টাকার হিসেব নিতে সব দফতরকে ডাকল সিএজি

অর্থ দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, রাজ্য সরকারের হিসেব রক্ষণাবেক্ষণ করে সিএজি। রাজ্যের কোষাগারে নিজস্ব কর সংগ্রহের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ, অনুদান, ঋণের টাকা জমা পড়ে।

Advertisement

জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৯ ০৩:৩৭
Share:

বছরভর অর্থ পাওয়া গিয়েছে। খরচও হয়েছে দেদার। তার জমা-খরচের হিসেব জমা পড়েছে কন্ট্রোলার অ্যান্ড অডিটর জেনারেল (সিএজি)-এর অফিসে। ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের সরকারি আয়-ব্যয় চূড়ান্ত করার আগে বিভিন্ন দফতরকে ডেকে ফের হিসেব বুঝতে চেয়েছে সিএজি। নবান্নের খবর, রাজ্যের ৫১টি দফতরকে জুন জুড়ে সিএজি-র সঙ্গে বৈঠকে বসে আয়-ব্যয়ের হিসেব মেলাতে হবে।

Advertisement

অর্থ দফতরের কর্তারা জানাচ্ছেন, রাজ্য সরকারের হিসেব রক্ষণাবেক্ষণ করে সিএজি। রাজ্যের কোষাগারে নিজস্ব কর সংগ্রহের সঙ্গে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ, অনুদান, ঋণের টাকা জমা পড়ে। বাজার থেকে নেওয়া ধারের টাকাও জমা পড়ে কোষাগারে। তা খরচ হয় রাজ্য জুড়ে ছড়িয়ে থাকা প্রায় ৭০টি ট্রেজারির মাধ্যমে। খরচ করে বিভিন্ন দফতর। সব তথ্যই জমা থাকে সিএজি-র ঘরে। আর্থিক বছর শেষ হলে সেই হিসেব চূড়ান্ত করে সিএজি। প্রতি বছরই দফতরগুলিকে ডেকে জানতে চাওয়া হয়, বছরে অনুদান, রাজস্ব বা ঋণ বাবদ তারা কত টাকা পেয়েছে এবং তার থেকে কতটা খরচ করেছে। খরচ হওয়া টাকার কতটা বাজেটে আগে থেকেই বরাদ্দ ছিল, কতটা বাজেটে বরাদ্দ না-থাকলেও পরবর্তী কালে খরচ করতে হয়েছে— সেই তথ্যও সিএজি-কে জানাতে হয়।

সিএজি সূত্রের বক্তব্য, হিসেব চূড়ান্ত করার আগে দফতরগুলির হিসেব আর সিএজি-র হিসেব মিলিয়ে দেখার রেওয়াজ দীর্ঘদিনের। এর ফলে বোঝা যায়, দফতরগুলি তাদের আয়-ব্যয়ের হিসেব যথাযথ ভাবে রাখতে কতটা সক্ষম। বছর শেষে সিএজি-র হিসেবই প্রকাশিত হয় এবং পেশ করা হয় বিধানসভায়। দফতরগুলির রাখা হিসেবের সঙ্গে সিএজি-র হিসেব মিলে যাওয়ায় দফতরের আর্থিক শৃঙ্খলার ইতিবাচক দিকটিই স্পষ্ট হয়।

Advertisement

অর্থকর্তারা জানাচ্ছেন, ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষের সংশোধিত বাজেট প্রস্তাব অনুযায়ী সরকারের মোট আয়ের পরিমাণ ছিল দু’লক্ষ ছ’হাজার কোটি টাকা। তার মধ্যে রাজস্ব ব্যয় বাবদ ধরা হয়েছিল এক লক্ষ ৬০ হাজার কোটি। মূলধনী ব্যয় ধরা হয় ৪৫ হাজার কোটি। বছর শেষে প্রতিটি খাতের আয়-ব্যয়ে কমবেশি হয়েছে। এ বার সেগুলিই দফতর ধরে ধরে মিলিয়ে কাজ করতে চায় সিএজি।

দেশের হিসেব পরীক্ষক সংস্থা গত তিন বছরে হিসেব মেলানোর ক্ষেত্রে দফতরগুলির উদ্যোগের প্রশংসা করছে। বিশেষ করে সরকারি খাতে যে-টাকা জমা পড়ে, তার প্রায় ৯৩ শতাংশ হিসেব গত বছরেই মিলে গিয়েছিল। কিন্তু খরচের হিসেব মেলানোর ক্ষেত্রে দফতরগুলিকে আরও সক্রিয় হতে হবে বলে জানিয়েছে সিএজি। ২০১৭-১৮ আর্থিক বছরে যে-টাকা খরচ হয়েছিল বলে সিএজি-র খাতায় লেখা হয়েছিল, দফতরগুলি তার ৮০ শতাংশ হিসেব দেখাতে পেরেছিল। এ বার যাতে তার আরও উন্নতি হয়, সেই অনুরোধ করেছে হিসেব পরীক্ষক সংস্থা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন