ব্যবসায়ীকে আত্মহত্যায় ‘প্ররোচনা’, ধৃত পুরপিতা

সোনারপুরের ব্যবসায়ীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার সোনারপুর থানার সূর্য সেন পার্কের বাড়িতে বিশ্বজিৎ রায়(৩৬) নামে ওই ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত দেহ মেলে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২১ জুলাই ২০১৬ ০০:৩৩
Share:

সোনারপুর থানায় অনন্ত রায়। (ইনসেটে) বিশ্বজিৎ। —নিজস্ব চিত্র।

সোনারপুরের ব্যবসায়ীকে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে স্থানীয় তৃণমূল কাউন্সিলরকে গ্রেফতার করল পুলিশ। মঙ্গলবার সোনারপুর থানার সূর্য সেন পার্কের বাড়িতে বিশ্বজিৎ রায়(৩৬) নামে ওই ব্যবসায়ীর ঝুলন্ত দেহ মেলে। এক তদন্তকারীর কথায়, সুইসাইড নোটে নিজের মৃত্যুর জন্য দায়ী হিসেবে পাওনাদার প্রশান্ত পাঁজা, স্থানীয় ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর অনন্ত রায়-সহ কয়েক জনের নাম উল্লেখ করেছিলেন বিশ্বজিৎ। সেই নোট এবং মৃতের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতেই বুধবার অনন্তবাবু এবং প্রশান্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

Advertisement

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে খবর, হাওড়ার ব্যবসায়ী প্রশান্তর থেকে ধারে বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম এনে বিক্রি করতেন বিশ্বজিৎ। সপ্তাহখানেক আগে প্রশান্ত লিখিত ভাবে কাউন্সিলর অনন্তবাবুকে জানান, প্রায় বছরখানেক ধরে তাঁর পাওনা ৬০ হাজার টাকা দিচ্ছেন না বিশ্বজিৎ। গত রবিবার সকালে সালিশি সভা ডেকে বিশ্বজিৎকে মাসিক পাঁচ হাজার টাকা কিস্তিতে পাওনা মেটাতে বলেন অনন্তবাবু।

মৃত ব্যবসায়ীর স্ত্রী ঝুমা রায়ের অভিযোগ, সালিশি চলাকালীন অনন্তবাবুর মদতপুষ্ট দুষ্কৃতীরা ঘিরে রেখেছিল। টাকা ফেরত দেওয়ার জন্য অনন্তবাবুর পাশাপাশি তারাও শাসানি দেয়। সেই কারণেই আত্মহত্যা করেন তাঁর স্বামী। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় সোনারপুর থানায় অনন্তবাবু-সহ ছ’জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করেন ঝুমা। রাতে স্থানীয় বাসিন্দারাও কাউন্সিলরের বাড়ি ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখান।

Advertisement

এ দিন সোনারপুর থানায় জেরার পরে অনন্তবাবুকে গ্রেফতার করা হয় বলে জানান দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ সুপার সুনীল চৌধুরী। তদন্তকারীদের কথায়, জেরায় সালিশির কথা স্বীকার করে অনন্তবাবু বলেন, ‘‘ওই দিনের সালিশি সভায় টাকা ফেরত দেওয়ার প্রস্তাবে বিশ্বজিৎ রাজি হন। তবে ওঁকে কোনও চাপ দেওয়া হয়নি।’’ সুইসাইড নোটটি বিশ্বজিতের নয় বলেও দাবি করেছেন তিনি।

গ্রেফতারির কারণ হিসেবে তদন্তকারীরা জানান, কাউন্সিলর নিজে সালিশির কথা স্বীকার করেছেন। তা ছাড়া, মৃতের স্ত্রীর অভিযোগ ও সুইসাইড নোটের বয়ানের ভিত্তিতে অনন্তবাবুকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ধৃতকে জেরায় সভায় উপস্থিত বাকিদের বিষয়ে জানা হবে। প্রয়োজনে মৃতের স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে অনন্তবাবুর সহযোগীদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। রাতে অসুস্থ বোধ করায় অনন্তবাবুকে এম আর বাঙুর হাসপাতালে পাঠানো হয়।

জেলার এক পুলিশকর্তার কথায়, অভিষুক্তদের শনাক্ত করা হয়েছে। সুইসাইড নোটটির হাতের লেখা যাচাই করতে সিআইডির হস্তলিপি বিশারদদের কাছে পাঠানো হচ্ছে। রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার চেয়ারম্যান পল্লব দাস বলেন, ‘‘ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement