরা বড়লোকের দল। ওরা রথে চড়ে আমরা পথে থাকি। রথে দেবতাদের মানায়।’’ রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষ অবশ্য বলেছেন, ‘‘রথ কোথা থেকে আসছে সেটা বড় কথা নয়, তার রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতাই গুরুত্বপূর্ণ।’’

Advertisement

নব্বইয়ের দশকে দু’বার এবং ২০১১ সালে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহের আমলে একবার রথযাত্রা হয়েছিল রাজ্যে। রাহুলবাবুর আমলে বাস এসেছিল ছত্তিশগড় থেকে। যে বাসে হাইড্রোলিক মঞ্চ ছিল। প্রয়োজনে যা বাসের ছাদে উঠে যেত। রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের দাবি, এবারে তার চেয়েও আধুনিক বাস আসবে।

সূত্রের খবর, দিল্লি থেকে রথ আনা এবং কেন্দ্রীয় নেতাদের তত্ত্বাবধানে রাজ্যের রথযাত্রা নিয়ে সোমবারের বৈঠকে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন রাজ্য বিজেপির একাংশের নেতৃত্ব। তাঁরা বলেছেন, এর আগে রাজ্য নেতৃত্ব নিজেদের দায়িত্বেই সফল ভাবে রথের আয়োজন করেছিল। যার উত্তরে অন্য অংশ দাবি করেছেন, আগের সঙ্গে এবারের যাত্রার তুলনা হয় না।

রাজ্য বিজেপির দফতরে সোমবার রথ সংক্রান্ত বৈঠকে অবশ্য যাত্রার সূচনার দিনের সামান্য বদল হয়েছে। দলের রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘রাজস্থানের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য অমিতজি ৩ তারিখ ব্যস্ত থাকবেন। তাই রথযাত্রার দিন বদলের সিদ্ধান্ত হয়েছে।’’ এ দিনের বৈঠকে স্থির হয়, ৩, ৫ এবং ৭ ডিসেম্বরের পরিবর্তে ৫, ৭ এবং ৯ ডিসেম্বর যথাক্রমে তারাপীঠ, কোচবিহার এবং গঙ্গাসাগর থেকে তিনটি রথ যাত্রা শুরু হবে। প্রতিটির সূচনা উৎসবেই হাজির থাকবেন শাহ। আর রথযাত্রার শেষে রাজ্যে সভা করতে আসবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।

এ দিনের বৈঠকে শিবপ্রকাশ এবং রাজ্যে দলের সহ-পর্যবেক্ষক অরবিন্দ মেনন থাকলেও মধ্যপ্রদেশের নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত থাকায় ছিলেন না কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়।

দলীয় সূত্রের আরও খবর, দিলীপবাবু, রাহুলবাবুরা ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিভিন্ন রথে থাকবেন। কেন্দ্রীয় নেতা এবং বিজেপি শাসিত বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরাও ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বিভিন্ন রথে যোগ দেবেন। আসবেন উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ, ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেব এবং অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনওয়াল। প্রথম রথটি যাত্রা করবে ৪২ দিন, দ্বিতীয়টি ৩৫ দিন এবং তৃতীয়টি ৩২ দিন।

রাহুলবাবু জানিয়েছেন, রথযাত্রা চলাকালীন রাজ্য জুড়ে অন্তত ৬০টি জনসভার আয়োজন করা হবে। ছোট সভা হবে শ’ দু’য়েক। প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে সন্ধে ৬টা পর্যন্ত রথ চলবে। পাশাপাশি রথের জন্য চাঁদা তোলারও একটি কমিটি তৈরি করা হয়েছে। তার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে তৃণমূল থেকে আসা এক নেতাকে। রথযাত্রার কর্মসূচি নিয়ে আগামী ২৬, ২৭ এবং ২৮ অক্টোবর ফের বৈঠক ডেকেছে বিজেপি। ২৬ তারিখের বৈঠক হবে কলকাতায় বিজেপির রাজ্য দফতরের বিপরীতে মাহেশ্বরী ভবনে। ২৭ এবং ২৮ তারিখের বৈঠক হবে যথাক্রমে দুর্গাপুরে এবং শিলিগুড়িতে। প্রতিটি বৈঠকেই সংশ্লিষ্ট এলাকার রথযাত্রার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাদের সঙ্গে কেন্দ্রীয় নেতাদের আলোচনা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন