আদালতের রায়ে স্বস্তিতে আনিসুর

কাউন্সিলর পদ বাতিলের সিদ্ধান্ত খারিজ হাইকোর্টে

তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় পাঁশকুড়া পুরসভার কাউন্সিলর পদ বাতিল হয়েছিল আনিসুর রহমানের। মহকুমাশাসক এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে সেই পদ বাতিল করেছিলেন। সেই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন আনিসুর। সোমবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক মহকুমাশাসকের সেই বিজ্ঞপ্তি খারিজ করে দেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা ও তমলুক শেষ আপডেট: ২৬ জুন ২০১৮ ০১:২৩
Share:

আনিসুর রহমান। ফাইল চিত্র।

পাঁশকুড়া পুরসভার অপসারিত পুরপ্রধান আনিসুর রহমানের কাউন্সিলর পদ বাতিলের সিদ্ধান্ত খারিজ করল কলকাতা হাইকোর্ট।

Advertisement

তৃণমূল থেকে বিজেপিতে যোগ দেওয়ায় পাঁশকুড়া পুরসভার কাউন্সিলর পদ বাতিল হয়েছিল আনিসুর রহমানের। মহকুমাশাসক এক বিজ্ঞপ্তি জারি করে সেই পদ বাতিল করেছিলেন। সেই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেছিলেন আনিসুর। সোমবার বিচারপতি দেবাংশু বসাক মহকুমাশাসকের সেই বিজ্ঞপ্তি খারিজ করে দেন।

প্রাক্তন তৃণমূল নেতা আনিসুর এখন বিজেপিতে। ২০১৭ সালের অগস্টে পাঁশকুড়ার পুরভোটে ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন আনিসুর। ১৭ ওয়ার্ডের পুরসভায় তৃণমূল ১৬ ও বিজেপি ১টি আসনে জয়লাভ করে। গত বছর ৬ সেপ্টেম্বর পুরপ্রধান নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে কোন্দলে ভোটাভুটিতে তৃণমূল নেতা নন্দকুমার মিশ্রকে ১০-৮ ভোটে হারিয়ে দেন আনিসুর। কিন্তু তারপরেই আনিসুরকে ৬ বছরের জন্য দল থেকে সাসপেন্ড করেন তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্ব।

Advertisement

পরবর্তী সময়ে পুর দফতরের নিয়ম ভাঙার অভিযোগে আনিসুরকে পুরপ্রধানের পদ থেকে অপসারণের নির্দেশ দেয় রাজ্য পুরদফতর। নতুন পুরপ্রধান হন নন্দকুমার মিশ্র। নির্দেশের বিরুদ্ধে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করেন আনিসুর। এরপরেই তিনি তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। এরপর তমলুকের এক তরুণীকে ধর্ষণের অভিযোগে গত ৭ জানুয়ারি পুলিশ তাঁকে গ্রেফতার করে। আনিসুরের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য ও গৌতম দে জানান, মহকুমাশাসক তাঁদের মক্কেলের কাউন্সিলর পদ বাতিল‌ের বিজ্ঞপ্তি জারি করেন গত ২২ জানুয়ারি। তার আগে ৭ জানুয়ারি ফৌজদারি মামলায় গ্রেফতার করা হয় আনিসুরকে। পরে আরও কিছু মামলা দায়ের হয় তাঁর বিরুদ্ধে। ওই কাউন্সিলরকে তাঁর বক্তব্য পেশের কোনও সুযোগ না দিয়ে এক তরফা নির্দেশ জারি করেন মহকুমাশাসক। ৬ জুন ফৌজদারি মামলাগুলি থেকে জামিন পেয়ে হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন তিনি। এ দিন শুনানিতে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত জানান, আনিসুরের বাড়িতে নোটিস পাঠানো হয়েছিল। নোটিস ফেরত আসে। তা ছাড়া অন্য দলে যোগ দেওয়ার জন্য তাঁর কাউন্সিলর পদ বাতিল হয়। মামলায় যুক্ত পাঁশকুড়া পুরসভার অ্যাড-হক (অস্থায়ী) চেয়ারম্যান নন্দকুমার মিশ্রর আইনজীবী শক্তিনাথ মুখোপাধ্যায়ও আদালতে জানান, অন্য দলে যোগ দেওয়ার জন্যই আনিসুরের কাউন্সিলর পদ বাতিল হয়। সব পক্ষের বক্তব্য শুনে মহকুমাশাসকের বিজ্ঞপ্তি খারিজ করেন বিচারপতি।

এদিন আদালতের রায়ের পর আনিসুর বলেন, ‘‘কাউন্সিলর পদ থেকে আমাকে যে অন্যায়ভাবে সরানো হয়েছিল আদালতের রায়ে তা প্রমাণ হল। এটা গণতন্ত্রের জয়।’’ পাঁশকুড়ার পুরপ্রধান নন্দকুমার মিশ্র বলেন, ‘‘হাইকোর্টের নির্দেশের কপি এখনও হাতে আসেনি। তাই এনিয়ে মন্তব্য করব না।’’

একই সঙ্গে আনিসুর পাঁশকু়ড়া পুরসভার চেয়ারম্যান থাকবেন কি না তা নিয়েও মামলা চলছে। আগামী সপ্তাহে তার শুনানি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন